উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে শূন্য থেকে শুরু বিজেপির! বিধানসভায় টিকে থাকার লড়াইয়ে কংগ্রেস
দেশের বাকি ৪ রাজ্যের সঙ্গে নির্বাচন হচ্ছে উত্তরপূর্বের মিজোরাম বিধানসভারও। ৪০ আসনের বিধানসভার নির্বাচন ২৮ নভেম্বর। কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ৩৪ টি আসন।
দেশের বাকি ৪ রাজ্যের সঙ্গে নির্বাচন হচ্ছে উত্তরপূর্বের মিজোরাম বিধানসভারও। ৪০ আসনের বিধানসভার নির্বাচন ২৮ নভেম্বর। কংগ্রেসের দখলে রয়েছে ৩৪ টি আসন। অন্যদিকে, ৪০ টি আসনেই প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়ে জোরদার প্রচার শুরু করে দিয়েছে বিজেপি।
১৯৮৭ সালে দেশের ২৩ তম রাজ্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে মিজোরাম। এরপর এই রাজ্য কংগ্রেস শাসনে ছিল প্রায় ২০ বছর। রাজ্যে বিজেপি সক্রিয় রয়েছে ১৯৯৩ সাল থেকে। কিন্তু উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে সেরকম ছাপ রাখতে পারেনি তারা। কংগ্রেস ছাড়াও যারা রাজ্যে ক্ষমতা দখল করেছিল তারা হল মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট। দুদফায় তারা রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর লালজিরলিয়ানার পদত্যাগ কংগ্রেসের পক্ষে বড় ধাক্কা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠে লড়াইয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উত্তরপূর্বের একমাত্র রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস।
আঞ্চলিক রাজনৈতিকদলগুলি মিজো পরিচিতিকেই তুলে ধরতে চাইছে। তবে কংগ্রেসের সামনে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে মিজোরাম ছানু পল, সেভ মিজোরাম ফ্রন্ট এবং অপারেশন মিজোরামের সঙ্গে জোট তৈরি করেছে তারা। অন্যদিকে মনিপুর ও মেঘালয়ে সহযোগী দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টিও মিজোরামেও শাখা খুলেছে।
জাতীয় দলগুলি পূর্ণ শক্তি নিয়ে লড়াইয়ে
উত্তর পূর্বের দুই রাজ্য মনিপুর ও মেঘালয়ে বিজেপির সহযোগী ন্যাশনাল পিপল পার্টি মিজোরামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা মিজোরামে দলের শাখার উদ্বোধন করেছেন। কংগ্রেসের তরফেও দলে সাংগঠনিক কিছু পরিবর্তন এনেছে। এআইসিসির তরফে লুইজিনো ফেলেইরোকে উত্তরপূর্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভূপেন কুমার বোরাকে মিজোরামের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০১৩ ও ২০১৪-র নির্বাচনে মিজোরামে দুজনেরই কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। দুই নির্বাচনেই কংগ্রেস যথেষ্ট ভাল ফল করেছিল।
মিজোরামে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া
এনিয়ে পরপর তৃতীয় বার জয়ের জন্য লড়াইয়ে নেমেছে কংগ্রেস। তবে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়ার জেরে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে কংগ্রেস। এছাড়াও একাধিক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। এছাড়াও কৃষকদের ইস্যুও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভূমি সংস্কারের দাবির পাশাপাশি নিয়ন্ত্রিত বাজার গঠনের দাবিও জানিয়েছেন তাঁরা। রাজ্যের কৃষিজীবী মানুষের সংখ্যা প্রায় ১১ লক্ষ। যা মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ।
সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
মিজোরামের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। হিসেবের বাইরে সম্পত্তি রাখারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কলকাতায় তিনি বহুতল তৈরি করছেন বলে অভিযোগ। বিজেপির অভিযোগ, রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য দেওয়া ৪২,৯৭২ কোটি টাকা সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছয়নি।
মন্ত্রীর পদত্যাগ কংগ্রেসের কাছে ধাক্কার
রাজ্য কংগ্রেসের সহসভাপতি তথা রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর লালজিরলিয়ানার পদত্যাগ কংগ্রেসের কাছে বড় ধাক্কার।। তিনি মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টে যোগ দিয়েছেন। রাজনীতিবিদদের একাংশ বলছেন এই পদত্যাগ কংগ্রেসের সামনে অসম, মেঘালয় কিংবা মনিপুরের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
উপজাতি সমস্যা
রাজ্যের সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে, উপজাতি সমস্যা। রাজ্যের প্রায় ৩২ হাজার ব্রু উপজাতি ত্রিপুরার ছটি শিবিরে রয়েছেন। ২০১৮-র অগাস্ট পর্যন্ত মাত্র ৩১ টি পরিবার রাজ্যে ফেরত গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্যে নতুন শক্তি বিজেপি
মিজোরাম নিয়ে যথেষ্টই আগ্রাসী বিজেপি। রাজ্যে তারা জোট গড়ে লড়াইয়ে নেমেছে। ১৭ অক্টোবর মিজোরামে প্রচারে গিয়ে অমিত শাহ বলেছেন, মিজোরাম বছরের ক্রিসমাস পালন করবে বিজেপির সরকারের অধীনে।
বিজেপি রাজ্যে বুথ পর্যায়ে কাজ করছে। তারা বলছে নরেন্দ্র মোদীর শাসনে ২০ তম রাজ্য হিসেবে মিজোরাম তাদের শাসনে আসবে। উত্তরপূর্বের আটটি রাজ্যের মধ্যে সাতটি রাজ্য ইতিমধ্যেই এনডিএ-র শাসনে রয়েছে। খ্রিস্টান অধ্যুষিত এই রাজ্যে এখনও বিজেপির একজনও বিধায়ক নেই। ৪০ টি আসনেই লড়াই করছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস নেতা বিডি চাকমা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।