‘অবিলম্বে কার্যকরে’র বার্তা পাঠিয়ে পদত্যাগ, উর্জিতের দুটি শব্দেই সংঘাতের বাতাবরণ
আর তাঁর বক্তব্যের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ এফেক্টিভ ইমিডিয়েটলি। অর্থাৎ তিনি লেখেন, আমার পদত্যাগ অবিলম্বে কার্যকর করা হোক। তাঁর এই বার্তায় লুকিয়ে রয়েছে সংঘাতের বার্তাবরণ।
দীর্ঘদিন ধরেই টানাপোড়েন চলছিল। অবশেষে ইস্তফাই দিয়ে দিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত প্যাটেল। যদিও তিনি সংঘাতের পথে না গিয়ে ব্যক্তিগত কারণেই পদ থেকে সরে যাওয়ার বার্তা দিলেন তিনি। সোমবার কেন্দ্রের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে তিনি বলেন, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতো বিরাট প্রতিষ্ঠানের সেবা করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
তিনি আরও লেখেন, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মীদের সমর্থন ও কঠোর পরিশ্রম, কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপকদের সুপরিচালনায় সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ব্যাঙ্ক উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছিল। আমি আরবিআই কেন্দ্রীয় বোর্ডের ডিরেক্টর ও আমার সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানাচ্ছি।
আর তাঁর বক্তব্যের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ এফেক্টিভ ইমিডিয়েটলি। অর্থাৎ তিনি লেখেন, আমার পদত্যাগ অবিলম্বে কার্যকর করা হোক। তাঁর এই বার্তায় লুকিয়ে রয়েছে সংঘাতের বার্তাবরণ। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের পদ থেকে ইস্তফার নেপথ্যে উর্জিত প্যাটেল নিজে ব্যক্তিগত কারণ দেখালেও, তাঁর পদত্যাগের পিছনে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাতকেই মূল কারণ হিসেবে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। আর লোকসভার আগে উর্জিতের সরে যাওয়া কেন্দ্রের মোদী সরকারের ভাবমূর্তির জন্য বড় ধাক্কা বলেও ব্যাখ্যা বিশেষজ্ঞজদের।
Urjit R. Patel: On account of personal reasons, I have decided to step down from my current position (RBI Governor) effective immediately. It has been my privilege and honour to serve in the Reserve Bank of India in various capacities over the years (File pic) pic.twitter.com/PAxQIiQ3hV
— ANI (@ANI) December 10, 2018
[আরও পড়ুন:ব্যথিত, কিন্তু বিস্মিত নন - উর্জিত প্যাটেলের পদত্যাগে মোদী সরকারকে আক্রমণ চিদম্বরমের]
উল্লেখ্য, তিনটি বিষয় নিয়ে মূলত সংঘাত তৈরি হয়েছিল কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের। আর সংঘাতের অন্যতম যে কারণ ছিল, তা হল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে থাকা সঞ্চিত অর্থ। সরকার চেয়েছিল ওই অর্থ ভোটের আগে উন্নয়নের কাজে লাগাতে। তারপর ব্যাঙ্কগুলির বিপুল এনপিএ ও মূলধনের অভাব সংক্রান্ত বিধি নিয়েও কেন্দ্র উদ্বেগ প্রকাশ করে।
তারপর আরবিআই ১১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আনতে ও নিজেদের মূলধন বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছিল। এই নিয়েই রাজনৈতিক বিতর্কের সূত্রপাত হয়। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাজে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হলেও যে সমস্যার সমাধান হয়নি, তা প্রমাণ হয়ে গেল এদিন। উর্জিতের এফেকটিভ ইমিডিয়েটলি বার্তাতেই লুকিয়ে রয়েছে সংঘাত।