যোগী রাজ্যে করোনার বাড়বাড়ন্ত, মৃত্যুর সংখ্যা অতিক্রম করল দশ হাজার
যোগী রাজ্যে করোনার বাড়বাড়ন্ত
মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়ালো দশ হাজার। এদিন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে ১৬২ জন। অন্যদিকে এই রাজ্যে করোনায় নতুন কেসের সংখ্যা ২৯,৭৫৪টি, যা সংক্রমণের সংখ্যাকে ৯ লক্ষে নিয়ে গিয়েছে।
একদিনে রাজ্যে মৃত্যু ১৬৭ জনের
মঙ্গলবার একদিনে ১৬৭ জনের মৃত্যু, সর্বোচ্চ দৈনিক গণনা হিসাবে ধরা হয়েছে এবং রবিবার একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০,৫৯৬ জন। উত্তরপ্রদেশে মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬,৭৫,৭০২ জন এবং গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪,৩৯১ জনের বেশি রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অতিরিক্ত মুখ্য সচিব অমিত মোহন প্রসাদ। তিনি এর সঙ্গে এও জানান যে রাজ্যে সক্রিয় করোনা কেসের সংখ্যা ২,২৩,৫৪৪ টি। করোনায় নতুন মৃত্যু ও আক্রান্তদের নিয়ে রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ১০,১৫৯ জনের এবং মোট সংক্রমণের সংখ্যা ৯,০৯,৪০৫ জন।
অখিকাংশ করোনা কেস লখনউ থেকে
স্বাস্থ্য বুলেটিনের মাধ্যমে জানা গিয়েছে, নতুন করোনা কেসগুলির মধ্যে অধিকাংশ ৫,০১৪টি কেস লখনউ, ২,১৭৫টি এলাহাবাদ, ১৭৪০টি কেস কানপুর, ১,৬৩৭ বারাণসী, ১,২৮৭টি মিরুট, ৯১৩টি বরেলি, ৬৪০টি গৌতম বুদ্ধ নগর থেকে রিপোর্ট হয়েছে। অন্যদিকে নতুন মৃত্যুগুলির মধ্যে ২৮টি মৃত্যু কানপুর থেকে, ১৯টি মৃত্যু রাজধানী লখনউ থেকে, ১৩টি মৃত্যু এলাহাবাদ থেকে, আটটি মৃত্যু গৌতম বুদ্ধ নগর থেকে এবং সাতটি মৃত্যু বারাণসী থেকে হয়েছে বলে জানানো হয়।
রাজ্যে বাড়ছে সুস্থতার হার
তবে স্বস্তির খবর হল সুস্থতার সংখ্যাও ক্রমে বাড়ছে। বুলেটিনে বলা হয়েছে, লখনউ থেকে ৩,৫৯০ জন রোগী, ১,৮৫৫ জন রোগী বারাণসী থেকে, ১,৭৩৪ জন এলাহাবাদ ও ৯৫৪ জন গৌতম বুদ্ধ নগর থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। মোট ১,৭৬,৭৬০ জন সক্রিয় করোনা রোগী বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন, ৪,৪৫৫ জন ভর্তি রয়েছেন চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে এবং বাকিরা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তিনি জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৩.৮৬ কোটি নমুনা রাজ্যে কোভিড-১৯-এর জন্য পরীক্ষা হয়েছে, যার মধ্যে সোমবার ২ লক্ষ করোনা টেস্ট হয়েছে।
নৈশ কার্ফু ও লকডাউন
রাজ্যে কোভিড টিকাকরণ কর্মসূচিতে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১,০৯,৩৪,৫৬৬টি ডোজ ব্যবহৃত হয়েছে। জেলাগুলিতে ৫৫০-এর বেশি করোনা কেস দেখা দেওয়ায় রাজ্য সরকার মঙ্গলবার থেকে সপ্তাহান্তের লকডাউন ও গোটা সপ্তাহ জুড়ে নৈশ কার্ফু জারি করার ঘোষণা করেছে। মঙ্গলবার রাত ৮ টা থেকে পরের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত এই নৈশ কার্ফু জারি থাকবে। অন্যদিকে, সপ্তাহান্তের লকডাউন শুরু হবে শুক্রবার রাত ৮টা থেকে সোমবার সকাল সাতটা পর্যন্ত। এই সময় জরুরি নয় এমন পরিষেবার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
যে সব রাজ্যে আগে থেকে নৈশ কার্ফু রয়েছে
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সভাপতিত্বে এক বৈঠকে করোনা ভাইরাসের চেইন ভাঙতে এই সিদ্ধান্ত ২টি নেওয়া হয়েছে। এর আগে নেশ কার্ফু জারি ছিল কানপুর, গোরক্ষপুর, গৌতম বুদ্ধ নগর, এলাহাবাদ, মিরুট, গাজিয়াবাদ, বরেলি ও মুজফ্ফর নগর এবং লখনউ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এলাকায়।
অক্সিজেন ও বেডের ঘাটতি
মঙ্গলবার সরকারিভাবে জানা গিয়েছে যে রাজ্যে করোনা ভাইরাসের কেস বৃদ্ধির জেরে মখুরার জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫০০টি অক্সিজেন শয্যা বৃদ্ধি করবে। জেলা শাসক নবনীত সিং চাহাল বলেন, 'মথুরাতে এখনও পর্যন্ত ৫০০টির বেশি অক্সিজেন বেড এবং সমতুল্য সাধারণ বেড রয়েছে।' প্রসঙ্গত, অন্যান্য রাজ্যের মতো যোগী রাজ্যেও অক্সিজেন ও বেডের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যদিও জেলা শাসক জানিয়েছেন যে কেডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৬০০টি বেড, এর সঙ্গে ৮০টি অক্সিজেন যুক্ত বেড উপলব্ধ। অন্যদিকে কেএম মেডিক্যাল কলেজে ১০৫টি অক্সিজেন বেড সহ ২২০টি বেড রয়েছে। তিনি এও জানিয়েছেন যে ২২০টি অক্সিজেন বেড রয়েছে নায়াতি ও ১০০টি বেড রয়েছে বৃন্দাবনের রাম কৃষ্ণ বেসরকারি হাসপাতালে।
টিকা অপচয় নিয়ে কেন্দ্রেকে তীব্র ভৎসনা দিল্লি হাইকোর্টের, অক্সিজেন ঘাটতি নিয়েও কড়া সমালোচনা