কেন আরও দ্রুত গলছে গঙ্গোত্রী হিমবাহ, কী বলছে বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট?
কেন আরও দ্রুত গলছে গঙ্গোত্রী হিমবাহ, কী বলছে রিপোর্ট?
গঙ্গোত্রী হিমবাহে ব্ল্যাক কার্বনের প্রভাব বাড়ছে নিত্যদিন। এর জেরে আরও দ্রুত গলতে শুরু করেছে ওই এলাকার বরফের চাঁই। এভাবে চলতে থাকলে গঙ্গার জল আরও বেশি হারে শুকোবে বলে দেরাদুন-স্থিত ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির এক রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্ল্যাক কার্বন
দীর্ঘদিন ধরে চলা গবেষণার পর ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির বিজ্ঞানী পিএস নেগির বক্তব্য, ৩৬০০ মিটার উচ্চতায় গঙ্গোত্রী হিমবাহের চিরবাসা স্টেশন ও ৩৮০০ মিটার উচ্চতায় ভোজবাসা স্টেশন কালো কার্বনে ভরে গিয়েছে। এর জেরে নিত্যদিন উষ্ণতা বাড়তে থাকায়, ওই এলাকার বরফ গলতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির বিজ্ঞানী পিএস নেগির।
সাবধান হওয়া প্রয়োজন
ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গঙ্গোত্রী এলাকার প্রতি কিউবিক মিটারে ৪.৬২ মাইক্রোগ্রাম ব্ল্যাক কার্বন বাসা বেঁধেছে। এই পরিসংখ্যান পরিবেশের পক্ষে বিপজ্জনক বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এখনই সচেতন না হলে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক আকার ধারণ করবে বলে ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
গ্রীষ্মের সময়
ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, প্রধানত গ্রীষ্মের সময় অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন এবং সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরের মধ্যবর্তী সময়ে গঙ্গোত্রী এলাকায় ব্ল্যাক কার্বনের প্রভাব বাড়ে। কারণ সেই সময় বাড়তে থাকা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভ্রমণমূলক কর্মসূচি এলাকায় দূষণের মাত্রা বাড়ায় বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
শীতের সময়
নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর গঙ্গোত্রী এলাকার পার্শ্ববর্তী জঙ্গলে ব্যাপক দাবানলের প্রাদুর্ভাব ঘটে। সেই সময়ও বাতাসে কালো কার্বনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় বলে জানিয়েছেন ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির বিজ্ঞানীরা। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ২০০০ সালের পর দাবানলে ইতিমধ্যেই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে উত্তরাখণ্ডের ৪৪,৫৫৪ হেক্টর জঙ্গল। অনেক সময় ইমারত তৈরির জন্য কাঠ পুড়িয়ে জঙ্গল সাফ করে থাকেন মানুষ। সেই অভ্যাসকে দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে বাখ্যা করেছেন পরিবেশবিদরা। সেই সময় গঙ্গোত্রী এলাকার প্রতি কিউবিক মিটারে ২ মাইক্রোগ্রাম ব্ল্যাক কার্বন রাজত্ব করে বলে জানানো হয়েছে।
দূষণ কম হয় যখন
ওয়াদিয়া ইনস্টিটিউট অফ হিমালয়ান জিওলজির রিপোর্টে জানানো হয়েছে, একমাত্র অগাস্ট এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে গঙ্গোত্রী এলাকায় দূষণের পরিমাণ কম থাকে। কারণ সেই সময় পর্যটনের চাপ কম থাকে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।