করোনা গ্রাসে ভারত! সংক্রমণ ঠেকাতে কেন রাজ্য ভিত্তিক প্রতিরোধী কৌশলে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
করোনা গ্রাসে ভারত! সংক্রমণ ঠেকাতে কেন রাজ্য ভিত্তিক প্রতিরোধী কৌশলে জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের মধ্যে করোনার অন্যতম প্রধান ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে ভারত। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ লক্ষের গণ্ডিও পার করেছে। এই মারণ ভাইরাসের ধাক্কায় গত ৯ মাসে রীতিমত বিদ্ধস্ত দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা। এদিকে এতদিন পর্যন্ত করোনা প্রতিরোধে সমস্ত রাজ্যের ক্ষেত্রে একই নিয়ম কার্যকর হত। কিন্তু গত ৬ মাসে করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে একাধিক অবিজেপি রাজ্যগুলি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার আঙ্গুল তুলেছে। বর্তমানে এই কঠিন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আলাদা আলাদা রাজ্যের জন্য ভিন্ন ভিন্ন করোনা প্রতিরোধী কৌশল অবলম্বনের দাওয়াই বাতলাচ্ছেন গবেষকরা।
করোনার নতুন ভরকেন্দ্র ভারত
বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম প্রধান করোনা হটস্পট বলে চিহ্নিত হচ্ছে ভারত। গত ৩১শে আগস্ট ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩৬.৮৭ লক্ষ, কিন্তু বিগত ২১ দিনে নতুন করে আরও ২০ লক্ষ মানুষ করোনা শিকার হয়েছেন। তবে আশার কথা এই যে, সেপ্টেম্বরে করোনাকে হারিয়ে বাড়ি ফিরেছেন দেশের প্রায় ১৬.৫ লক্ষ মানুষ। যদিও সেরে ওঠার হার বাড়লেও প্রত্যহ প্রায় ৯০,০০০-এরও বেশি মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন ভারতে, যা যথেষ্টই দুশ্চিন্তার বলে মানছেন বিশেষজ্ঞরা।
শুধুমাত্র সোমবারই মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাসের পিছনে কি কারণ ?
জাতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্যানুযায়ী, ২১শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের ৪০ শতাংশই ছিল মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। যদিও ২১শে সেপ্টেম্বরেই মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত হন ১৬,০০০ জন। যা আগের থেকে তুলনামূলকভাবে কম বলে জানান সমীক্ষকরা। এদিকে বর্তমানে প্রত্যেক সোমবার মহারাষ্ট্রে কম করোনা আক্রান্তের রহস্যও ভেদ করেন গবেষকরা। রবিবার করোনা টেস্টের পরিমাণ কম হওয়াতেই অন্যদিনের থেকে সোমবার এই বৈষম্য চোখে পড়ছে বলে তাদের ধারণা।
অগাস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা
অগাস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে লাফিয়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা
চরম বিপদের মুখে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলি
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, জম্মু ও কাশ্মীর হোক বা ছত্তিশগড়, আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে সঠিকভাবে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো না থাকায় চরম সঙ্কটে সেই এলাকার বাসিন্দারা। তাছাড়া একই কারণে দেশের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে সক্রিয় আক্রান্তের ক্ষেত্রে প্রায় ১০০% বৃদ্ধি চোখে পড়েছে। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা বলছেন, সম্প্রতি বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের ন্যায় পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্তের সংখ্যায় সামান্য ভাটা চোখে পড়েছে। তবে তাঁদের মতে করোনা পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে রাজ্যগুলিতে।
করোনা প্রতিরোধী কৌশল গ্রহণে রাজ্যগুলিকে স্বাধীকার কেন্দ্রের
অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশ ও কর্ণাটকে আক্রান্তের সংখ্যায় উত্থান-পতন লেগেই আছে। গবেষকদের মতে, উত্তরপ্রদেশে জনসংখ্যা অধিক হলেও স্বাস্থ্য পরিকাঠামো অনুন্নত, অন্যদিকে কর্ণাটকে লোকসংখ্যা কম হলেও স্বাস্থ্যকাঠামো যথেষ্ট উন্নত। ফলে রাজ্য বিশেষে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা উচিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকমহলের মতে, বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষার হার, পরিবেশ, স্বাস্থ্যকাঠামো সবকিছুই আলাদা, ফলে নিয়ম বলবৎ করার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলির পরামর্শ কেন্দ্রের যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করা উচিত। এদিকে করোনা মোকাবিলায় গতি আনতে বুধবারই ৭ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মোদী।
সংসদে পরিযায়ী তরজা! লকডাউনে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছেন প্রায় ১ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক