মাত্র এক আসনে জয়, কেন উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে এতটা ব্রাত্য হলেন মায়াবতী
মাত্র এক আসনে জয়, কেন উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে এতটা ব্রাত্য হলেন মায়াবতী
২০০৭ সালে ২০৬ টি আসন জিতে উত্তরপ্রদেশে সরকার গড়েছিল মায়াবতীর দল বহুজন সমাজ পার্টি৷ ঠিক তার দুটো বিধানসভা নির্বাচন পরেই উত্তরপ্রদেশে বিরোধী তো দূর কার্যত মুছে গিয়েছে বসপা! যদিও ভোটের আগে তিনি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় উত্তরপ্রদেশে সরকার গড়ার কথা বলেছিলেন! কিন্তু তার দাবি খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে৷ ইউপি তো বটেই এমনকি গোটা ভারতে পিছিয়ে পড়া দলিত সম্প্রদায়ের কাছে ক্রমশ 'মসিহা' হয়ে ওঠা মায়াবতী আজ উত্তরপ্রদেশে দলিতদের সমর্থণ আনতে পারেনননি৷ উত্তরপ্রদেশের অনেক পার্ক, চৌরাস্তা সহ একাধিক জনসমাগম হওয়া জায়গাতে হাতি মূর্তি হয়ত খুঁজলে পাওয়া যাবে কিন্তু ইউপির মানুষের মনে কোথাও বসপা নেই সেটা স্পষ্ট! কিন্তু কেন, ঠিক কোন অঙ্কে মায়াবতীর বসপার এই অবস্থা! রইল আলোচনা!
ধারাবাহিকভাবে জনপ্রিয়তা কমেছে বসপার!
১৯৮৯ এ ইউপিতে প্রথমবারের জন্য সিরিয়াসলি নির্বাচন লড়ে ১৩টি আসন জিতেছিল বসপা৷ এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে শক্তিশালী বিরোধীতে পরিনত করে বহুজন সমাজ পার্টি। কিন্তু যে স্বপ্ন তারা উত্তরপ্রদেশের মানুষকে দেখিয়েছিল সেগুলোর ধার কাছ দিয়েও হাঁটতে পারেনি বসপা স্বাভবাবিকভাবেই ক্ষমতায় এসেও অতি দ্রুত উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রায় মুছে যেতে হল বসপাকে!
দলিত ভোটেই বেশি ভরসা!
বিএসপি ২০০২ সালে ৭৯ শতাংশ জাটভ দলিত ভোট পেয়েছিল। এই জাটভ সম্প্রদায়ভুক্ত হলেন খোদ মায়াবতী। এরপর ২০০৭ সালে ঐতিহাসিক বিজয়ের সময় ৮৬ শতাংশ দলিত ভোট পেয়েছিল বসপা। ২০১২ সালে মায়াবতীয় পক্ষে উত্তরপ্রদেশের ৬২ শতাংশ দলিত ভোট গিয়েছিল। এই সময় মায়াবতী অখিলেশের কাছে হেরেছিলেন। এই জাটভ দলিতরা উত্তরপ্রদেশের মোট ভোটের প্রায় ২১ শতাংশ এবং ইউপির মোট দলিত ভোটের প্রায় ৫১ শতাংশ। জাটভ দলিতরা ছাড়াও অন্য সম্প্রদায়ের দলিতরাও বেশ কয়েকবছর ধরে মায়াবতীকে দুহাতে আশির্বাদ করেছিল। জাটভ ভোট ছাড়াও বাকি ২০০২ সালে দলিত ভোটের সালে ৫৩, ২০০৭ সালে ৫৫, ২০১৩ সালে ৪৫ এবং ২০১৭ সালে ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে বসপা৷
দলিতদের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হন মায়াবতী!
২০০৭ থেকে ২০১২ এই পাঁচ বছরের সময়ে দলিতদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি বসপা। যার কারণে দলিতদের মধ্যে অসন্তুষ্টির কারণে ২০১২ তে পুনরায় ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি বসপা। যদিও ২০১৭ সালে আবারও দলিতরা কিছুটা ভরসা করেছিল মায়াবতীকে তবে তা বসপাকে ক্ষমতায় ফেরাতে পারেনি!
মায়াবতী ছাড়া মুখ নেই!
যে কোনও এক নেতা তৈরি দলের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুবিধার সঙ্গে একটি বড় সমস্যা হল নেতার জনপ্রিয়তা কমলে দলের জনপ্রিথা কমে। ২০০২ থেকে ২০২২ এ ভুল নীতি, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, বিতর্কিত ঐশ্বর্যপূর্ণ জীবনযাপন থেকে জনসংযোগ বিচ্ছিন্নতা মায়াবতীর মতো নেত্রীকেও কোনঠাসা করে ফেলেছে৷ যার ফল ভুগতে হয়েছে বসপাকে৷ কারণ এত বছরেও এই দল দ্বিতীয় কোন নেতা তৈরি করার কথা ভাবেনি!
ক্ষমতায় ফিরছে বিজেপি, ভাঙতে পারে দল, আশঙ্কায় আগে থেকেই বার্তা BSP সুপ্রিমো মায়াবতীর