গুজরাতে মোরবি সেতু ভেঙে ১৩২ জনের মৃত্যু, উঠছে একাধিক প্রশ্ন
গুজরাতে মোরবি সেতু ভেঙে ১৩২ জনের মৃত্যু, উঠছে একাধিক প্রশ্ন
রবিবার সন্ধ্যায় গুজরাতের ঝুলন্ত মোরবি ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধা। উদ্ধারকর্মীরা মোটট ১৪৩ জনকে উদ্ধার করেছে। বেশ কিছুদিন মোবরি ঝুলন্ত সেতু বন্ধ ছিল। মেরামতের কাজ চলছি। কিন্তু এই ঝুলন্ত সেতু জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তিন চারদিন আগেই এই শতাব্দী প্রাচীন ঝুলন্ত সেতু খোলা হয়েছে। তার আগে মেরামতের জন্য বন্ধ ছিল।
ছিল না কোনও অনুমতি পত্র
মাচ্ছু নদীর ওপর সেতুটি সংস্কারের জন্য বন্ধ ছিল। পৌরসভার তরফে এই সেতুটিকে ব্যবহারের উপযুক্ত বলে কোনও শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। সংস্কারের পর কার নির্দেশে সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গিয়েছে। মোরবি পৌরসভার প্রধান আধিকারিক সন্দীপ সিংহ জালা বলেন, পৌরসভার তরফ থেকে এখনও সেতুটি খোলার জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। পৌরসভা মেরামতের পরেও কোনও শংসাপত্র দেয়নি। সাত মাস আগে সেতুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটি বেসরকারি সংস্থা সেতুটির মেরামত করে। এরপর চারদিন আগে সেতুটি সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
|
ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা ছিল না
মাচ্ছু নদীর ওপর এই সেতুটি শতাব্দী প্রাচীন। অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান ছিল এই ঝুলন্ত সেতু। ১৫ টাকা টিকিটে কাটতে হতো সেতুটি যাওয়ার জন্য। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সেতুটির ধারণ ক্ষমতা যখন ১০০ জনের ছিল, সেখানে অতিরিক্ত ৪০০টি টিকিট বিক্রি করা হল। প্রবল ভিড়ে চাপ সহ্য করতে না পেরে সেতুটি ভেঙে পড়ে বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।
ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা
মোরবিতে অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান শতাব্দী প্রাচীন এই সেতু। শনি ও রবিবার ভিড় হবে, তা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দুর্ঘটনার খানিক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ছবি শেয়ার করা হয়েছে। সেখানে উপছে পড়া মানুষ দেখা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যখন শনি-রবিবার বেশি ভিড়ের সম্ভাবনা রয়েছে, সেক্ষেত্রে কেন ভিড় নিয়ন্ত্রণের কোনও ব্যবস্থা করা হল না।
গুজরাত প্রশাসনের বিবৃতি
ইতিমধ্যে গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাংভি ঘটনাস্থলে পৌঁচেছেন। তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, এই সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় সরকার একটি তদন্তকারী কমিটি গঠন করবে। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, সেতু ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সেতুটি ভেঙে পড়ে। দীপাবলির ছুটির দিন এবং রবিবার হওয়ায় এখানে পর্যটকদের ভিড় ছিল। সেতুটি একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ।সারা রাত ধরে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। সেতু ভেঙে পড়ার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল শোক প্রকাশ করেছেন।
গত দুই দশকে বিশ্ব জুড়ে ঘটেছে বহু ব্রিজ বিপর্যয়, দেখে নিন সেই ঘটনাগুলি