দোষ ঢাকতে অ্যান্টিগার নাগরিকত্বই ঢাল! কোন আইনি জটেই আটকে মেহুল চোকসির প্রত্যর্পণ?
দোষ ঢাকতে অ্যান্টিগার নাগরিকত্বই ঢাল! কোন আইনি জটেই আটকে মেহুল চোকসির প্রত্যর্পণ?
তিন বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও এখনও চলছে টানাপোড়েন। এদিকে ২০১৮ সালে অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছিলেন পলাতক এই হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসি। আর সেই জালেই আটকে তার ভারতে প্রত্যর্পণের বিষয়টি। বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা চান যেভাবেই হোক ১৩ হাজার কোটি পিএনবি ব্যাঙ্ক আর্থিক তছরূপের মামলায় অভিযুক্ত মেহুলকে দেশে ফেরাতে।
অ্যান্টিগায় আট জনের বিশেষ দল পাঠিয়েছে ভারত
ইতিমধ্যেই মেহুলকে ভারতে ফিরিয়ে আনার জন্য অ্যান্টিগায় আট জনের বিশেষ দল পাঠিয়েছে ভারত৷ বিশেষ চার্টার্ড বিমানে দিল্লি থেকে বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা গিয়েছে ডমিনিকা রিপাবলিকে। তাঁদের সফরসঙ্গী হয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। অন্যদিকে মেহুলের ভারতের প্রত্যর্পণ ঠেকাতে কোমড় বেঁধে নেমেছেন তাঁর আইনজীবী। দ্বারস্থ হয়েছেন সেদেশের সুপ্রিম কোর্টেরও।
মেহুলকে ফেরানোর পক্ষেই সওয়াল অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রীর
আজই সেখানে মেহুল মামালার শুনানিরও কথা ছিল বলে জানা যাচ্ছে। তবে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চোকসিকে ডমিনিকা থেকে অন্য কোনও দেশে পাঠানোর উপরে স্থগিতাদেশও জারি করেছে সেদেশের আদালত৷ যদিও অ্যান্টিগার প্রধানমন্ত্রী গ্যাস্টিন ব্রাউন জানিয়েছেন, তাঁর দেশে কোনও পলাতক অভিযুক্তের জায়গা নেই। কিন্তু তারপরেও আইনি জালেই জড়িয়ে গোটা বিষয়।
কী দাবি করছেন মেহুলের আইনজীবী ?
মেহুলের আইনজীবী বিজয় আগরওয়ালের দাবি, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে চোকসি অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব পেয়েছেন৷ ফলে সেই সময় থেকেই তিনি আর ভারতীয় নাগরিক নন। কারণ ভারতের নাগরিকত্ব আইনে স্পষ্ট বলা রয়েছে এদেশে কোনোভাবেই ডুয়াল নাগরিকত্ব স্বীকৃতি নয়। এমনকী এর জন্য ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনের ৯ নম্বর অনুচ্ছেদকেও ঢাল করছেন তিনি।
কেন ভারতীয় আইন বলে দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন মেহুল চোকসি ?
তবে যদিও নাগরিকত্ব বাতিলের এই ব্যাখ্যার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকটি শর্ত আছে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। অন্যদিকে ভারতীয় আইনজীবীরা স্পষ্ট বলছেন নাগরিকত্ব আইনের ৯ নম্বর অনুচ্ছেদের ২ নম্বর উপধারায় এটাও বলা আছে, ফৌজদারী মামলা চলছে এমন কোনও ব্যক্তি যদি অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ব্যাখ্যা দিতে হবে। তাতে সরকার সন্তুষ্ট হলে তবেই সে অন্য কোনও দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবে।
অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব সংবিধান সিদ্ধ নয়
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নীরব মোদি এবং মেহুল চোকসি দু' জনেই ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ভারত থেকে পালিয়ে যান। ভুয়ো নথি দেখিয়ে ১৩,৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে তারপর থেকেই দুজনের নামে একের পর এক মামলা দায়ের হতে থাকে। তাই মেহুলের অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব আইন সিদ্ধ নয়। বর্তমানে এই জটিলতার মধ্যে মেহুল চোকসি প্রত্যর্পণের জল কতদূর গড়ায় এখন সেটাই দেখার।