মোদীর ‘গুজরাট গৌরব’ স্লোগানেই কি মিলবে জয়ের কড়ি, জনমতে কোন ইস্যু ফ্যাক্টর
গুজরাটের নির্বাচনী দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই বিশেষজ্ঞরা বসে পড়েছেন আলোচনায়। নানা মত পোষণ করছেন গুজরাটের ভাগ্য নির্ধারণে। আর সংবাদমাধ্যমগুলিও আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছিল সমীক্ষা।
'গুজরাট গৌরব' স্লোগানকে পাথেয় করেই এবার জয়ের কড়ি জোগাড় করে নিতে চেয়েছিল বিজেপি। অন্তত প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষায় তাঁরা সেই লক্ষ্যে সফল। প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষায় উঠে এল বিজেপিরই জয়ের ইঙ্গিত। গুজরাটে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি নির্মাণকে কেন্দ্র করে কম বিতর্ক হয়নি। তবু সেই বিতর্কিত মূর্তিই এবার বিজেপিকে অনেকাংশ এগিয়ে রাখছে গুজরাট নির্বাচনে। ফলে রাহুলের বাড়া ভাতে এবারও ছাই পড়তে পারে শুধু সর্দারের আবেগ আর গৌরবের মহিমায়।
গুজরাটের নির্বাচনী দিনক্ষণ ঘোষণা হতেই বিশেষজ্ঞরা বসে পড়েছেন আলোচনায়। নানা মত পোষণ করছেন গুজরাটের ভাগ্য নির্ধারণে। আর সংবাদমাধ্যমগুলিও আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছিল সমীক্ষা। সেই সমীক্ষা কিন্তু রাহুলের অতি উৎসাহে ভাটা ফেলে দিল এবার। হার্দিক প্যাটেল ও অলপেশ থাক্করদের সঙ্গী করেও এবার নরেন্দ্র মোদীর গরিমায় প্রত্যাঘাত করা যাবে না বলেই উঠে এল জনমত সমীক্ষার প্রাক নির্বাচনী ফলে।
একটি সর্বভারতীয় চ্যানেলে এবার তাঁদের জনমত সমীক্ষায় বিজেপিকেই এগিয়ে রেখেছে। তাদের মতে, বিজেপির গুজরাট জয়ের মূল ফ্যাক্টর হবে 'গুজরাট গৌরব' স্লোগান। এখন বিষয় হল, এই গুজরাট গৌরব স্লোগান কতটা প্রভাব ফেলতে পারে মোদীর বিজয়রথকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। তা নিয়েই পর্যালোচনায় অবশ্যই অ্যাডভান্টেজ মোদী। তবে লড়াই থেকে একেবারে পিছু হটার কারণ নেই রাহুলেরও।
জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, বিজেপি এবার গুজরাট গৌরবের সুফল পাবেন। ৪৬ শতাংশের মত গুজরাট গৌরব অর্থাৎ সর্দারের বল্লভভাই প্যাটেলের আবেগ কাজে লাগিয়ে মোদীর দিকে ঢলবে গুজরাটের ভাগ্য। ৩২ শতাংশের মত এটা কোনও ফ্যাক্টরই হবে না। মানুষ উন্নয়ন চায়, উন্নয়নের নিরিখেই ভোট হবে এবার। মোদীকে কোনওভাবেই মাইলেজ দেবে না তাঁর গুজরাট গৌরবের স্লোগান। মানুষ বুঝতে পেরে গিয়েছেন ওসব ভোট টানার অজুহাত মাত্র। আর ২২ শতাংশ কোনও মত পোষণ করেননি।
এখানেই উঠে এসেছে আরও একটি তথ্য। গোটা গুজরাটে না হলেও রাজ্যের উত্তরাংশে কাজ করবে সর্দারের আবেগ। নর্দান গুজরাটে ৫৩টি আসন রয়েছে। গতবার এই ৫৩টি আসনের ৬০ শতাংশ গিয়েছিল বিজেপির পক্ষে। এবার জনমত সমীক্ষায় উঠে এসেছে আরও ২১ শতাংশ আসন যাবে বিজেপির দিকে। এবার উত্তর গুজরাটের ৮১ শতাংশ আসন বিজেপি পাবে শুধু এই গুজরাট গৌরব স্লোগানের জন্য। ফলে অন্য অংশের ফল খারাপ হলেও এই নর্দান গুজরাটের ফলেই বিজেপি ড্যাংডেঙিয়ে জয়ের কড়ি জোগাড় করে নিতে পারবে বলে মত।
শুধু গুজরাট গৌরব স্লোগানই নয়, এবার এই নির্বাচনে ইস্যু হবে নোটবন্দি থেকে জিএসটিও। এর প্রভাব এবার পড়বে গুজরাট নির্বাচনে। সেখানে কিন্তু খানিক পিছিয়েই রয়েছে মোদীর বিজেপি। বিগত পাঁচ বছরে রাজ্যের উন্নয়নের নিরিখে ৪০ শতাংশের মত গিয়েছে খারাপের দিকে। ২৮ শতাংশ মানুষ বলেছেন উন্নয়ন হয়েছে। আর ১৮ শতাংশের মত, কোনও উন্নয়নই হয়নি। ১৪ শতাংশ মানুষ কোনও মতামত দেননি এই প্রসঙ্গে।
সার্বিক বিচারে লড়াই এবার বেশ হাড্ডাহাড্ডি। বিজেপির ভরসা গুজরাট গৌরব স্লোগান। আর রাহুল অনুন্নয়নের ধ্বজা তুলে ধরে ঝাঁপিয়ে পড়বেন নির্বাচন জিততে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের আগে নিজের রাজ্যেই মোদীকে চরম প্রত্যাঘাত করা তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। সেখানে বাধা একটাই সর্দারের আবেগ। সেই আবেগকে বাস্তবের মাটিতে নামিয়ে আনাই এখন চ্যালেঞ্জ রাজীব-তনয়ের।