কোভিড টিকাকরণে সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও 'বুস্টার' ডোজে কেন অসফল ভারত
করোনার প্রথম তরঙ্গের পর থেকেই করোনা টিকা উৎপাদন এবং টিকাকরণের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ভারত৷ সারা দেশের ১০০ কোটিরও বেশি মানুষের কাছে দ্রুত ও বিনামূল্যে করোনা প্রথম দুটি টিকা পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে ভারত৷ কিন্তু করোনার তৃতীয় টিকা বা বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে সেরকম সাফল্য আসেনি ভারতের হাতে, কিন্তু কেন এই পরিনতি?
কেন অনিহা বুস্টার ডোজের প্রতি?
গত বছর ২৫ ডিসেম্বর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুস্টার ডোজ শুরু করার সিদ্ধান্তের ঘোষণা করেছিলেন৷ যা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতে সতর্কতামূলক ডোজ হিসাবে পরিচিত। কেন্দ্র সরকার বুস্টার প্রোগ্রামটি সম্পূর্ণরূপে চালু করার আগেই জানুয়ারিতে ওমিক্রনের কারণে তৃতীয় করোনা তরঙ্গ দেশকে গ্রাস করে৷ ২১ জানুয়ারী এক দিনে প্রায় ৩.৫ লক্ষ করোনা সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসে৷ দেশের মাইক্রোবায়োলজি এবং ইমিউনোলজি বিভাগের গবেষণা সহযোগী ডক্টর লিবিন আব্রাহাম বলেছেন, 'ওমিক্রন অনেক বেশি লোককে সংক্রমিত করার কারণে মানুষ বুস্টার থেকে দূরে সরে যেতে পারে। তারা হয়ত এটা ভাবতে পারেন যে তারা ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছেন তাই এখন আর কোনো বুস্টার ডোজ নেওয়ার দরকার নেই৷
আরও যা বললেন ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক!
ডক্টর
লিবিন
আব্রাহাম
ব্রিটিশ
কলাম্বিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়,
ভ্যাঙ্কুভারের
মাইক্রোবায়োলজি
এবং
ইমিউনোলজি
বিভাগের
গবেষণা
সহযোগী৷
তিনি
বলেছেন
একটি
ভাল
জিনিস
হল,
ওমিক্রন
তরঙ্গের
ফলে
বড়
জনসংখ্যা
ইমিউনিটি
পেয়েছে।
এই
হাইব্রিড
অনাক্রম্যতা
ভ্যাকসিনের
মিক্স-এন্ড-ম্যাচ
থেকে
অর্জিত
অনাক্রম্যতার
চেয়েও
ভালো।
এর
অর্থ
হল
শরীর
প্রাকৃতিক
সংক্রমণের
মাধ্যমে
প্রতিরোধ
ক্ষমতা
পেয়েছে
এবং
টিকার
প্রথম
দুটি
ডোজ
সেই
ইমিউনিটিকে
কিছুটা
হলেও
শক্তিশালী
করেছে৷
তাই
তৃতীয়
এবং
বুস্টার
ডোজের
ক্ষেত্রে
মানুষের
অনিহা
এসে
থাকতে
পারে!'
বুস্টার না নেওয়া নিয়ে সতর্ক করছেন ডক্টর লিবিন আব্রাহাম!
তবে তিনি এও জানিয়েছেন যারা বয়স্ক, এবং যাদের কোমরবিডিটি রয়েছে কিংবা যারা এখনও প্রাকৃতিকভাবে ইমিউনিটি পাননি তাদের অবিলম্বে বুস্টার ডোজ নিতে হবে। বুস্টার ডোজে দেরি করা খারাপ। যদি কোমরবিডিটি থাকা লোকেদের সংক্রমণ হয়, এমনকি হালকা ওমিক্রনেও সংক্রমিত হন তারা তাহলে শরীর একটি উচ্চ ভাইরাল লোড পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুত নাও হতে পারে।'
দেশে কোথায় কত বুস্টার ডোজ?
প্রসঙ্গত, লাদাখ, সিকিম, দিল্লি এবং লাক্ষাদ্বীপ সহ ছোট রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি ভারতে বুস্টার ডোজগুলির কভারেজের ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে৷ অন্যদিকে দিল্লি-ভিত্তিক স্বাধীন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, ওআরএফ দ্বারা সংগৃহীত তথ্য অনুসারে, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, দিল্লি এবং হরিয়ানা ১৫ এপ্রিল থেকে ১০ জুনের মধ্যে বুস্টার ডোজ গ্রহণ সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরের ১০ এপ্রিল থেকে ১৮ থেকে ৫৯ বছরের বয়স্কদের জন্য সতর্কতা ডোজ শুরু হয়েছিল। ভারতে বুস্টার ডোজ গ্রহণ কম হয়ে থাকলেও, বুস্টার ডোজ গ্রহনে মোট জনসংখ্যার (১৮ বছরের বেশি) হিসেবে তুলনামূলকভাবে বেশি টিকা নেওয়া রাজ্যগুলি হল, লাদাখ (৩১ শতাংশ) অন্ধ্র প্রদেশ (১০ শতাংশ), আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ (৯শতাংশ), লাক্ষাদ্বীপ , সিকিম এবং দিল্লি (প্রায় ৮ শতাংশ)।