মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদের নির্বাচন কেন উদ্ধব ঠাকরের বিরক্তির কারণ হল?
মহারাষ্ট্রের বিধান পরিষদের নির্বাচন কেন উদ্ধব ঠাকরের বিরক্তির কারণ হল?
মহারাষ্ট্রে শেষ ছ'টি আসনে রাজ্যসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) মহা বিকাশ আঘাদি (এমভিএ) এর চেয়েও ভাল ফল করেছিল। শিবসেনার আশা ছিল রাজ্যসভার হারের জবাব বিজেপিকে বিধান পরিষদ নির্বাচনে দেওয়া যাবে৷ কিন্তি রাজ্যের ১০ টি বিধান পরিষদের আসনের মধ্যে, বিজেপি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা পাঁচটি আসনেই জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছে৷ অন্যদিকে এমভিএ-র এনসিপি-শিবসেনা দুটি করে এবং কংগ্রেস একটি আসন জিতেছে। এই পরাজয় মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনে জয় পরাজয় তো স্বাভাবিক তাহলে শিব সেনা প্রধান ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে পুরো বিষয়টি নিয়ে রেগে গেলেন কেন?
কেন বিরক্ত উদ্ধব?
মহারাষ্ট্রে জোট অপেক্ষা কম শক্তিশালী হয়েও বিজেপি পরপর দুটি নির্বাচনে বড় জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছে এবং ১০ দিনের মধ্যে দুবার ক্ষমতাসীন এমভিএ জোটকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছে। মহারাষ্ট্রে ১০ টি বিধান পরিষদের আসনের জন্য ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বিধায়কদের পরিসংখ্যানের নিরিখে, বিজেপির চারটি এবং মহা বিকাশ আঘাদি পাঁচটি আসন পাওয়ার বিষয় নিশ্চিত ছিল। দশম এমএলসি আসনের জন্য মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে। রাজ্যসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর কংগ্রেস, শিবসেনা এবং এনসিপি তাদের বিধায়কদের হোটেলে সুরক্ষিত রেখেছিল। কিন্তু এত সব সত্ত্বেও পঞ্চম আসনে বাজী মারে বিজেপি৷ আর এই পরপর দু'বার বিজেপির কাছে হার স্বীকারই বিরক্তির কারণ হয়েছে উদ্ধবের! এমনটাই বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্যসভার থেকেও বড় ধাক্কা বিধান পরিষদে বিজেপির এগিয়ে যাওয়া!
রাজ্যসভা নির্বাচনে এমভিএ-র পরাজয়ের থেকেও এমএলসি-তে পরাজয় জোটকে বেশি কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলেছে। বিজেপির পঞ্চম আসনে জয়ের জন্য ১৭-১৮ টি ভোট প্রয়োজন ছিল, যেখানে কংগ্রেসের ১১ জন বিধায়কের সমর্থন প্রয়োজন ছিল৷ এবং তিনজন শিবসেনার উদ্বৃত্ত ভোটও ছিল। সুতরাং, কংগ্রেসের মাত্র আটজন বিধায়কের প্রয়োজন ছিল, যা তারা জোগাড় করতে পারেনি। এবং তাদের আবার পরাজিত হতে হয়েছে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পরে, সন্দেহ করা হয়েছিল যে কমপক্ষে ২০ জন বিধায়ক ক্রস ভোট দিয়েছেন। এর ফলে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সমস্ত শিবসেনা বিধায়কদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। সমস্ত বিধায়কদের অবশ্যই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে৷
মহারাষ্ট্রের রাজনীতি ক্রমশ ঠাকরে পরিবারের হাতের বাইরে যাচ্ছে!
অন্যদিকে শিবসেনা নেতা এবং মহারাষ্ট্রের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী একনাথ শিন্ডে ১০-১২ জন বিধায়ক সহ, সোমবারের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দলের 'নাগালের বাইরে' চলে গিয়েছেন৷ জল্পনা রয়েছে শিবসেনা বিধায়করা শিন্ডের সঙ্গে বিজেপি শাসিত রাজ্য গুজরাটের সুরাটের একটি হোটেলে রয়েছেন৷ ওই হোটেলটির বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শিন্ডে মঙ্গলবারই সুরাট থেকে সাংবাদিকদের সম্বোধন করবেন বলেও জানা গিয়েছে৷ এরকম অবস্থসায় শিন্ডেকে বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সাসপেন্ড করেছে শিবসেনা৷ সব মিলিয়ে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি যে এখন অনেকটাই ঠাকরে পরিবারের হাতের বাইরে তা বলায় যায়!
২০১৪ থেকে মাঝপথে পদ্ম কাঁটায় উলটেছে একাধিক সরকার , এবার পালা মহারাষ্ট্রের