এল ময়না তদন্তের রিপোর্ট, তাও দিল্লির ঘটনায় মিলছে না অনেক উত্তর
দিল্লি একই পরিবারের ১১ জন সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ এখনো কোন সূত্রের সন্ধান পায়নি।
দিল্লির বুরারি এলাকার ভাটিয়া পরিবারের ১১ জন সদস্যের লাশ উদ্ধারের পর একদিন কেটে গিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, অন্তত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে। কিন্তু পুলিশ যে তিমিরে ছিল এখনও সেই তিমিরেই রয়েছে। এখনও ঘটনাক্রম তাদের কাছে স্পষ্ট নয়। স্পষ্ট নয় এটি একটি গন আত্মহত্যার ঘটনা, নাকি পরিবারের কোনও সদস্য বাকিদের খুন করে নিজেও আত্মঘাতি হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে বেশিরভাগেরই চোখ মুখ বাঁধা ছিল, হাতও ছিল পিছমোড়া করে বাঁধা। একমাত্র পরিবারের সবচেয়ে বর্ষিয়ান ৭৭ বছরের নারায়ণ দেবীর দেহ ছাড়া বাকি সবার দেহই ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে। তাঁর শরীরে শ্বাসরোধ করার চিহ্ণ ছিল।
নারায়ণদেবী ছাড়া মৃতের তালিকায় আছেন তাঁর মেয়ে প্রতিভা (৫৭), দুই ছেলে ভুবনেশ (৫০) ও ললিত (৪৫)। ভুবনেশের স্ত্রী সবিতা (৪৮), তাঁদের তিন সন্তান, মীনু (২৩), নীতু (২৫) ও ধ্রুব (১৫)। ললিতের স্ত্রী টিনা (৪২) ও সন্তান শিবম (১৫)। এঁদের সকলের দেহই সিলিং-এর সঙ্গে সংযুক্ত একটি রেলিং থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়।
উদ্ধার হয়েছে প্রতিভার মেয়ে প্রিয়াঙ্কার দেহও। ৩৩ বছর বয়সী এই আইটি প্রফেশনালের গত মাসেই বাগদান হয়েছে। এবছরের শেষে তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। প্রিয়াঙ্কার বন্ধু ও সহকর্মীরা জানিয়েছেন, বিয়ে নিয়ে যথেষ্ট উত্তেজিত ছিলেন তিনি। তাঁর বিষয়টিই সবচেয়ে ধাঁধায় ফেলেছে পুলিশকে।
পুলিশ
জানিয়েছে
বাড়িটি
থেকে
কিছু
হাতে
লেখা
নোট
উদ্ধার
হয়েছে।
পুলিশের
দাবি
সেই
লেখা
গুলি
থেকে
ইঙ্গিত
পাওয়া
যাচ্ছে
গোটা
পরিবারই
কোনও
তন্ত্রসাধনা
বা
কোনও
অতিপ্রাকৃত
অনুশীলনে
যুক্ত
ছিল।
পুলিশ
আরও
দাবি
করেছে
নোটগুলির
লেখাতে
চোখ,
মুখ,
হাত
বাঁধা
কথা
রয়েছে।
বাড়ির
সামনে
লাগানো
সিসিটিভি
ফুটেজ
যাচাই
করে
দেখা
গিয়েছে
শনিবার
রাত
১০
টা
বেজে
৪০
মিনিট
নাগাদ
ওই
বাড়িতে
বাইরে
থেকে
খাওয়ার
আনানো
হয়েছিল।
সেই
ডেলিভারি
হওয়ার
পর
থেকে
কাউকে
বাড়িটিতে
ঢুকতে
বা
বোরোতে
দেখা
যায়নি।
পরদিন
সকালে
ভাটিয়ারা
তাঁদের
পারিবারিক
মুদির
দোকান
না
খোলায়
সন্দেহ
হয়
এক
প্রতিবেশীর।
তিনিই
পুলিশে
খবর
দিয়েছিললেন।
তবে
গন
আত্মহত্যা,
না
কোনও
একজনই
বাকিদের
খুন
করে
আত্মঘাতি
হয়েছেন
তা
বুঝতে
না
পারলে
পুলিশ
ঘটনাক্রম
সাজাতে
পারছে
না।
এদিকে ঘটনা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না নারায়ণ দেবীর বাকি দুই সন্তান। তাঁরা দিল্লির বাড়িতে থাকতেন না। বড়ছেলে দীনেশ ভাটিয়া থাকেন রাজস্থানের কোটাতে, আর আরেক মেয়ে সুজাতার বাড়ি হরিয়ানার পানিপথে। পুলিশের গত আত্মহত্যার তত্ব বা তন্ত্র চর্চার কথা তাঁরা মানছেন না। সুজাতা দেবী বলেছেন, 'সবাই খুব আনন্দে ছিল। তারা সবাই মিলে আত্মহত্যা করতে পারে না। তাদের খুন করা হয়েছে।' তিনি পুলিশের কাছে খুনিদের খুঁদে বার করার আবেদন জানিয়েছেন।
পুলিশও অবশ্য প্রাথমিরভাবে এই ঘটনায় বাইরের কারোর হাত আছে বলে অনুমান করেছিল। গত জুনে বুরারির মেইন মার্কেটে দুইদল দুষ্কৃতীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি চলে। তাতে ৩ দুষ্কৃতির মৃত্যু হয়েছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল ওই দুষ্কৃতি দলের সঙ্গে হয়ত ভাটিয়া পরিবারের যোগ ছিল, যার জেরেই সবাইকে খুন হতে হয়েছে। কিন্তু বিস্তারিত তদন্ত করেও ওই দুষ্কৃতিদের সঙ্গে ভাটিয়া পরিবারের কোনও যোগ পাওয়া য়ায়নি বলে জানিয়েছে তারা।