For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

এলএনজি: স্পট মার্কেট থেকে কেন তরল গ্যাস কিনছে না বাংলাদেশের সরকার?

এলএনজি: স্পট মার্কেট থেকে কেন তরল গ্যাস কিনছে না বাংলাদেশের সরকার?

  • By Bbc Bengali

উচ্চমূল্যে কারণে বাংলাদেশে গত অগাস্ট মাস থেকে স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি কেনা বন্ধ আছে। স্পট মার্কেট বলতে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি না করে চাহিদা অনুযায়ী টেন্ডারের মাধ্যমে সরকার যে এলএনজি কেনে তাকে বোঝানো হয়।

তবে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির মাধ্যমে কাতার এবং ওমান থেকে এলএনজি কেনা অব্যাহত আছে।

পেট্রোবাংলার অধীনস্থ যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এলএনজি কেনা হয়, সেই রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড আরপিজিসিএল বলছে, এলএনজির দাম এখন বিশ্ববাজারে অনেক বেড়ে গেছে, যে কারণে জুলাই মাসের পর থেকে আর স্পট মার্কেট থেকে সরকার এলএনজি কিনছে না।

স্পট মার্কেটে এখন প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ৩২ ডলার।

এদিকে, বাংলাদেশে গ্যাসের সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, আর ফল হিসেবে বিভিন্ন খাতে শিল্প উৎপাদন বাধার মুখে পড়ছে।

আমদানির ওপর কতটা নির্ভরশীল বাংলাদেশের বিদ্যুৎ?

ফলে ব্যবসায়ীদের অনেকে সরকারের কাছে স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি আমদানির দাবি জানিয়েছেন।

তবে সরকার বলছে, এলএনজির উচ্চমূল্যের কারণে সে সিদ্ধান্ত এখনি নিতে পারছে না সরকার।

বিদ্যুৎ বাল্ব
Getty Images
বিদ্যুৎ বাল্ব

বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি তৈরি হওয়ায় জুলাই মাস থেকে লোডশেডিং এর মাধ্যমে সরকার ঘাটতি সমন্বয়ের চেষ্টা করছে।

স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির কী পরিস্থিতি

বর্তমানে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মোট ৬২ শতাংশের মত পূরণ করা হয় গ্যাসের মাধ্যমে।

এর মধ্যে স্থানীয় আবিষ্কৃত গ্যাসের মজুদের মাধ্যমে পূরণ হয় ৫০ শতাংশের বেশি। আর এলএনজির মাধ্যমে পূরণ হয় সাড়ে ১১ শতাংশ।

আরপিজিসিএলের এলএনজি মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বিবিসিকে বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে করা চুক্তির উৎস দুইটি থেকে যে পরিমাণ এলএনজি পাওয়া যায়, তার থেকে দেশে চাহিদা বেশি।

সেটি পূরণ করা হয় স্পট মার্কেট থেকে। যা ১৬টি বহুজাতিক কোম্পানি থেকে কেনা হয়, এর মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানি সিঙ্গাপুরভিত্তিক।

বৃহত্তম পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে যে পাঁচটি তথ্য জেনে রাখতে পারেন

এখন বছরে স্পট মার্কেট থেকে কতটা এলএনজি কেনা হবে, তা নির্ভর করে করে দেশে নিজস্ব গ্যাসের মজুদ থেকে বিদ্যুৎ, সার এবং অন্যান্য শিল্পে সরবারহের পর গ্যাসের যে চাহিদা থাকে, সেটি পূরণের জন্য যতটা দরকার হয় ততটা।

গত দুই বছরে কী পরিমাণ এলএনজি স্পট মার্কেট থেকে কেনা হয়েছে, তার পরিষ্কার সংখ্যা কর্মকর্তারা বলতে চাননি।

তবে, আরপিজিসিএলের ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, এ বছরের ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গত দুই বছরে কেনা মোট ২৯ কার্গো এলএনজি স্পট মার্কেট থেকে দেশে পৌঁছেছে।

একেক কার্গোতে তিন দশমিক দুই মিলিয়ন এমএমবিটিইউ (এলএনজির ইউনিট) গ্যাস থাকে।

বিদ্যুৎ
BBC
বিদ্যুৎ

ত্রিশে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে কেনা এলএনজি দেশে এলেও আরপিজিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, এটা আগেই কেনা এলএনজির সরবারহ এসেছে, সরকার এ বছরের জুলাই মাসের পর আর স্পট মার্কেট থেকে কেনেনি।

স্পট মার্কেট থেকে কেনা এলএনজির চাহিদা এবং পরিমাণ সম্পর্কে আরপিজিসিএল তথ্য না দিলেও, পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, গত অর্থবছরে অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে এলএলজি আমদানি বাবদ সরকারের মোট সাড়ে ৩৮ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি খরচ হয়েছে।

তবে এ বছর স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ থাকায় এ বাবদ অর্থ সাশ্রয় হবে বলে বলছেন কর্মকর্তারা।

তবে এ বছরও এলএনজি আমদানি করতে সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।

এই মুহূর্তে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কিনতে হলে প্রতি ইউনিট ৩২ ডলার দামে কিনতে হবে।

দুই হাজার বিশ সালে যখন সরকার প্রথম স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি শুরু করে সেসময় প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম অনেক কম ছিল।

দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে এলএনজি আমদানি

দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে কাতার এবং ওমান থেকে আনা হচ্ছে এলএনজি, যেখান থেকেই দেশের এলএনজি সরবারহের বড় অংশটি আসে।

এই দুইটি উৎস থেকে বছরে দেশে প্রায় চার মিলিয়ন মেট্রিকটন এলএনজি আমদানি করা হয়।

কাতারের সাথে ১৫ বছর মেয়াদী চুক্তির মেয়াদ ২০৩২ সালে শেষ হবে। আর ওমানের সাথে ১০ বছর মেয়াদী চুক্তির মেয়াদ ২০২৯ সাল পর্যন্ত।

মি. ইসলাম বলেছেন, কাতার এবং ওমান থেকে যে এলএনজি আমদানি করা হয় সেটি জিটুজি চুক্তিতে আনা হয়, অর্থাৎ উভয় দেশের সরকারি পর্যায়ে এই কেনাকাটা হয়।

গ্যাসের অভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো হয়েছে
Getty Images
গ্যাসের অভাবে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো হয়েছে

তিনি জানিয়েছেন, চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দামের ওঠানামার সাথে এলএনজির মূল্য নির্ধারিত হয়।

এই মুহূর্তে প্রতি ইউনিট এলএনজি কিনতে সরকারকে ১৩ ডলারের মত খরচ করতে হচ্ছে।

মি. ইসলাম বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে অগাস্ট মাস থেকে আর স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা হচ্ছে না।

বিদ্যুৎ খাতের সাফল্য কি সরকারের জন্য 'বোঝা' হয়ে উঠেছে?

এই উচ্চমূল্য দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ তৈরি করে, কারণ এক্ষেত্রে মূল্য ডলারে পরিশোধ করতে হয়, এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়।

জ্বালানি উপদেষ্টার মন্তব্য নিয়ে আলোচনা

কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর করা মন্তব্য থেকে দেশের জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।

এ সপ্তাহেই ২৩শে অক্টোবর বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োজন করা শিল্পখাতে জ্বালানি সংকট সমাধান নামে এক আলোচনায় ব্যবসায়ীরা শিল্পে গ্যাসের সরবরাহ বাড়াতে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির পরামর্শ দেন।

সে পরামর্শ নাকচ করে মি. চৌধুরী বলেন, "প্রতি মাসে স্পট মার্কেট থেকে ২০০ এমএমসিএফডি (এলএনজির পরিমাপক ইউনিট) এলএনজি কিনতে ২০০ মিলিয়ন ডলার লাগবে। ছয় মাস এলএনজি কিনলে ব্যয় করতে হবে এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। কিন্তু আমাদের রিজার্ভের যে অবস্থা সেই জন্য আমরা এখন স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করার মতো রিস্ক (ঝুঁকি) নিতে পারব না।"

বিবিসির অন্যান্য খবর:

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক কীভাবে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হলেন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের যেসব ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে

সেন্ট মার্টিন দ্বীপে কোথা থেকে এলো 'ভূতুড়ে জাহাজ'?

সেসময় তিনি বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য 'প্রয়োজনে দিনের বেলা বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ' করার পরামর্শ দেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হলে সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এ নিয়ে বক্তব্য রেখে বলেছেন, 'সরকারের এমন পরিকল্পনা নেই'।

এদিকে, পেট্রোবাংলার ওয়েবসাইটে ২৫শে অক্টোবরের তথ্য বলছে, দেশে অন্তত ২৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন এখন বন্ধ আছে।

বাংলাদেশে শীর্ষস্থানীয় একটি সুগার রিফাইনারির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসিকে বলেছেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে তাদের উৎপাদন কমে গেছে। ফলে বাজারে সরবারহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, আর সে কারণেই দাম বেড়ে গেছে চিনির।

সাধারণ সময়ে দেশে দিনে ছয় হাজার টন চিনি বাজারে সরবারহ করা হত।

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, গত প্রায় দেড় মাস যাবৎ গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটে উৎপাদন কমে গেছে এবং এখন দিনে আড়াই হাজার টন চিনি পরিশোধন করে বাজারে ছাড়া হচ্ছে।

ফলে বাজারে সরবারহ কমে গেছে, আর সেই সুযোগে খুচরা পর্যায়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

অন্যান্য শিল্প কারখানাতেও উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, এবং ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণের জন্য আশু ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়েছে সরকারের কাছে।

English summary
Why Bangladesh government buy liquide Gas from spot Market
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X