লাগাতার লোকসানের ধাক্কায় জর্জরিত ভোডাফোন-আইডিয়া, শেষ অর্থবর্ষেও প্রায় ৭৪ হাজার কোটির ধাক্কা
লাগাতার লোকসানের ধাক্কায় জর্জরিত ভোডাফোন-আইডিয়া, শেষ অর্থবর্ষেও প্রায় ৭৪ হাজার কোটির ধাক্কা
দীর্ঘদিন ধরেই সুপ্রিম কোর্টে ভারতীয় টেলিকম সংস্থাগুলির পাহাড় প্রমাণ বকেয়া নিয়ে চলছিল টানাপোড়েন। এরই মাঝে বুধবার জানা গেল, মার্চে শেষ হওয়া ২০২০ অর্থবর্ষে ভোডাফোন-আইডিয়া প্রায় ৭৩,৮৭৮ কোটি টাকা লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে। যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। শুধুমাত্র টেলিকম সার্ভিসের ক্ষেত্রে ৫১,৪০০ কোটি ঋণ থাকলেও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, টেলিকম ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত নয়, ভোডাফোনের আওতায় থাকা এমন ক্ষেত্রগুলির ঋণও যোগ করার নিতে বলা হয়। ফলত বর্তমানে ভোডাফোনের দায়বদ্ধতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
লাগাতার লোকসানের ধাক্কায় বেহাল ভোডাফোন-আইডিয়া
সূত্রের খবর অনুযায়ী, জানুয়ারি-মার্চের মধ্যে ভোডাফোনের লোকসান হয় ১১,৬৪৩.৫ কোটি টাকা। ভারতের টেলিকম বিভাগ(ডিওটি)-এর মতে, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে এই সংস্থার মোট বকেয়া ছিল ৫৮,২৫৪ কোটি। যদিও ভোডাফোনের তরফে জানান হয়, পূর্বে কিছু ঋণ শোধ করার ফলে ও হিসেবে ভুলত্রুটির কারণে আসল ঋণের পরিমাণ হবে ৪৬,০০০ কোটি টাকা। সর্বমোট ঋণের মধ্যে মাত্র ৬,৮৫৪.৪ কোটি টাকা শোধ করেছে ভোডাফোন। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ২০১৯ অর্থবর্ষে ভোডাফোন-আইডিয়ার বকেয়া ছিল ১৪,৬০৩.৯ কোটি টাকা।
২০১৯-এর প্রিপেড মূল্য বাড়ানোয় লভ্যাংশ বৃদ্ধি
২০১৮-এর বেশ কিছু সময় ধরে ভোডাফোন ইন্ডিয়া ও আইডিয়া সেলুলারের সংযুক্তিকরণের প্রক্রিয়া চলেছিল। ভোডাফোনের মতে, এই কারণে এই বছরটিকে পূর্ব বছরের সাথে তুলনা করা উচিত নয়। ২০২০ অর্থবর্ষে ভোডাফোনের মত আয় হয় ৪৪,৯৫৭.৫ কোটি টাকা। এদিকে অর্থবর্ষ ২০১৯-এ এই আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৭,০৯২.৫ কোটি টাকা। ভোডাফোনের তরফে জানা গেছে, ২০২৯-এর ডিসেম্বরে প্রিপেড মূল্য বর্ধিত করায় প্রতি তিনমাসে আয়ের পরিমাণে ৬%-এর বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।
সরকারের কাছে আর্থিক প্যাকেজের আশা ভোডাফোনের
ভোডাফোনের সর্বাধিপতি রবিন্দর টক্কর জানিয়েছেন, "সংযুক্তিকরণের মূল লক্ষ্য ছিল ক্রেতাদের সবদিক দিয়ে তৃপ্ত করা। আমরা দেখেছি ৪জি ডেটা সংযোগ ও ডাউনলোডের গতির দিক দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য ও বড় শহরগুলিতে ভোডাফোন অনেকটাই এগিয়ে।" তিনি আরও জানান যে জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে ভোডাফোনের সর্বমোট আয়ের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হবে। তাঁর মতে, "যেভাবে টেলিকম ক্ষেত্র গুলি ক্ষতির মুখে পড়েছে তা পুনরুদ্ধারের জন্যে সরকারের আর্থিক রিলিফ প্যাকেজ দেওয়া উচিত।" সূত্রের খবর অনুযায়ী, লিজ সংক্রান্ত দায়ভার বাদ দিলেও অর্থবর্ষের শেষ পর্যন্ত সরকারের কাছে দেয় স্পেকট্রাম পারিশ্রমিক ধরে মোট ঋণ দাঁড়ায় ১,১৫,০০০ কোটিতে। ভোডাফোনের তরফে জানান হয়েছে, "প্রায় ৯২% জেলায় কাজ সম্পন্ন হলেও করোনার কারণে নেটওয়ার্ক সংযুক্তিকরণেও বাধা পড়েছে।"
আয় সংক্রান্ত দায়ভারের ক্ষেত্রে প্রায় ৪৬,০০০ কোটি বকেয়া ভোডাফোনের
সূত্রের খবর অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বরে ভোডাফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০কোটি ৪০লক্ষ থেকে কমে জানুয়ারি-মার্চে পৌঁছেছে ২৯ কোটি ১০ লক্ষে। যদিও প্রতি ব্যবহারকারী পিছু সংগ্রহ(এআরপিইউ) অক্টোবর-ডিসেম্বরের ১০৯ টাকা থেকে বেড়ে জানুয়ারি-মার্চে হয়েছে ১২১ টাকা। অন্যদিকে ইন্দাস ইনফ্রাটেলে ১১.১৫% শেয়ার থেকে অনেকটাই আর্থিক সুবিধা পেয়েছি ভোডাফোন আইডিয়া(ভিআইএল)। ভিআইএলের মতে, মহামারীর জেরে বস্তু গত কোনোরকম লোকসান হয়নি। তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী, আয় সংক্রান্ত দায়ভারের ক্ষেত্রে প্রায় ৪৬,০০০ কোটি বকেয়া রয়েছে ভিআইএলের। ফলত সবকিছু মিলিয়ে বেশ সমস্যায় ভারতের এই বিখ্যাত টেলিকম সার্ভিস অপারেটর।
মহা দুর্যোগ ধেয়ে আসছে বঙ্গে! উত্তরে অতিবর্ষণের জন্য সতর্কবার্তা জারি করল আবহাওয়া দফতর