অযোধ্যার মসজিদের জন্য কেন বেছে নেওয়া হল ধন্নিপুর গ্রামটিকে?
রামমন্দিরের জন্য ৬৭ একর জমি বরাদ্দের ঘষণা বুধবারই করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারই সঙ্গে সমজিদের জন্যে স্থির করা স্থানের ঘোষণা হয় বুধবার। জানিয়ে দেওয়া হয় প্রস্তাবিত রামমন্দিরের থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে এই সমজিদ নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। লখনউ হাইওয়ের পাশে ধন্নিপুর গ্রামের ৫ একর জমি এই মসজিদ নির্মাণের জন্যে তুলে দেওয়া হবে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের হাতে। তবে এই এলাকাটিকে বেছে নেওয়ার পিছনে রয়েছে বেশ কয়েকটি কারণ।
লখনউ হাইওয়ের কাছে বরাদ্দ করা হয় মসজিদের জমি
যোগী সরকারের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা গতকাল মসজিদের জন্য স্থির করা এই স্থানের ঘোষণার পরই এর যুক্তি তুলে ধরেন। অযোধ্যা শহরের অদূরেই ধন্নিপুর গ্রামে এই মসজিদ তৈরির জন্য বরাদ্দ করা জমিটি লখনউ হাইওয়ের কাছে। এলাকায় মূলত মুসলিম ও যাদব সম্প্রদায়ের বাস। এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলে মন্ত্রী জানান, এখানে কোনও রকমের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা কম।
সমজিদের জমি নিয়ে কী বলল সরকার?
শ্রীকান্ত শর্মা বলেন, 'জমিটি হাইওয়ে থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে এবং সহজেই সেখানে যাওয়া যায়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দৃষ্টিতে এটি সেরা স্থান। এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ইতিহাস নেই এবং উভয় সম্প্রদায় মিলেমিশে জীবনযাপন করছেন।'
মসজিদের জমি স্থির করার পিছনে রয়েছে আরও কারণ
এদিকে উঠে আসছে আরও একটি কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রথম থেকেই হিন্দু পক্ষরা দাবি করে এসেছিল যে মন্দিরের পরিক্রমা বলয় থেকে বাইরে মসজিদের জমি বরাদ্দ করতে হবে। অযোধ্য মন্দিরের জমি থেকে এই বরাদ্দকৃত মসজিদের জমিটি ৩০ কিলেমিটার। আর মন্দিরের পরিক্রমার রাস্তা মন্দিরের ১৪ কিলোমিটার ব্যসের মধ্যে।
মুসমিমদের মধ্যে জমি নিয়ে অসন্তোষ
এদিকে এই জমি নিয়ে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে মুসলিমদের মধ্যে। তাদের যুক্তি শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় এখানে এসে নাামাজ আদায় করা খুব কঠি হতে চলেছে তাদের জন্য। এই নিয়ে সরব হয়েছে এল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে দেওয়া এই জমি মুসলিমদের প্রতি অবিচার বলে আখ্যা দিয়েছে তারা।
মসজিদের জন্য আরও যেই জায়গাুলি ছিল সরকারের নজরে
জানা গিয়েছে রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত স্থানের তালিকা কেন্দ্রকে পাঠানোর পর কেন্দ্রই এই জায়গাটিকে বেছে নেয়। তালিকাতে তিনটি স্থানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকেই রুনাহি শহরের কাছের এই গ্রামের জায়গাটি বেছে নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ছিল ফৈজাবাদ-আজমগড়, অযোধ্যা-বস্তি এবং লখনউ-অযোধ্যা মহাসড়ক। পরে তার ঘোষণা করেন যোগী সরকারের মন্ত্রী শ্রীকান্ত শর্মা। রুনাহির জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মুসলিম। সুফি সাধক শাহগাদা শাহের মাজারের কাছে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রিম নির্দেশেই মসজিদের জন্য জমি বরাদ্দ
গত বছরের ৯ নভেম্বর বহু প্রতিক্ষিত অযোধ্যা জমি বিতর্কের রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিমকোর্টের এই ঐতিহাসিক রায়ে সর্বসম্মতিক্রমে বিবাদের মূলে থাকা ২.৭৭ একর জমিটি হিন্দুদের দেওয়ার কথা বলা হয়। এবং তা তৈরির জন্য তিনমাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারকে ট্রাস্ট গঠন করতে হবে বলেও জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত জানায়, ১৯৯২ সালে মসজিদ ভাঙা বেআইনি ছিল। এবং মসজিদ তৈরির জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি বরাদ্দের জন্যে সরকারকে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত