নীল পাগড়ি-নীল পোশাক, কোমরে তরোবারি, কারা এই 'নিহাং শিখ', নাম জড়িয়েছে সিঙ্ঘু হত্যাকাণ্ডে
নীল পাগড়ি-নীল পোশাক, কোমরে তরোবারি, কারা এই 'নিহাং শিখ', নাম জড়িয়েছে সিঙ্ঘু হত্যাকাণ্ডে
গভীর নীল পোশাক পরে থাকেন তাঁরা। মাথায় নীল রঙের বড় পাগড়ি। একমুখ দাঁড়ি। কোমরে রোবারি। তাইদের নিহাং শিখ বলা হয়ে থাকে। পাঞ্জাবের একাধিক জায়গায় এই নিহাং শিখদের দেখা যায়। গতকাল পাঞ্জাব-হরিয়ানার সীমানা সিঙ্ঘুতে দলিত নেতাকে হাত-পা কেটে হত্যা করা হয়েছিল। েসই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল এই নিহাং সিখদের। হত্যার দায় স্বীকার করে হরিয়ানা পুলিশের কােছ আত্মসমর্পণ করেছে িনহাং শিখ সম্প্রদায়ের নিহাং সরবজিত সিং।
কারা এই নিহাং শিখ
পাঞ্জাবের একাধিক জায়গায় দেখা যায় নিহাং শিখদের। তাঁকে পরণে থাকে গাঢ় নীল রঙের পোশাক। মাথায় থাকে বড় একটা নীল রঙের পাগড়ি। তাতে একাধিক ডিজাইন করা। আর কোমরে থাকে ধারাল তরোবারি এবং কৃপান। পাঞ্জাবের এক ঐতিহাসিক ডঃ বলবন্ত সিং দিল্লো জানিয়েছেন, সংস্কৃত শব্দ নিশাঙ্ক থেকে এসেছে নিহাং শব্দটি। যার অর্থ সাহসী যোদ্ধা। বা পবিত্র বীর যোদ্ধা। যাঁরা নির্ভিক। ১৬৯৯ সালে গুরু গোবিন্দ সিং খালসা অথবা তাঁর ছেলে ফতেহ সিংয়ের সময় থেকেইএই নিহাং শিখদের অস্তিত্ব তৈরি হয়েছিল। ১৬৯৯-১৭০৫ সাল থেকে এই নিহাং শিখদের অস্তিত্বের সন্ধান মেনে। ফতেহ সিং নিজে নীল পোশাক পরতেন এবং এভাবেই নীল রঙের বড় পাগড়ি পরতেন। তাঁর অনুগামীদের একাংশকেই এই নিহাং শিখ বলা হয়ে থাকে। এই নিয়ে অবশ্য একাধিক মতভেদ রয়েছে। নিহাংদের অস্তিত্বের উৎস এখনও স্বচ্ছ নয় গবেষকদের কাছে।
অন্য শিখদের থেকে এরা আলাদা কেন
নিহাং শিখরা অন্য শিখদের থেকে আলাদা। খালসা শিখরাও নীল রঙের পোশাক পরেন। নিহাং শিখরা খালসা নীতিমেনে চলেন কঠোর ভাবে। তাঁদের উপাসনা গৃহে নীল রঙের পতাকা লাগানো থাকে। গেরুয়া বসনের থেকে নীল রঙের বসনে বিশ্বাসী তাঁরা। তারা বারবার ছড়ডি খেলা স্লোগান দিয়ে থাকে । যার অর্থ ক্ষমা এবং নিজেদের উজ্জিবিত রাখ। নিহাংদের কাছে সব সময় অগ্নেয়াস্ত্র থাকে। তারা লোহার কড়া পরে থাকে এবং চামড়ার জুতো পরে থাকে। জুতোয় ধারালো ধাতুর কোনা থাকে যেটাকে তারা অস্ত্র হিেসবে ব্যবহার করতে পারে। নিহাং শিখদের আরেকটি বড় বিশেষত্ব হল এরা মাথার থেকে বড় পাগড়ি পরে থাকে।
একাধিক অভিযোগ নিহাং শিখদের বিরুদ্ধে
নিহাং শিখদের উগ্র আচরণের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল পাতিয়ালায় সবজি মন্ডিতে বেপরোয়া ভাবে ব্যারিকেড ভেঙে গাড়ি চালানোর অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। কার্ফু ভেেঙ এএসআইয়ের হাত কেটে দিয়েছিল তারা। সানুর শহরে গুরুদ্বারে গুলি চালিয়েছিল তারা। তার মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েিছল। জুন মাসেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মূর্তিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল নিহাং শিখরা।
কৃষকদের সমর্থন
সম্প্রতি পাঞ্জাবের কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে নিহাং শিখরা। সিঙ্ঘু সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের সমর্থন জানাতে সেখানে রয়েছে তারা। সেখানে শিখ সম্প্রদায়ের একাধিক ভাগ রয়েছে। সিঙ্ঘু সীমান্তে দলিত শ্রমিক হত্যার ঘটনায় এই নিহাংদের হাত রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। নৃশংস ভাবে হাত পা কেটে দলিত শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে।