বিহার ভোটে মোড় ঘোরাতে পারে কোন পাঁচটি ইস্যু? ফের ক্ষমতায় নীতীশ? কি বলছে আরজেডি শিবির
বিহার ভোটে মোড় ঘোরাতে পারে কোন পাঁচটি ইস্যু ? ফের ক্ষমতায় নীতিশ ? কি বলছে আরজেডি শিবির
দিন যত গড়াচ্ছে করোনা আবহের মাঝেই চড়ছে বিহার নির্বাচনের পারদ। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে পূর্ববর্তী নির্ঘণ্ট মেনে অক্টোবরেই হচ্ছে বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। এদিকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা সেপ্টেম্বর অক্টোবর নাগাদই বিহারে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে করোনা ভাইরাস। সঙ্গে বর্তমানে চলছে বন্যার ফাঁড়া এমতাবস্থায় যথেষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা কাজ করছে নীতীশের রাজ্যে।
ষষ্ঠবারের মুখ্যমন্ত্রীত্বের দৌড়ে নীতিশ কুমার
ইতিমধ্যেই গোটা বিহারে ৮৬ হাজারের বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। মারা গেছেন সাড়ে চারশোর বেশি মানুষ। এমতাবস্থায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনই একাধিকবার প্রশ্ন চিহ্নের মুখে পড়ে। এদিকে এর আগে পাঁচবারের জন্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব সামলেছেন জনতা দল(ইউনাইটেড) প্রধান নীতিশ কুমার। এবার চলতি বছরের নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রীয় জনতা দল(আরজেডি) শিবির থেকে লালু পুত্র তেজস্বী যাদব।
কেমন ছিল লালু-নীতিশ রসায়ন ?
এদিকে ৯০-র দশকে পাকাপাকি ছাড়াছাড়ির আগে দু-দশকের বেশি সময় বিহারের রাজনৈতিক মানচিত্রে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একযোগে নিজেদের জায়গা পাকা করেছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব ও নীতিশ কুমার। এদিকে ২০১৫- নির্বাচনে পুরনো বন্ধুত্বের পালে ফের কিছুটা হাওয়া লাগে। সেই সময় ফের তৈরি হয় জোট সরকার। লালু পুত্র তেজস্বী যাদব হন বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী। পরবর্তীতে পদ্ম কাঁটায় ফের বিদ্ধ হন লালুপ্রসাদ। ফের এনডিএ শিবিরে যোগ দেন নীতিশ কুমার।
সবচেয়ে কম করোনা পরীক্ষা বিহারেই
এদিকে নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে বিভিন্ন ইস্যুতে ততই ঘনাচ্ছে আশঙ্কার মেঘ। এদিকে দেশের অন্যতম করোনা হট-স্পষ্ট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে বিহার। দেশের মোট করোনা বিধ্বস্ত রাজ্য গুলির তালিকায় বর্তমানে ৬ নম্বরে রয়েছে নীতিশের রাজ্য। যদিও বিশেষজ্ঞদের ধারণা বিহারের বর্তমান করোনা পরিসংখ্যান যা বলছে তার থেকে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। কারণেই গোটা দেশের মধ্যে এখনও পর্যন্ত বিহারেই সবচেয়ে কম করোনা পরীক্ষা হয়েছে।
বন্যার চিত্র বদলায়নি নীতিশ আমলেও
করোনা কাঁটার মধ্যেই চলতি মাসে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে বিহারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মতে এবারের বন্যায় ১৬টি জেলার ১২৩২টি পঞ্চায়েতের মানুষ ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যদিও বন্যা বিহারের মানুষের কাছে নতুন নয়। কিন্তু একাধিক নির্বাচনী প্রচারে লালু-রাবরির ১৫ বছরের শাসনকালের সঙ্গে নিজের সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের তুলনা টানেন নীতিশ। কিন্তু সেখানেও যে বন্যার হাত থেকে রাজ্যে মানুষ রেহাই পেয়েছেন বা বন্যা ঠেকাতে উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে তা বলা যায় না।
পথে কাঁটা হতে পারে পরিযায়ী সঙ্কটও
এদিকে বিহারের পরিযায়ী শ্রমিকের সমস্যাও দীর্ঘদিনের। যাও এইবারের নির্বাচনে এক বড়সড় ছাপ ফেলতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। লাদাখ থেকে কেরল, মনিপুর থেকে গুজরাট সর্বত্রই বিহারী পরিযায়ী শ্রমিকদের দেখা মেলে। রাজ্যে পর্যাপ্ত কাজেরল ঘাটতি থেকেই শ্রমিকের জন্য অন্য রাজ্য ছুটে যান প্রতি বছর। যদিও রাজ্যে যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরির বিষয়ে নীতিশ প্রশাসনও যে বিশেষ সুবিধা করতে পেরেছে তা বলা যায় না। পাশাপাশি করোনা লকডাউনে এই রাজ্যের পরিযায়ী সঙ্কটও চরমে ওঠে।
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো
এদিকে করোনা চিকিৎসার পর্যাপ্ত পরিকাঠামোর ক্ষেত্রেও একাধিকবার আঙুল উঠেছে বিহারের বিরুদ্ধে। করোনা চিকিত্সার ক্ষেত্রে দেশের সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ প্রতি ২০ জেলার মধ্যে ৮টি বিহারের বলে জানা যাচ্চে। পাশাপাশি বর্তমানে বিহারে প্রতি ১০০০ জন ব্যাক্তি পিছু ০.১১টি বেড আছে বলে জানা যাচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি হাজারে বিহারে বর্তমানে ০.৩৯ জন ডাক্তারও রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
চিন্তা বাড়াচ্ছে বেকারত্বের সমস্যা
পরিযায়ী সঙ্কটের পাশাপাশি গোটা রাজ্যের সামগ্রিক বেকারত্বের কারণেও প্রত্যহ উদ্বেগ বাড়ছে। যার ছাপও পড়তে চলেছে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে। নীতিশ সরকারের আমলেও বেকারত্বের পরিমাণ বহুগুণ বেড়েছে বলে একাধিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে। জুনে প্রকাশিত সিএমআইই-র রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে জাতীয় বেকারত্বের গড়ের থেকেও বর্তমানে বিহারের বেকারত্বের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ।
বিজেপির আরও এক সাংসদের তৃণমূল যোগের জল্পনা, একুশের আগে চর্চা দলবদলের