হিন্দু–মুসলিম বিয়ে, বিয়ের কার্ড ভাইরাল নেট দুনিয়ায়, ‘লাভ জিহাদ’–এর চাপে পড়ে বাতিল অনুষ্ঠান
হিন্দু–মুসলিম বিয়ে, বিয়ের কার্ড ভাইরাল নেট দুনিয়ায়, ‘লাভ জিহাদ’–এর চাপে পড়ে বাতিল অনুষ্ঠান
বিয়ের কার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওযার পর মহারাষ্ট্রের নাসিকের একটি হোটেলে ১৮ জুলাই নির্ধারিত হওয়া বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হল। এক হিন্দু মেয়ের সঙ্গে মুসলিম ছেলের বিয়ের জন্য অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরপরই এই কার্ডটি সোশ্যাল মিইয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় এবং নেটিজেনরা একে 'লাভ জিহাদ’–এর তকমা দেয়। এই বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার চাপের মুখে পড়ে পাত্রীর বাবা প্রসাদ আদগাওঙ্কর তাঁর সম্প্রদায়কে ১০ জুলাই চিঠি লিখে এই বিয়ে বাতিল করে দেওয়ার খবর জানায়। ওই এলাকার প্রসিদ্ধ গহনা ব্যবসায়ী বলে পরিচিত প্রসাদ আদগাওঙ্কর।
হিন্দু–মুসলিম বিয়ে
২৮ বছরের রাশিকার সঙ্গে তাঁর স্কুলের বন্ধু আসিফ খানের হিন্দু রীতি মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তাঁরা স্থানীয় আদালতে ইতিমধ্যেই আইনিভাবে বিয়ে সেরে নিয়েছেন। তবে রাশিকার বাবা প্রসাদ আদগাওঙ্কর চেয়েছিলেন যে তাঁর মেয়ে হিন্দু রীতি মেনে বিয়ে করুক এবং তাই স্থানীয় হোটেলে বিয়ের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁর ঘনিষ্ঠ কিছু পরিবারের সদস্য এই বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন এবং বরের পরিবাররে পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনও আপত্তিও ছিল না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ
তবে বিয়ের কার্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই নেটিজেনরা এই দুই ধর্মের বিয়ে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে শুরু করে দেন। একজন লেখেন যে এই ধরনের প্রচার অন্য কোনও মেয়েকে একই কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। আদগাওঙ্কারের কাছেও একের পর এক এই বিয়ে বাতিল করার জন্য ফোন আসতে শুরু করে দেয়। পাত্রার বাবার সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনার জন্য বৈঠক ডাকা হয় সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে। খুব শীঘ্রই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয় যে পাত্রীর পরিবার এই অনুষ্ঠান বন্ধের জন্য রাজি হয়েছেন। এমনকী আদগাওঙ্কার নাসিকের লাড সুবর্ণকর সংস্থার সভাপতি সুনীল মহলকারকে চিঠি লিখে জানান যে এই পরিস্থিতিতে তিনি বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করছেন।
বিয়ে নিয়ে অমত ছিল না দুই পরিবারের
মহলকার বলেন, 'আদগাওঙ্কার কমিউনিটিকে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে এই বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। আমরা আইনি বিয়ে সম্পর্কে অবগত নই, তবে অনুষ্ঠান বাতিলের নিশ্চিতকরণ চিঠি রয়েছে। এটা তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয়, কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।' আদগাওঙ্কার তাঁর সম্প্রদায়কে জানিয়েছেন যে তাঁর মেয়ে বিশেষভাবে সক্ষম। রাশিকা ও আসিফ খান তাঁরা নিজেদের পরিবারকে জানিয়েছিলেন যে তাঁরা বিয়ে করতে চান। যেহেতু দুই পরিবারের মধ্যে কয়েক বছর ধরে পরিচিতি রয়েছে তাই তাঁরা রাজি হয়ে যান।
পুলিশে অভিযোগ হয়নি
এই ঘটনা নিয়ে আদগাওঙ্কারের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কোনও পক্ষই এ বিষয়ে পুলিশকে জানায়নি।