ছোট রাজ্য হয়েও পর্যটন, যুবকল্যাণে কীভাবে বাংলাকে পথ দেখাতে পারে ওড়িশা!
ছোট রাজ্য হয়েও পর্যটন, যুবকল্যাণে কীভাবে বাংলাকে পথ দেখাতে পারে ওড়িশা!
বাংলার বাজেট বরাদ্দ যেকোনও খাতেই ওড়িশা সরকারের থেকে অনেকটাই বেশি। আয়তনে, বহরে ও জনসংখ্যায় ওড়িশার থেকে অনেকটাই বড় বাংলা। তবে ওড়িশার পর্যটন, যুবকল্যাণ অথবা ক্রীড়াক্ষেত্রে যে ধরনের পরিকল্পনা রূপায়ণ করার চেষ্টা করছে সেরাজ্যের সরকার, তা বাংলা সহ অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রে মডেল হয়ে উঠতে পারে। আগামী বছর বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে বারবারই বাংলার সরকারকে কাটমানি, ঘুষ থেকে শুরু করে নানা দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ফলে ওড়িশা মডেল কিন্তু অনেক কিছু শেখাতে পারে।
দেশের জাতীয় গড় অর্থনীতি তথা বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার মধ্যে দিয়ে গেলেও ওড়িশার অর্থনীতি দেশের গড় জিডিপির থেকে বেশ কিছুটা ওপরে। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে তা ছিল ৬.১৬ শতাংশ। এবছর তা ৭-৭.৫ শতাংশ পার করে ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। দেড় লক্ষ কোটি টাকার বাজেটে পর্যটন, যুব কল্যাণ ও খেলাধুলোর ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে যা অবশ্যই লক্ষণীয় বিষয়।
মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের ৫টি 'টি' মন্ত্র এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই পাঁচটি 'টি' হল - টিমওয়ার্ক, টেকনোলজি, ট্রান্সপারেন্সি, ট্রান্সফর্মেশন এবং টাইম লিমিট। ওড়িশা সরকারের চালনার ভাবনাকে আমূল বদলে দিতে এটি রূপায়ণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক।
ছোট রাজ্য হলেও এখানকার পর্যটনকেন্দ্রগুলিকে যেভাবে বিশ্ব পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে সাজানো হয়েছে, তা বাংলার কাছে শিক্ষণীয় হতে পারে। পুরী ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সিটি এবং আরও উন্নতি কল্পে মোটা অঙ্কের বাজেট বরাদ্দ করেছে। যা টাকার অঙ্কে ৩২০৮ কোটি টাকা। এছাড়াও এখানকার বিখ্যাত লিঙ্গরাজ মন্দির, সমলেশ্বরী মন্দির, হিরাকুদ বাঁধ, ভিতরকণিকা, তালসারি-সহ বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্রের জন্য টাকা বরাদ্দ করেছে সরকার। বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বরিষ্ঠ নাগরিক তীর্থযাত্রা প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে।
এছাড়াও যুবকদের জন্য ভুবনেশ্বরে ওয়ার্ল্ড স্কিলস সেন্টার তৈরি করা হচ্ছে। পর্যটনের ক্ষেত্রে ওড়িশাকে বিশ্ব মানচিত্রে তুলে ধরতে বড় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেরাজ্যের সরকার।
এবছর ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ বাড়িয়ে ৩০১ কোটি টাকা করা হয়েছে যা আগের যেকোনও বাজেট বরাদ্দ থেকে অনেকটাই বেশি। স্কিল ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে ১৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল, পলিটেকনিক ও আইটিআই-এর পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে।
সবমিলিয়ে নবীন পট্টনায়ক সরকার দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন চালানোর যে অঙ্গীকার নিয়ে পথে নেমেছে, সেটা যে কোনও রাজ্যের ক্ষেত্রেই শিক্ষণীয় মডেল হতে পারে।