মুসলিমদের কেন মসজিদ তৈরির জন্য জমি, সুপ্রিম কোর্টে জমা নয়া আবেদন
মুসলিমদের কেন মসজিদ তৈরির জন্য জমি, সুপ্রিম কোর্টে জমা নয়া আবেদন
শেষ হয়েও হইল না শেষ। অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরও তা নিয়ে অনেকেই সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে পারছে না। সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার রায়ে রামলল্লার পক্ষে রায় দিলেও, হতাশ করেনি মুসলিম সম্প্রদায়কে। অযোধ্যায় মসজিদ তৈরি করার জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। কিন্তু এতেই আপত্তি তুলেছে অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। এরা রাম জন্মভূমি–বাবরি মসজিদ বির্তকিত মামলার এক মামলাকারী। সোমবার মুসলিমদের মসজিদ তৈরির নির্দেশের বিরুদ্ধতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে হিন্দু মহাসভা।
অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার আবেদন
৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের রায়র পর এই রায় পুর্নবিবেচনার আর্জি কেউই জানায়নি। কারণ রায়ে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়েছে যে অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে। এই রায়ের পর এবিএইচএম প্রথম হিন্দু সংগঠন যারা রায়টি পুর্নবিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছে। তাদের দাবি যে বিতর্কিত জমি থেকে যে কাঠামো উদ্ধার হয়েছে তা মসজিদের, এই সিদ্ধান্তকে বদল করার আবেদন জানিয়েছে। এর পাশাপাশি ডানপন্থী কর্মী হল ৪০ জন ব্যক্তি যৌথভাবে শীর্ষ আদালতে অযোধ্যা মামলার রায়ের পুর্নবিবেচনা জানিয়ে দ্বারস্থ হয়েছে। তাদের দাবি, এই রায় সত্যতা এবং আইন উভয়ই ভুল।
ঐতিহাসিক রায়
এ বছরের ১৪ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন মুখ্য বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে অযোধ্যা মামলার আসল মামলাকারীরাই এই মামলায় তর্ক-বিতর্ক করতে পারবে। এই মামলায় অন্যান্যদের হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অন্যদিকে, ৯ নভেম্বর দেশের মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৌয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ঐতিহাসিক রায় দেন। রায়ে বলা হয় যে, অযোধ্যার ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি ভগবান ‘রাম লল্লা'র এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে মসজিদ গড়ার জন্য আলাদা পাঁচ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এবিএইচএম তাদের পুর্নবিবেচনায় জানিয়েছে যে সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে বিতর্কিত কাঠামোকে মসজিদ বলে অভিহিত করা তা আপাতদৃষ্টিতে ঠিক নয় এবং তা প্রমাণ-তথ্য বিরুদ্ধ।
অন্য হিন্দু আবেদনকারীরাও মুসলিমদের বিপক্ষে
আবেদনকারী, যিনি আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈনের মাধ্যমে আবেদন করেন, তিনি বলেন, ‘ওই কাঠামোটি মসজিদের তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে মুসলিমরা। সেখানে হিন্দুরা প্রমাণ করে দিয়েছে যে বিতর্কিত জমিটি ভগবান রামের জন্মস্থান এবং তাই ওই কাঠামোটি মুসলিমদের ঘোষণা করার কোনও অর্থ হয় না।' আবেদনকারী তাদের আর্জিতে বলেছেন যে, ‘বিতর্কিত জমির সঙ্গে মুসলিমদের নাম জড়ানোর কোনও অধিকার নেই। এমনকী এই জমিটা যখন হিন্দুদেরই তখন তাদের আলাদা করে মসজিদ গড়ার জন্য পাঁচ একর জমি দেওয়ারও দরকার নেই।' আবেদনে এও বলা হয়েছে যে, ‘পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে হিন্দুদের উপাসনার জায়গায় মুসলিমরা মসজিদ বানিয়ে ফেলেছিল। তাই তারা আবার সেই জায়গায় ধর্মের অধিকার দাবি করতে পারে না। তাই অতীতে তাদের সেই ভুলের জন্য কেন পুরস্কৃত করা হচ্ছে।'
ঐতিহাসিক ইরফান হাবিব, অর্থনীতিবিদ ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ প্রভাত পটনায়েক, সমাজ কর্মী হর্ষ মন্দার, নন্দিনী সুন্দর এবং জন দয়াল সহ ৪০টি ব্যক্তি যৌথভাবে পুর্নবিবেচনার আবেদন জানিয়েছেন।