অনুমতি ছাড়া রাজ্যে তদন্ত নয়, সিবিআইয়ের সাধারণ সম্মতি আসলে কী এবার তা জেনে নিন
কংগ্রেস শাসিত রাজ্য ঝাড়খণ্ড বৃহস্পতিবারই রাজ্যে সিবিআই তদন্তে সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র ও কেরল সহ অন্যান্য বেশ কিছু রাজ্য একই পথে হেঁটেছে এবং সিবিআইয়ের সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করেছে।
ঝাড়খণ্ড সরকারের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, '১৯৯৬ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বিহার সরকার সিবিআইকে এই ক্ষমতা দিয়েছিল। ১৯৯৯ সালে ঝাড়খণ্ড আলাদা রাজ্য হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। এই রাজ্যে বর্তমানে জোট সরকারের শাসন চলছে যার নেতৃত্বে রয়েছেন হেমন্ত সোরেন, যিনি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা, যারা কংগ্রেস ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন।’ এখন অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন যে এই সাধারণ সম্মতি কী? কতগুলি রাজ্য এটি প্রত্যাহার করেছে? এর পেছনের ইতিহাস এবং কোন বিরোধী রাজ্য এখনও এটি প্রত্যাহার করেনি? সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া হল এখানে।

সাধারণ সম্মতি কী
সিবিআই দিল্লির বিশেষ পুলিশ প্রতিষ্ঠা আইন দ্বারা পরিচালিত। এই আইন সিবিআইকে দিল্লি পুলিশের একটি বিশেষ শাখায় পরিণত করেছে এবং এর আসল এখতিয়ারটি দিল্লির মধ্যে সীমাবদ্ধ। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্র সরকারের কর্মীদের তদন্তের জন্য সরকারের অনুমতি ছাড়াই সিবিআইয়ের এখতিয়ার বাড়িয়ে দিয়েছে। অন্যান্য ক্ষেত্রে, সিবিআইকে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে তদন্তের জন্য কারণ এই সরকারের এলাকায় ঘটনা ঘটেছে, তারপরই সিবিআই তদন্ত করতে পারে। তবে অন্যান্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএর ক্ষেত্রে এটি বিপরীত, তাদের সারা ভারত জুড়ে এখতিয়ার রয়েছে তদন্ত করার।

কী বলছে সিবিআই আইন
ডিপিএসই আইনের ৬ ধারায় কেন্দ্র সরকার সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে যে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সুপারিশে যে কোনও রাজ্যের এখতিয়ারের মধ্যে মামলার তদন্ত করতে পারে সিবিআই। এমনকী আদালতও সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে এবং তার তদন্তের পর্যবেক্ষণ করতে পারে। সিবিআইয়ের নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্র সরকার সিবিআইকে পরিচালনা করতে পারে এবং কোনও রাজ্যে অপরাধ হলে তার তদন্তের দায়িত্ব দিতে পারে। এর পাশাপাশি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টও সিবিআইকে এই আদেশ দিতে পারে এবং তা সরকারের অনুমতি ব্যাতীত।

সিবিআইয়ের জন্য কত ধরনের সম্মতি রয়েছে
দু'ধরনের সম্মতি রয়েছে সিবিআইয়ের ক্ষেত্রে। একটি হল সাধারণ ও দ্বিতীয়টি হল নির্দিষ্ট। রাজ্য যখন কোনও মামলার তদন্তের জন্য সিবিআইকে সাধারণ সম্মতি প্রদান করল, এর অর্থ সিবিআই যখনই সে রাজ্যে প্রবেশ করবে তদন্তের খাতিরে তাকে সর্বদা অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
এবার যখন সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হল, তখন সিবিআইকে প্রত্যেক মামলার তদন্তের জন্য অনুমতি নিতে হবে সংশ্লীষ্ট রাজ্য সরকারে কাছ থেকে। যদি নির্দিষ্ট সম্মতি না পাওয়া যায়, তবে সিবিআইয়ের আর কোনও ক্ষমতা থাকবে না।

কোন কোন রাজ্য সিবিআইয়ের সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করেছে
কমপক্ষে সাতটি রাজ্য এখনও পর্যন্ত সিবিআইয়ের সাধারণ সম্মতি প্রত্যাহার করেছে। এই রাজষগুলি হল মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, কেরল এবং ঝাড়খণ্ড। মিজোরাম বাদে প্রত্যেকটি রাজ্যেই বিরোধী দলের শাসন চলছে। মিজোরামের মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট সরকার এনডিএর অংশ হলেও তারা বিজেপির বিরোধিতা করে। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে কেন্দ্র সরকার জানিয়েছিল যে ত্রিপুরায় তদন্তের জন্য সিবিআইকে সাধারণ সম্মতি দেওয়া হয়নি। যদিও বিভিন্ন রাজ্যে তল্লাশি চালানোর সময় সিবিআই ত্রিপুরাতেও তল্লাশি চালায়, যেখানে বিজেপি সরকার রয়েছে।

পেঁয়াজের কালোবাজারি রুখতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার