For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

বাংলাদেশের সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হয়েও বিচার পান না কেন

বাংলাদেশের সংবিধানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে, এছাড়া সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষায় একাধিক সংগঠনও গড় উঠেছে। তা সত্ত্বেও সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনার বিচার করা যাচ্ছে না কেন?

  • By Bbc Bengali

মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে সমাবেশ।
Getty Images
মত প্রকাশের স্বাধীনতার দাবিতে সমাবেশ।

"আমাদেরকে একটা কথা বলারও সুযোগ দেয়নি। এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকলো, আমার হাত ভাঙলো, মাথা ফেটে গেল । রক্তারক্তি অবস্থা" - এ হচ্ছে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে যাওয়া একজন সাংবাদিকের অভিজ্ঞতা।

শুনতে যেমনই শোনাক, বাংলাদেশে সাংবাদিকদের এরকম নির্যাতনের শিকার হওয়া কোন বিরল ঘটনা নয়, বরং এ প্রবণতা বাড়ছে । তার পরেও নানা কারণে আইনের আশ্রয়ও নিতে চান না অনেক সাংবাদিক।

বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন, হয়রানি ও আক্রমণের বেড়ে যাওয়ায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এ পেশার অনেকেই - বলছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার জন্য কাজ করে এমন একটি সংস্থা।

এই পেশায় কেরিয়ার গড়ার আশা নিয়ে দুই বছর আগে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ প্রতিবেদক হিসেবে কাজ শুরু করেন নয়ন।

পেশাগত কাজে গত বছর তিনি সরকারি ভূমি অফিসে গেলে সেখানকার কয়েকজন কর্মকর্তা কোন কারণ ছাড়াই তার ও তার সহকর্মীর ওপর চড়াও হন।

তাদের উপর্যুপরি মারধরে গুরুতর আহত হন তারা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানালেও কোন মহল থেকে কোন ধরণের সাড়া পাননি মি. নয়ন।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "আমরা অ্যাসাইনমেন্টের জন্য ভূমি অফিসে গেলাম। তখন কয়েকজন আমাদেরকে একটা ঘরে লক করে বলল যে, ফাজলামি করিস?"

"এরপর আমাদেরকে একটা কথা বলারও সুযোগ দেয়নি। এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকলো। আমার হাত ভেঙে যায়, মাথা ফেটে যায়। মানে একটা রক্তারক্তি অবস্থা।"

কর্তৃপক্ষ বললেন, 'এটা দুর্ঘটনা, মেনে নেয়াই উচিত হবে'

এ ঘটনার পর মি. নয়নের অফিসে জরুরি বৈঠক বসে।

তিনি আশা করেছিলেন যে অফিস কর্তৃপক্ষ তার এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ উল্টো তাকে বলেন, এটি নিছক দুর্ঘটনা যা মেনে নেয়াই উচিত হবে। এই বিষয়গুলো যেন তিনি যেন ভুলে যান।

এমন আচরণে ভীষণ হতাশ হয়ে পড়েন মি. নয়ন।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, কেন তার মতো গণমাধ্যম-কর্মীদের এ ধরণের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে?

এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিলাম তাহমিনা রহমানের কাছে। তিনি সাংবাদিকদের অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করছেন।

বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:

কুয়েতে গৃহকর্মী বেচাকেনার অনলাইন 'দাসীর বাজার'

বেঁটে পুরুষদের কী যৌনসঙ্গী পেতে সমস্যা হয়?

রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার উদ্যোগ আটকে গেছে

মাঠে নামা ছাড়া আর কিছু ভাবছি না: সাকিব

ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে যা নেয়া যাবে না

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার এক সাংবাদিক।
Getty Images
পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার এক সাংবাদিক।

"সাংবাদিকদের কোন সাপোর্ট সিস্টেম নেই"

তাহমিনা রহমানের মতে, আইনের দীর্ঘসূত্রিতা, জটিল বিচারিক প্রক্রিয়া সেইসঙ্গে রাষ্ট্র ও প্রতিষ্ঠান পক্ষ থেকে কোন ধরণের সহযোগিতা না থাকার কারণে সাংবাদিক নির্যাতন ও সহিংসতা থামানো যাচ্ছেনা।

সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় কোন প্ল্যাটফর্ম না থাকায় এই পেশা দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, "সাংবাদিক নির্যাতনের মামলাগুলো দিনের পর দিন ঝুলিয়ে রাখা হয়। একের পর এক তারিখ পড়তে থাকে। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইনগুলোয় সাংবাদিকদের সুরক্ষার কথা সেভাবে বলা নেই। এ কারণে তারা দ্রুত বিচার পান না। এছাড়া তাদের কোন সাপোর্ট সিস্টেম নেই যারা তাদের এসব সমস্যা নিয়ে কথা বলবে।"

আইনি লড়াই করতে চান না সাংবাদিকরা

এসব কারণে অনেক সময় দেখা যায় সাংবাদিকরা নির্যাতন, হয়রানি বা হুমকি-ধমকির শিকার হলেও বিষয়গুলো নিয়ে আইনি লড়াই করতে চান না।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা স্থানীয়ভাবে বিষয়গুলো মীমাংসা করে ফেলেন বলে জানান মিসেস রহমান।

তিনি বলেন, "সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হলেও সেগুলো আদালতে নিতে চান না। কেননা মামলা করতে গেলে প্রতিষ্ঠান থেকে যে সাপোর্ট লাগে বা অর্থনৈতিকভাবে যে সাপোর্ট লাগে, সেটা তাদের সবার থাকেনা। এ অবস্থায় বিচার নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে যায়।"

সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন।
Getty Images
সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন।

সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো নিষ্ক্রিয় কেন?

সাংবাদিকদের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে একাধিক সংগঠন গড়ে উঠলেও সেগুলো সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধে বা নির্যাতনের ঘটনার দ্রুত বিচারের দাবি আদায়ে কতোটা তৎপর সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি ফরিদা ইয়াসমিন জানান, সংগঠনগুলোর মধ্যে একে তো ঐক্যের অভাব, তেমনি রয়েছে প্রভাবশালীদের চাপ এবং সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা গড়ে না ওঠায় সংগঠনগুলো দাবি আদায়ে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে।

"সাংবাদিকদের ইউনিয়নগুলো রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত। কোন একটা বিষয়ে যদি সবার এক হওয়ার প্রয়োজন পড়ে, তখন দেখা যায় রাজনৈতিকভাবে কেউ কেউ এটার ফায়দা নিতে চেষ্টা করে। আবার সাংবাদিকদেরও সাহসের অভাব আছে, কারণ সাংবাদিকদের চাকরির নিশ্চয়তা এখনও গড়ে ওঠেনি।"

"জব সিকিউরিটি যেখানে নাই সেখানে তারা সোচ্চার হবে কিভাবে।" বলেন মিসেস ইয়াসমিন।

সাংবাদিক হত্যা বা নির্যাতনের সাথে যারা জড়িত তারা রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িকভাবে খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ জোগাড় করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশের সংবিধানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হলেও রাষ্ট্রীয় সামাজিকভাবে সেই স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায়নি বলে জানান নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক মি. নয়ন।

কোন বিচার না পেয়ে এক পর্যায়ে চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হন তিনি। কিন্তু এখনও নিরাপত্তাহীনতা তাকে তাড়া করে বেড়ায়।

আরো পড়তে পারেন:

চাকরি হারানোর ভয় জেঁকে বসেছে গণমাধ্যমে

বাংলাদেশে মফস্বল সাংবাদিকতা কতটা ঝুঁকির?

'আক্রমণের নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন না' মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর

English summary
BJP observer Kailash Vijayvargiya counters Mamata Banerjee on phone tap issue. Mamata alleges Narendra Modi’s governmentdoes phone tap.
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X