
নুপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের জের, রাজ্যে উত্তেজনা কমাতে কাজ করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ
হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্য গত শুক্রবার কানপুরে হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ সেই সংঘর্ষে জড়িত অপরাধীদের সনাক্ত করতে জোরদার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই সিসি ক্যামেরা ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ ৪০ জন সন্দেহভাজনের পোস্টার জারি করেছে। এছাড়াও পুলিশ ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তাদের এটা বোঝাতে চাইছে যে জ্ঞানবাপী মামলায় সরকার নিরপেক্ষ ছিল, যা ঘটনার সূচনা করেছিল।

নুপুর শর্মার মন্তব্য ও কানপুরে সংঘর্ষের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি করার জন্য পুলিশ ৭ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। এই সাতজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫, ৫০৭ ও আইটি আইনের ৬৬ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পাওয়া ৪০ জন সন্দেহভাজনের ছবি এঁকে কানপুরের বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় পোস্টার দেওয়া হয়েছে এবং স্থানীয়দের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে সন্দেহভাজনদের বিষয়ে কেউ যদি কোনও তথ্য জানে তা যেন পুলিশকে তারা জানায়। এই পোস্টারে সন্দেহভাজনদের নাম ও ঠিকানা দেওয়া নেই, যেমনটা লখনউ ও কানপুরে হিংসাত্মক ঘটনায় সিএএ বিরোধী বিক্ষোভকারীদের ছবি সম্বলিত হোর্ডিং লাগানো হয়েছিল। এলাহাবাদ হাইকোর্ট তখন রাজ্য সরকারকে তিরস্কার করেছিল।
এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার এ প্রসঙ্গে বলেন, 'গোটা রাজ্যে সতর্কতা জারি করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ধর্মীয় ধর্মগুরুদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করেছি। আমরা তাঁদের এও বলেছি যে জ্ঞানবাপী মামলায় সরকার নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে এবং যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা আদালত নিয়েছে।'
গত শুক্রবার নুপূর শর্মার মন্তব্যের পর দোকানপাট হন্ধ করতে অস্বীকার করায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ ২৯ জনকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে হায়াত জাফর হাশমির নাম উঠে আসলেও তার আত্মীয়রা জানিয়ে যে হায়াত বনধ প্রত্যাহার করে নিয়েছিল এবং সে এই ঘটনার পিছনে নেই। পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে বনধের আয়োজকরা তাদের জানিয়েছিলেন যে ৩ জুন নির্ধারিত বিক্ষোভ হবে না তবে একদিন পরে একটি প্রতীকী প্রতিবাদ করা হবে। কারণ সেই সময় শহরে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল সহ রাজ্যের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছিলেন। যদিও দোকানপাট বন্ধ করার চেষ্টা ক্রমে সংঘর্ষে পরিণত হয় এবং পাথর নিক্ষেপের ঘটনায় পুলিশ সহ অনেকে আহত হন।
নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য! কুয়েতের মল থেকে সরানো হচ্ছে ভারতীয় পণ্য, ভিডিও ভাইরাল
অন্যদিকে এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বসপা প্রধান মায়াবতী এই সংঘর্ষের পূর্ণ তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি সোমবার লখনউতে জানিয়েছেন এই সংঘর্ষে পুলিশি পদক্ষেপে যেন কোনও সাধারণ মানুষকে হেনস্থা হতে না হয়। মায়াবতী এও জানিয়েছেন যে কুয়েত, কাতার, ইরান এবং অন্যান্য পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির প্রতিবাদের পরে বিজেপি নুপূর শর্মা এবং অন্য একজন নেতাকে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বরখাস্ত করার পরে বিষয়টি আরও তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে।