পিকে সেই দলেরই দায়িত্ব নেন জয়ের দৌড়ে এগিয়ে থাকে যারা! ট্র্যাক-রেকর্ড একনজরে
পিকে সেই দলেরই দায়িত্ব নেন যারা জয়ের দৌড়ে এগিয়ে থাকে! একনজরে ট্র্যাক-রেকর্ড
নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়েই নীতীশ কুমারের সঙ্গে সংঘাত শুরু। তারপর সেই সংঘাত গড়িয়েছে বিচ্ছেদে। দিল্লি নির্বাচনের ঠিক আগেই প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে নীতীশ কুমারের সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। এরপরই তিনি ডিএমকের ভোট কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি ইতিমধ্যেই কাজ করছেন বাংলায় তৃণমূল আর দিল্লিতে আম আদমি পার্টির হয়ে।
প্রশ্নে প্রশান্ত কিশোরের ক্যারিশ্মা
এবার তামিলনাড়ুতে ডিএমকের হয়ে আসন্ন নির্বাচনে কাজ করার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পরই প্রশ্ন উঠে পড়েছে প্রশান্ত কিশোরের ক্যারিশ্মা নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে সত্যিই কি প্রশান্ত কিশোরের কৌশল ভোট-যুদ্ধে জিততে সহায়তা করে রাজনৈতিক দলগুলিকে? নাকি এটা নিছকই তেলা মাথায় তেল দেওয়ার ঘটনা।
প্রশান্ত কিশোরের কৌশল নিরুপণের নেপথ্যে
রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের অভিমত প্রশান্ত কিশোরের কৌশল নিরুপণের উপর জয়-পরাজয় নির্ভর করার নেপথ্যে কোন ভর নেই, ভিত্তিও নেই। আসলে প্রশান্ত কিশোরের আলাদা কোনও শক্তি নেই। ট্র্যাক রেকর্ড দেখলেই বোঝা যাবে যে দল জেতার মতো জায়গায় রয়েছে, সেইদলের হয়েই দায়িত্ব নিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর।
গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে শুরু
গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতায় ফেরানো থেকে সূত্রপাত প্রশান্ত কিশোরের পথ চলা। তিনি কৌশল নির্ধারণকে একটা শিল্পের মর্যাদায় নিয়ে গিয়েছেন, তা যে মডেলে পরিণত হতে পারে, সেই অমূল্য প্রচার তিনি পেয়েছেন ২০১৪ সালে বিজেপির হয়ে লোকসভায় বিরাট বিজয় এনে দেওয়ার পরে।
সাফল্য অমরিন্দর-জগনমোহনের
তারপর তিনি একে একে সাফল্যে এনে দিয়েছেন অমরিন্দর সিং, জগন্মোহন রেড্ডিদের। তিনি সাসক জেডিইউয়ের সহ সভাপতি পদে ছিলেন। এখন আবার দায়িত্ব নিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি এবং ডিএমকের। উল্লেখ্য, তিন রাজনৈতিক গলই স্ব-স্ব রাজ্যে শক্তিশালী। তাঁদের জেতার সম্ভাবনাই বেশি।
দিল্লিতে আপের সম্ভাবনা
সাম্প্রতিক দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আপের জয়ের সম্ভাবনাই প্রবল বলে অধিকাংশ সমীক্ষা জানিয়েছিল। বুথ ফেরত সমীক্ষাও তেমনই আভাস দিচ্ছে। সেই দলেরই প্রচার-পরিকল্পনার দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। সম্প্রতি জেডিইউয়ের সঙ্গে সম্পর্কে বিচ্ছেদের পর তিনি আবার যে দলের দায়িত্ব নিয়েছেন সেই ডিএমকেই বর্তমানে তামিলনাড়ুতে প্রবল শক্তিধর।
বাংলায় শাসক তৃণমূলই এগিয়ে
আর একইভাবে বাংলায় শাসক তৃণমূলই এগিয়ে জয়ের ব্যাপারে। লোকসভায় বিজেপি ২ থেকে বেড়ে ১৮ হলেও তারা চ্যালেঞ্জার হয়ে উঠতে পারে, কিন্তু ২০২১-এ জের ব্যাপারে এগিয়ে তৃণমূলই। তাই তাঁদের হয়ে কৌশল নির্ধারণ। আর সেই কৌশলে বাজিমাত করা অনেক সহজ কাজ।
২০১৪-য় লোকসভার পরই জয়যাত্রা শুরু
২০১২ সালে গুজরাটের নির্বাচনে তিনি নরেন্দ্র মোদীকে ক্ষমতায় এনেছিলেন প্রবল সরকারবিরোধী হাওয়ার মধ্যেও। তারপর ২০১৪ সালে তিনি যখন লোকসভায় বিজেপির হয়ে কাজ করেছিলেন, সেবারও বিজেপির জয়ের সম্ভাবনাই বেশি ছিল। কেননা কংগ্রেস দুর্নীতির ঘেরাটোপে বন্দি।
রাহুল গান্ধীর সঙ্গে গাঁটছড়ায় ব্যর্থতা
এরপর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে তিনি রাহুল গান্ধীর কংগ্রেসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন। কিন্তু সেই অর্থে সাফল্য এনে দিতে পারেননি কংগ্রেসকে। শুধুমাত্র সাফল্য পেয়েছিলেন পঞ্জাবে। অমরিন্দর সিং এসেছিলেন ক্ষমতা। প্রশান্ত কিশোরের কৌশল কাজ করেনি কংগ্রেসে।
অন্ধ্রপ্রদেশে জগনমোহন এগিয়েই ছিলেন
তারপর তিনি জেডিইউয়ে গিয়েছেন, সেখানে পরীক্ষার মুখে পড়েননি। কিন্তু জগনমোহন রেড্ডির হয়ে কাজ করে অন্ধ্রপ্রদেশে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। আর এখানেও সেই ধারণা খাটে যে, লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা দলই সাফল্যে পায়। নাম হয় প্রশান্ত কিশোরের কৌশলের। অন্ধ্রপ্রদেশেও জগনমোহন রেড্ডির জয়ের সম্ভাবনা ছিল অনেক বেশি। চন্দ্রবাবু নাইডু হারের মুখে দাঁড়িয়েছিলেন।
তামিলনাড়ুতে ডিএমকেও এগিয়ে
এখন নতুন করে ডিএমকের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। তামিলনাড়ুতে ডিএমকেই এগিয়ে তাঁদের প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমানে শাসক এআইএডিএমকের থেকে। গত লোকসভা নির্বাচনেও ডিএমকে দারুন ফল করেছিল। এবার দক্ষিণের এই রাজ্যে পালাবদল ঘটতে চলেছে বলেই আভাস। এরই মধ্যে এগিয়ে থাকা দলেরই দায়িত্ব নিলেন প্রশান্ত কিশোর। তাঁর কাছে এআইএডিএমকের প্রস্তাবও ছিল।