কী বিষাক্ত গ্যাস ছড়াচ্ছে বিশাখাপত্তনমের কারখানা থেকে? কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে এই গ্যাস থেকে
কী বিষাক্ত গ্যাস ছড়াচ্ছে বিশাখাপত্তনমের কারখানা থেকে? কী ভয়ঙ্কর পরিণতি হতে পারে এই গ্যাস থেকে
বিশাখাপত্তনমে এলজি-র কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস লিক করে মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। হাসপাতালে অসুস্থ হয়ে ভর্তি হাজার খানেক মানুষ। কারখানার সংলগ্ন এলাকা খালি করে দেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘ লকডাউনে দুটি ৫ টনের গ্যাসের ট্যাঙ্কারের রক্ষনাবেক্ষন না হওয়ার কারণেই গ্যাস লিক করতে শুরু করে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা বািহনী। পুরো ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছে ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডির কথা। ভাইজ্যাকের কারখানা থেকে নির্গত গ্যাস আসলে কী। এর নাম স্টাইরিন গ্যাস।
স্টাইরিন গ্যাস কী
বিশাখাপত্তনমে এলজির কারখানা থেকে নির্গত এই স্টাইরিন গ্যাস ইথেনাইলবেনজিন, ভিনাইলবেনজিন এবং ফেনিলিথেন নামেও পরিিচত। C6H5CH=CH2 এই ফরমুলার রাসায়নিক উপাদানে তৈরি গ্যাসটি। এর কোনও রং নেই স্বচ্ছ একটু হলদেটে ভাব আছে। তরল হলে তৈলাক্ত দেখতে হয়। সহজেই বাতাসে মিশতে পারে। এর গন্ধ মিষ্টি হয়। তবে সুগন্ধি বলা যাবে না।
কী হতে পারে এই গ্যাসের প্রভাবে
এই স্টাইরিন গ্যাসের নিঃশ্বাসের সঙ্গে মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে দুই মেয়াদি প্রভাব পড়ে। একটি দীর্ঘ মেয়াদী এবং অন্যটি স্বল্প মেয়াদী বা তাৎক্ষনিক। তাৎক্ষনিক প্রভাবে চোখ এবং নাক জ্বালা করতে শুরু করে। গায়ে চুলকানি শুরু হয়। তার সঙ্গে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
দীর্ঘ মেয়াদি প্রভাব
এই গ্যাস শরীরে প্রবেশ করলে যে দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব দেখা দেয় সেচা হল মাথা ধরা, অবসাদ, দুর্বলতা,অবসন্নতা, কানে শুনতে না পাওয়া। শরীরের ভারসাম্য হারানো, মনসংযোগে ঘাটতি এবং সবচেয়ে মারাত্মক যে ক্ষতিটা হবে সেটা ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া। এই মুহূর্তে যাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা এর শিকার অনায়াসেই হতে পারেন।
কী হবে চিকিৎসা
এই গ্যাসের প্রভাবে আসলে একটি মাত্র উপায় রয়েছে চিকিৎসার সেটা হল সঙ্গে সঙ্গে শরীরে এবং চোখ, নাক, মুখ ভাল করে জল সাবান দিয়ে পরিষ্কার করা। শ্বাসকষ্ট হলে অক্সিজেন নেওয়া। সেকারণেই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশাখাপত্তনমের কারখানা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের মুখে এবং নাকে ঠান্ডা জলে ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে বলছে পুলিস। এতে কিছুটা হলেও এই গ্যাসের মারাত্মক প্রভাব থেকে বাঁচা যাবে।
কী কাজে ব্যবহার হয় এই গ্যাস
স্টাইরিন গ্যাস ভীষণভাবে দাহ্য। এটা সাধারণত পলিস্ট্রিন প্লাস্টিক, ফাইবার গ্লাস, রাবার, লেটেক্স তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও পাইপ, অটোমোবাইল পার্টস, প্রিন্টিংয়ের কালি, ফুড কন্টেনার তৈরি, প্যাকেজিং, জুতো, খেলনা, মেঝে পালিসের রাসায়নিক তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। সিগারেটের ধোঁয়া এবং গাড়ির ধোঁয়াদেও এই গ্যাস পাওয়া যায়।
প্রতীকী ছবি