কাঠের গুঁড়ি বয়ে নিয়ে আসত ১২ বছরের বালিকা, মণিপুরের ছোট্ট গ্রাম থেকে মীরাবাঈ চানুর উত্থান একনজরে
কাঠের গুঁড়ি বয়ে নিয়ে আসত ১২ বছরের বালিকা, মণিপুরের ছোট্ট গ্রাম থেকে মীরাবাঈ চানুর উত্থান একনজরে
মণিপুরের ছোট্ট গ্রাম নংপোক কাকচিংয়ের জন্ম মীরাবাঈ চানুর। পুরো নাম শাইকম মীরাবাঈ চানু। চোট্টবেলা থেকেই বেশি ভারী জিনিস তুলতে চাইতেন মীরা। মাত্র ১২ বছর বয়সে একটা আস্ত কাঠের গুঁড়ি তুলে নিয়ে এসেছিল বাড়িতে। তারপরেই বাবা-মা বুঝতে পারেন তাঁদের মেয়ে সাধারণ নন। শুরু হয় ভারোত্তলেন প্রশিক্ষণ। সেই থেকেই ভারত্তোলনে যাত্রা শুরু। টোকিও অলিম্পিকে ভারতের প্রথম মেডেল ঘরে তুললেন মনিপুরের মেয়ে।
মণিপুরের ছোট্ট গ্রামে জন্ম
মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের থেকে কিছু দূরেই ছোট্ট একটি গ্রাম নংপোক কাকচিংয়ে জন্ম শাইকম মীরাবাই চানুর। পাহাড়ি মেয়ে। প্রকৃতির কোলেই বেড়ে ওঠা। শৈশব থেকেই ডাকাবুকো মেয়ে ছিলেন মীরা। অন্য ভাইবোনেদের সঙ্গে দাপিয়ে বেরাত সে। অনায়াসেই ছোট্ট একটা মেয়ে জ্বালানি কাঠের বান্ডিল তুলে নিয়ে আসত। মাত্র ১২ বছর বয়স যখন তখন আস্ত একটা কাঠের গুঁড়ি তুলে এনেছিলেন তিনি তারপরেই বাবা মায়ের টনক নড়ে। তারপরেই শুরু হয় ভারত্তোলনের প্রশিক্ষণ।
ভারত্তোলনে যাত্রা শুরু
ভারত্তোলনে যাত্রা শুরু। ধাপে ধাপে রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে জাতীয় স্তরে উঠে আসেন তিনি। দেশের হয়ে প্রথম খেলতে গিয়েছিলেন রিও অলিম্পিকে। ২০১৬ সালে ব্রাজিলে রিও অলিম্পিকে ৪৮ কেজির বিভাগে অংশ নিয়েছিলেন মীরাবাঈ। কিন্তু সেসময় তিনি সাফল্য পান নি। তা বলে দমে যাননি মীরা। ঠিক তার পরের বছরেই ২০১৭ সালে আমেরিকার ওয়ার্ল্ড ওয়েট লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জয় করেন তিনি।
একের পর এক সাফল্য
ব্রাজিল রিও অলিম্পিকে যখনই সাফল্য পেতে না পারলেও থমকে যায়নি মীরার সাফল্য। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান,চিন, স্কটল্যান্ড সহ একাধিক দেশে ভারত্তোলন প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছেন মীরাবাঈ। সেই সাফল্যের ধারা বজায় রইল টোকিও অলিম্পিকেও। ভারতের হয়ে প্রথম মেডেল জিতলেন মীরা। চিনের প্রতিযোগীকে হারাতে না পারলেও দ্বিতীয় হয়েছেন তিনি। রুপো জিতেছেন মনিপুরের মেয়ে। এর আগে কমনওয়েলথ গেমসেও সোনা জিতেছেন মীরা। ২০১৪-র গ্লাসগো চ্যাম্পিয়নশিপে রুপো জিতেছিলেন মীরা।
Recommended Video
একের পর এক পুরস্কার
একের পর এক পুরস্কার হাতে পেয়েছেন মীরাবাঈ চানু। ভারত সরকারের কাছ থেকে রাজীব গান্ধী খেল রত্ন, পদ্মশ্রীও পেয়েছেন তিনি। টোকিও অলিম্পিকে সোনা জয়ের পরেই তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চানু যখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারোত্তলনে অংশ নিচ্ছেন তখন তাঁর গ্রামের বাড়িতে ছোট্ট একটা ঘরে তাঁর জয়ের জন্য প্রার্থনা করছিলেন প্রতিবেশীরা। টেলিভিশনের সামনে হাতজোড় করে বসে ছিল গোটা পরিবার। তাঁদের ঘরের মেয়ে যেন জিতে ফেরে এই সাফল্যের প্রার্থনা করছিলেন সকলে। মীরা কাউকে নিরাশ করেননি। ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি।