ভয়াবহ তুষারধসে তছনছ উত্তরাখণ্ড, নেপথ্য রহস্য খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ডিআরডিও-র হাতে
ভয়াবহ তুষারধসে তছনছ উত্তরাখণ্ড, নেপথ্য রহস্য খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ডিআরডিও-র হাতে
প্রকৃতি রুদ্ররোষে গতকাল কার্যত ছত্রখান হয়ে গিয়েছে দেবভূমি। উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় যোশীমঠের কাছে নন্দাদেবী হিমবাহ ফেটে আচমকা পাহাড়ের বুকে অলকানন্দা এবং ধৌলিগঙ্গা নদীর জলস্তর বেড়ে ধেয়ে আসে হড়পা বান। ভয়ঙ্কর তুষারধসের কবলে পড়ে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। নিখোঁজ ২০০-র বেশি মানুষ। এদিকে আচমকা এই তুষারধসের পিছনে একাধিক কারণ উঠে এলে গতকাল থেকেই অনুসন্ধানে নেমে পড়ে ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা বা ডিআরডিও।
ডিআরডিও গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য
বর্তমানে ডিআরডিও-র অনুসন্ধানেই উঠে আসছে একাধিক চমকপ্ৰদ তথ্য। একটি ঝুলে থাকা হিমবাহ থেকেই নাকি যাবতীয় বিপত্তি, জানাচ্ছেন ডিআরডিও প্রধান ডাঃ এলকে সিনহা। এলকে সিনহার বক্তব্য, "আমাদের গবেষকরা যাবতীয় তথ্যাদি খুঁটিয়ে দেখছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ওই ঝুলে পড়া হিমবাহের অংশটি সরু উপত্যকায় নেমে এসে যে জলাশয় তৈরি করে, তাই পরে জলধারণে অসমর্থ হয়ে যাবতীয় বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।"
ঘটনাস্থলেই ১৮ জনের মৃত্যু
কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের তরফে প্রায় ১৮ জনের মৃত্যুর কথা জানান হলেও সংখ্যাটা যে আরও বেশি, সেই খবর মিলছে একাধিক মহল থেকে। সূত্রের খবর, হড়পা বানের জেরে ঋষিগঙ্গা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ধৌলিগঙ্গা নদীতে অবস্থিত এনটিপিসির জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এদিকে দুই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ধ্বংস হওয়ার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ফলস্বরূপ আগামী বেশ কিছুদিন যাবৎ যে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা স্পষ্ট প্রশাসনিক আধিকারিকদের কথাতেই।
মূল-ভূখন্ড থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন প্রায় ১৩টি গ্রাম
এদিকে উদ্ধারকার্যে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দলকে (এনডিআরএফ) সাহায্য করছে ইন্দো-তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি), ভারতীয় সেনা ও উত্তরাখণ্ড পুলিশ। এই প্রসঙ্গে আইটিবিপির এডিজি মনোজ রাওয়াতের বক্তব্য, জলের ধাক্কায় রাইনি গ্রামের সেতুটি ভাঙার পরেই ঘনসালি, মালারির মত প্রায় ১৩টি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। পাশাপাশি রাইনি ও লতা গ্রামে খাদ্যপণ্য সরবরাহের প্রয়োজনীয়তার কথাও ইতিমধ্যে জানিয়েছে সেনা।
নিখোঁজ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের শতাধিক কর্মচারি
এদিকে তীব্র জলোচ্ছ্বাসের ফলে নিখোঁজ প্রায় ২০৩ জন, যাঁদের অধিকাংশ জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কর্মরত ছিলেন বলে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী ত্রিভেন্দ্র সিং রাওয়াত। অন্যদিকে মাটির প্রায় ৫কিলোমিটার গভীরে ২.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে ফেঁসে থাকা প্রায় বহু কর্মীকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে এনডিআরএফ। সুড়ঙ্গে প্রায় ৩০ জন কর্মীর আটক থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে বলে খবর। এনডিআরএফ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের তরফে প্রাথমিকভাবে আগামী ৪৮ঘন্টা উদ্ধারকার্য চালানোর কথাও ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে।
'দলে কাজ করতে পারছি না, শতাধিক কর্মী নিয়ে বিজেপি ছাড়লেন 'প্রভাবশালী' তৃণমূল নেতা