১০ বছরে সব থেকে বড় পতন শেয়ার বাজারে, কী কারণে ২৪০০ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স?
বড় পতন শেয়ার বাজারে। সোমবার শেয়ার বাজারে লেনদেন শুরু হতেই ধসের একটি ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। তবে সেই প্রবণতা যে শয়ার বাজারকে গত ১০ বছরে সব থেকে বড় পতনের সম্মুখীন করবে তা হয়ত কেউ আশঙ্কা করেনি। তবে বিনিয়োগকারীদের ভয় যে কোন মাত্রা ছুঁয়েছে তা আজ বোঝা যায় বেলা বাড়তেই। শেয়ার বাজারে লেনদেন যত বাড়তে থাকে তত বিনিয়োগকারীরা তাঁদের শেয়ার বিক্রি করতে থাকে। আর এর জেরে ২৪০০ পয়েন্ট পতন হয় শেয়ার বাজারে।
ইয়েস ব্যাঙ্ক ও করোনা ভাইরাসের জেরেই ধাক্কা শেয়ার বাজারে
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইয়েস ব্যাঙ্ক ও করোনা ভাইরাসের জেরেই ধাক্কা খেয়ে চলেছে শেয়ার বাজার। এর আগে গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবারই বড় ধাক্কা খেয়েছিলেন ইয়েস ব্যাঙ্কের আমানতকারীরা। যার জেরে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা ভরসা হারাতে শুরু করে। এরপর থেকে শুক্রবার থেকেই বড় পতন শুরু হয় বাজারে। শুক্রবার বাজার খুলতেই ১৪০০ পয়েন্ট পড়ে যায় সূচক। ইয়েস ব্যাঙ্কের বাজার দরে ধসের পাশাপাশি এসবিআই, ইন্দাসইন্দ ব্যাঙ্কেও ১০ শতাঁশ করে পতল লক্ষ্য করা যায়।
ইয়েস ব্যাঙ্ক নিয়ে আরবিআই-র নির্দেশিকার পরই শুরু পতন
বৃহস্পতিবার আরবিআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইয়েস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে মাথা পিছু ৫০ হাজারের বেশি টাকা তোলা যাবে না আগামী একমাস। পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বজুড়ে মন্দা তো রয়েছে। এরই জেরে ফের বড় পতন দেখা গেল শেয়ার বাজারে। আজ শেয়ার বাজার খুলতেই সেনসেক্সে বড় পতন দেখা যায়। পতন হয় নিফটিতেও। দুপুর পর্যন্ত শেয়ার সেনসেক্সে ২৩১৪.৮৬ পয়েন্ট পতন হয়। এর আগে ১০ বছর আগে একদিনে ২৩০০ পয়েন্ট পতন দেখেছিল শেয়ার বাজার। এর জেরে গত ১৬ মাসে সব থেকে নিচে চলে গেল দালাল স্ট্রিটের সূচক।
শেয়ার বাজারের যেই শেয়ারগুলিতে পতন
ওএনজিসি, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, বেদন্ত, জি এন্টারটেইনমেন্ট, ইন্দাসাইন্ড ব্যাংক এবং টিসিএসের শেয়ারে ৭.৯৫ শতাংশ পতন হয়। যদিও আজ ইয়েস ব্যাঙ্ক ও ভারত পেট্রোলিামের শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৯.৭২ ও ৭.৩৩ শতাংশ করে। আজকের এই পতনের জেরে বিনিয়োগকারীদের ৫ লাখ কোটি টাকা অর্থ যেন হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
করোনা ভাইরাসে প্রভাবে বিশ্ব বাজারে মন্দা জারি
এদিকে করোনা ভাইরাসে প্রভাবে বিশ্ব বাজারে মন্দা জারি রয়েছে। ইউরোপীয় এবং মার্কিন স্টক মার্কেটগুলিতে পরপর সূচকে হ্রাস লক্ষ্য করা গিয়েছিল গত সপ্তাহের শেষ লগ্নে। বিশেষজ্ঞদের মত, চিনের বাইরে করোনা ছড়িয়ে পড়ার খবর আসতেই এই পতন হয়েছে। এরই মাঝে ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। যার জেরে ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনীতি ও বাণিজ্যে বিশাল বড় ধাক্কা লেগেছে। প্রভাব পড়ছে আমেরিকার অর্থনীতিতেও।
এভাবে চললে কোন পথে অর্থনীতি?
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলের অর্থনীতি রীতিমতো ঝুঁকির মুখে পড়েছে করোনা ভাইরাস আরও ছড়িয়ে পড়ায়৷ পর্যটন শিল্পের পাশাপাশি এই ভাইরাসের জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে চিনের আমদানি রফতানিও। এর জেরে এই অঞ্চলের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বিস্তর। যদি আগামী কয়েক সপ্তাহে চিনের উহান শহরে এই মহামারী তাড়াতাড়ি নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তবে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধস নামবে বলে আশঙ্কা অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের৷