মানুষের জন্য আন্দোলনে শেষপর্যন্ত লড়াই, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে জানালেন মমতা
নয়াদিল্লি, ২৪ নভেম্বর : নোটকাণ্ডে সংসদে যখন ঝড় তুলছেন তাঁর দলের সাংসদরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া আক্রমণ শানাচ্ছেন, তখন দিল্লিতে উপস্থিত থেকে নোট-যুদ্ধ জারি রাখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসে থাকেন কী করে। ১০ দিনের মধ্যে তাঁর দ্বিতীয় রাজধানী সফরে এসে ফের রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করলেন তিনি।
বললেন, গরিব মানুষের দুর্বিসহ ভোগান্তির কথা। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে রাষ্ট্রপতিকে একটা সমাধান সূত্র বের করার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণের কথা তুলে ধরে বলেন, মানুষের জন্য এই আন্দোলনে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়য়ের সঙ্গে দেখা করার পরই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখোমুখি হয়েছিলেন সাংবাদিকদের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের জেরে গরিব মানুষের অবস্থা খুব খারাপ। চা-পাট শ্রমিকদের অবস্থা শোচনীয়। কৃষি ও অসংগঠিত ক্ষেত্রেও এই নোট নীতির ভয়ানক প্রভাব পড়েছে। প্রভাব পড়েছে নির্মাণ শিল্পেও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই সময় নির্মাণ শিল্পের বাড়বাড়ন্ত হয়। কিন্তু নোটের ধাক্কায় সেই শিল্প বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে। এই শিল্পের অসংগঠিত শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে বসে রয়েছেন। চরম দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হচ্ছে গোটা দেশেই।
এই সঙ্কট থেকে গরিব, কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষকে বের করে আনার কোনও ভাবনাই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। মোদিজির ঘোষিত নোট-নীতি বৈষম্যে ভরা। নোট বাতিল ঘোষণার পর ১৭ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও পর্যাপ্ত টাকার জোগান দিতে পারেনি কেন্দ্র। সমস্ত রাজ্যে সম পরিমাণ নোটও পাঠানো হচ্ছে না। এখনও বহু রাজ্যে ৫০০ টাকার নোটের কোনও জোগান নেই। শুধু টাকার অপ্রাপ্তীর কারণে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্রে এই সঙ্কটমোচনের চেষ্টা না করে মিডিয়াকে বিঁধে চলেছেন। আক্রমণ করছেন কর্পোরেট জগতকে। এই পরিস্থিতেত দাঁড়িয়ে সাধারণ গরিব মানুষের কাছে নির্ভয়ের প্রতীক হয়ে দাঁড়াতে সচেষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাধারণের উদ্দেশে জানিয়েছেন, ভয় পাবেন না। আমি আপনাদের পাশে আছি, পাশে থাকব। এটা মানুষের জন্য আন্দোলন, তাই জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব।