'রয়াল ওয়েডিং'-এর আগেই রাজকীয় বিয়ে! জানেন তেজপ্রতাপের বিয়েতে কী করলেন লালু-নীতিশ
শনিবার পাটনায় বিপুল আয়োজনে সম্পন্ন হল আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবের পুত্র তেজপ্রতাপ ও বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দারোগা প্রসাদ রাইয়ের নাতনি ঐশ্বর্য রাইয়ের বিয়ে।
'রয়াল ওয়েডিং' অর্থাৎ ইংল্যান্ডের রাজপুত্রের বিয়ে এখনও এক সপ্তাহ দূরে। কিন্তু এই বিয়েই বা কম কি? কী ছিল না এই বিয়েতে! প্রায় ৫০ টি হাতি-ঘোড়া, আদিবাসী বাজনদারদের বিশাল দল, আর কিছু না হলেও ৭ হাজারের বেশি অতিথি। শনিবার পাটনায় এই বিপুল আয়োজনেই সম্পন্ন হল আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবের পুত্র তেজপ্রতাপ ও বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দারোগা প্রসাদ রাইয়ের নাতনি ঐশ্বর্য রাইয়ের বিয়ে।
গত বৃহস্পতিবার এই বিয়ে উপলক্ষ্যে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত লালুপ্রসাদকে তিনদিনের প্যারোলে মুক্তি দিয়েছিল আদালত। তার পরদিনই লালুর ছুটির মেয়াদ বেড়ে হয় তিন সপ্তাহ। স্বাস্থের কারণে তাঁকে অস্থায়ী জামিন দেওয়া হয়। আর এই ঘটনাতেই এক লহমায় তাঁর মন জিতে নিয়েছেন নতুন বউমা ঐশ্বর্য। লালু মনে করছেন, পরিবারে তিনি সত্যি সত্যিই 'ঐশ্বর্য' আনবেন। সেকথা নাকি জামিন পাওয়ার দিনই তিনি ঐশ্বর্যকে ফোন করে বলেন, 'তুমি আমাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত শুভ এবং সৌভাগ্য বয়ে আনবে। আমাদের পরিবারে তুমি ঢুকতে না ঢুকতেই দেখ আবার সবকিছু ঠিকঠাক হতে শুরু করেছে।
লালু যতই দুর্নীতিগ্রস্ত হোন না কেন ভারতের রাজনীতিতে তাঁর জনপ্রিয়তাকে অস্বীকার করা যায় না। পরিবারের বড় ছেলের বিয়ে উপলক্ষ্যে তাঁদের বাড়িতে এদিন চাঁদের হাট বসেছিল। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক তারকাকেই তাঁরা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে কেউকেটাদের অভাব ছিল না। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব, বর্ষিয়ান কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিং, এনসিপি নেতা প্রফুল্ল প্যাটেল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান, বিক্ষুব্ধ বিজেপি সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, শরদ যাদব কে ছিলেন না সেই তালিকায়।
তবে সবচেয়ে কৌতূহল ছিল মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারকে নিয়ে। গতবছর জোট ভেঙেছে। নীতিশ লালুদের পাশ ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন এনডিএ-তে। শুভদিনে অবশ্য লালু ও নীতিশকে হাসি ঠাট্টায় মেতে থাকতেই দেখা গিয়েছে।
অবশ্য আসেননি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। ছিলেন না প্রিয়াঙ্কাও। বিজেপি বিরোধী শিবিড় ধরে রাখতে তাঁরা অনুষ্ঠানে থাকবেন বলেই মনে করা হয়েছিল।
তবে লালুর অনুষ্ঠানে কোনও বিশৃঙ্খলা তারি হবে না, তাই বা কি করে হয়? তেজপ্রতাপ ও ঐশ্বর্যর মালা বদলের পরই একদল আরজেডি সমর্থক বিয়েবাড়ির বেড়া ভেঙে ভেতরা ঢুকে পড়ে। খাবার দাবারের এপর হামলে পড়ে তারা। খাওয়ার ছড়িয়ে, বাসনপত্র ভেঙে, চেয়ার-টেবিল উল্টে বিশ্রী পরিস্থিতি তৈরি হয়। দলের নেতারা লাঠি হাতে তাড়া করে তাদের বের করেন। তবে পালাবার আগে তারা বেশ কিছু বাসন চুরি করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে লালুর পরিবার প্রায় ৩ হাজার আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিলেন। যদিও বিয়েতে অন্তত ১০ হাজার অতিথির আপ্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। বিহারের অলিখিত রাজা লালুর ছেলের বিয়ে বলে কথা! রাজপুত্রের বিয়েতে এরকম জাঁক না থাকলে চলে?