'যেমন বীজ বুনবেন তেমন ফসল পাবেন', হরিশ রাওয়াতের স্বগতোক্তি টুইটের পর খোঁচা অমরিন্দর সিংয়ের
উত্তরাখণ্ডে হরিশ রাওয়াত যুদ্ধে নেমে কার্যত হাল ছেড়ে দিয়েছেন। দলের লোকেরাই তাঁর পা টেনে ধরছে। তিনি মাঝ সমুদ্রে নেমে খেই হারিয়ে ফেলছেন। এমনটাই দাবি করেছেন তিনি। যা শুনে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি সদ্য কংগ্রেস ত্যাগী পাঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। তিনি বলেছেন, যেমন বীজ বুনেছেন, তেমন ফসল পাবেন। অর্থাৎ গোটা ঘটনাকেই হরিশ রাওয়াতের কর্মফল বলে খোঁচা দিয়েছেন অমরিন্দর। ঘটনা হল, পাঞ্জাব এপিসোডের সময় অমরিন্দরের সঙ্গে রাওয়াতের দূরত্ব তৈরি হয়। তারপর অমরিন্দর দল ছাড়েন। এদিন সেই ঘটনাতেই যেন খোঁচা দিয়ে বদলা নিলেন অমরিন্দর।
ঘটনা হল, উত্তরাখণ্ডে ক্ষমতা হারানোর পরে আসন্ন বিধানসভা ভোটে লড়াই করে ফিরে আসতে চাইছে কংগ্রেস। যদিও সেরাজ্যে কংগ্রেসের সংগঠন আগের থেকে অনেক দুর্বল হয়েছে। ফলে তারা কতটা ভালো ফল করতে পারবে তা সময়ই বলবে। তবে তার মধ্যেই গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো অন্তর্কলহে লিপ্ত হচ্ছে কংগ্রেস।
উত্তরাখণ্ডে দলের বরিষ্ঠ নেতা তথা একসময়ের মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াতকে নির্বাচনী প্রচারের মাথায় বসানো হয়েছে। অর্থাৎ তাঁর নেতৃত্বেই উত্তরাখণ্ডে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির মোকাবিলা করবে কংগ্রেস। অথচ তিনিই বলা যায় একপ্রকার হাল ছেড়ে দিয়ে বসে রয়েছেন।
রাওয়াত এদিন বেশ কিছু কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, যার মর্মার্থ হল - সমুদ্রে সাঁতার কাটতে নেমে তিনি হাবুডুবু খাচ্ছেন। কীভাবে সাঁতার কেটে পারে উঠবেন তা বুঝতে পারছেন না। ফলে মাঝ সমুদ্রে নেমে খেই হারিয়ে ফেলেছেন।
হরিশ রাওয়াত টুইটারে লিখেছেন নির্বাচন রূপী সমুদ্রে সাঁতার কাটতে নেমেছি। অথচ যারা দলীয় সংগঠনে সাহায্যের জন্য রয়েছেন, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাহায্য না করে মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন।
শুধু তাই নয়, এখানেই না থেমে হরিশ রাওয়াত যা লিখেছেন তা এক প্রকার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধাচরণ বলা যেতে পারে। কারণ টুইটারে তাঁর বক্তব্য, দলের হয়ে লড়তে নেমেছি। অথচ যারা শীর্ষে রয়েছেন, তারাই চলার পথে একাধিক কাঁটা বিছিয়ে রেখেছেন। যাদের আদেশে চলব, তাদের লোকেরাই এই পথ চলায় বারবার বাধার সৃষ্টি করছেন। তাই বারবার এই কথাই মনে হচ্ছে যে, অনেক হয়েছে, অনেক লড়াই করেছি, এখন বিশ্রামের সময়।
রাওয়াত লিখছেন, খুব টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। পালিয়ে যেতে চাই না। আশা করি নতুন বছর নতুন রাস্তা দেখাবে। আমার বিশ্বাস, ভগবান কেদারনাথ এই পরিস্থিতিতে আমার পথ প্রদর্শন করবেন।
উত্তরাখণ্ডে কংগ্রেস বারবার গোষ্ঠী কোন্দলের কারণে ধাক্কা খেয়ে এসেছে। সেখানে কেউ যদি তাদের উদ্ধার করতে পারেন তা একমাত্র হরিশ রাওয়াত বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এখনও কংগ্রেস দলের তরফে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ একাধিক সমস্যা রয়েছে। তার মধ্যেই হরিশ রাওয়াত যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ক্ষোভ উগরে দিলেন তাতে আগামিদিনে কংগ্রেসের অবস্থা নিয়ে আরও কিছুটা খারাপ হবে তা এক কথায় বলে দেওয়া যায়।