শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা এনসিপির? রাষ্ট্রমঞ্চে একাধিক বিরোধী নেতাদের অনুপস্থিতিতে বাড়ছে জল্পনা
করোনা আবহে জোরদার ধাক্কা খেয়েছে ভারতীয় অর্থনীতি। সঙ্গে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতাও শুরু হয়েছে গোটা দেশজুড়ে। আর এর জন্য মোদী সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধী শিবির। আর একথা মাথায় রেখেই ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকেই পাখির চোখ করেছে সমস্ত রাজনৈতিক শিবির। শুরু হয়েছে সলতে পাকানোর কাজ আর সেই উপলক্ষেই মঙ্গলবার রাষ্ট্রমঞ্চের ছাতার তলায় এনসিপি-সহ অন্যান্য মোদী বিরোধী দলের এক বিশাল বৈঠক ডাকা হয়।
মঙ্গলবার পওয়ারের দিল্লির বাংলোয় সিপিএম, আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টি-সহ ৮টি অকংগ্রেসী বিরোধী দলের এই বৈঠক বসে। কিন্তু ডাক পাওয়া সত্ত্বেও বৈঠকে হাজির হননি অনেক বিরোধী দলনেতাই। আর এখানেই দানা বাঁধছে নতুন রহস্য। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে যশবন্ত সিনহা প্রথম এই মঞ্চের গঠন করেছিলেন। বর্তমানে তিনি তৃণমূল শিবিরে বড় দায়িত্বে আছেন।
কংগ্রেসকে এই বৈঠকে ডাকা হলেও তারা যোগ দেয়নি। অন্যান্য অনেক দলই তাদের প্রথমসারির কোনও নেতাকে না পাঠিয়ে তুলনামূলক ভাবে দ্বিতীয়সারির নেতাকে পাওয়ার হাউসে বৈঠকের জন্য পাঠায়। অন্যদিকে কংগ্রেস ছাড়া ডিএমকে, আরজেডি এবং বিএসপিৃ-ও কোনও প্রতিনিধি পাঠায়নি। আর এখানেই তৃতীয় ফ্রন্টের ভবিষ্যত নিয়ে উঠে যাচ্ছে বড়সড় প্রশ্ন।
যদিও বৈঠকের পর শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা চালাচ্ছে এনসিপি শিবির। তাদের দাবে শরদ পাওয়ার শুধুমাত্র এই বৈঠকের হোস্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি কোনও আয়োজক বা আহবায়কের ভূমিকা নেননি। সহজ কথায় পাওয়ারের বাসভবনে যে বৈঠক হয়েছে, সেটা শরদ পাওয়ার ডাকেনি। এমনকী স্পষ্ট ভাবে এই বার্তা মিডিয়ার সামনেও রেখেছেন এনসিপি নেতা মাজেদ মেমন।
তাঁর দাবি, "এই বৈঠকে কংগ্রেসকে বয়কট করা হয়েছে এমন ভাবা ভুল হবে। দের ৫ সাংসদকে ডাকা হয়েছিল।কিন্তু দিল্লিতে অনুপস্থিতির কারণ দেখিয়ে তাঁরা আসতে পারেননি।" ই বৈঠকে আদৌ ২০২৪-এর মোদী-বিরোধী ফ্রন্ট গঠনের কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা সেই বিষয়ে কোনও স্পষ্ট আভাস পাওয়া যায়নি। যদিও এই ধরণের কোনও আলোচনাই হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে এনসিপি শিবিরের তরফে।
কিন্তু মোট ১৪টি রাজনৈতিক দলের বৈঠক ডাকা হলেও কেন মাত্র আট দলের উপস্থিতি দেখা গেল সেই বিষয়ে সদুত্তর নেই কারও কাছেই। তবে অনেকেই মনে করছেন পাওয়ার শিবিরের উপর বিশেষ ভরসা করতে পারছেন না কেউই। অন্যদিকে কংগ্রেস ছাড়া মোদী বিরোধী শক্তি তৈরি অসম্ভব বলেই মত অনেকের। যদিও একাধিক রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্কের টানাপোড়েন কার্যত তিক্ততার জায়গায় পৌঁছেছে। সেখানে এই জোট হলেও কতটা সফলতার মুখ দেখবে সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। যদিও গত দু-সপ্তাহে ইতিমধ্যেই তিনবার পাওয়ার ভবনে পা রেথেছেন মোদী বিরোধী ভোটকুশলী তথা মমতার অন্যতম সেনানি প্রশান্ত কিশোর ওরফে পিকে। আর সেখানেই নতুন সমীকরণের গন্ধ পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।