স্বর্ণ-স্বপ্ন অধরাই, সোনা নেই তাই উন্নাওয়ে খনন বন্ধ করল এএসআই
স্বর্ণ-স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলার দন্ডিয়া খেরা গ্রামে মাটির তলায় লুকানো রাজা রামবক্স সিংহের সোনা দিয়ে ভারতের অর্থনীতির হাল আর ফেরানো হল না । মাটির তলায় সোনা নেই, মঙ্গলবার তা ঘোষণা করে দিল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)।
সাধক শোভন সরকারের স্বপ্নে দেখা গুপ্তধন উদ্ধার করতে উত্তরপ্রদেশের দন্ডিয়া খেরা গ্রামের পুরানো কেল্লায় ১৮ অক্টোবর থেকে খননকার্য শুরু করে দিয়েছিল এএসআই। সোনা উদ্ধারে ৪৫ দিন ধরে খনন কার্য চলবে বলেও জানিয়েছিল তারা। কিন্তু এগারো দিনের মাথাতেই হাল ছেড়ে দিল এএসআই কর্মীরা। এএসআই-য়ের এক কর্তার কথায় ১১ দিনের খননকার্যের পর প্রমাণিত হয়েছে কেল্লার মাটির তলায় কোনও সোনা নেই। তাই খননকার্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মাটির তলা থেকে বৌদ্ধ যুগের বেশ কিছু মৃৎশিল্প পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই এএসআই কর্তা।
মাস খানেক আগে শোভন মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শোভন সরকার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানান, উন্নাওয়ে মাটির তলায় হাজার টন সোনা পড়ে রয়েছে। মৃত রাজা রাম বকস সিংহ তাঁর স্বপ্নে এসে গুপ্তধন উদ্ধার করে ভারত সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। এই চিঠি পেয়ে নড়ে বসে ভারত সরকার। শুরু হয় সোনা নিয়ে গবেষণা। প্রাথমিক অনুসন্ধানের পর কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন মাটির নীচে কোনও ধাতুর অবস্থান থাকলেও থাকতে পারে। ব্যস, আর কী ! সোনা উদ্ধারে জোর কদমে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এএসআই।
সাধক শোভন সরকারের স্বপ্নাদেশের খবর ছড়াতেই শুরু হয়ে গিয়েছিল সোনা নিয়ে দড়ি টানাটানি। স্বপ্নে মৃত রাজা বলেছেন গুপ্তধন উদ্ধারের পর ভারত সরকারের হাতে তুলে দিতে অতএব পুরো সম্পত্তি ভারত সরকারের। না তা কেন? যে রাজ্যের মাটির তলায় সোনা ছিল সেই রাজ্যের বাসিন্দাদের কোনও অধিকার নেই ওই সম্পত্তিতে, তা আবার হয় নাকি। অতএব এই সম্পত্তি রাজ্য সরকারের প্রাপ্য। রাজ্যের উন্নয়নেই ব্যবহার করতে হবে হাজার টন সোনার এক বৃহদাংশ। সোনার সন্ধান পাওয়ার আগেই এমন নানা তরজায় মেতে উঠেছিলেন সকলে। হাজার টন সোনা মুখের কথা নয়। সোনা মিলবে কি না তা নিয়ে নিশ্চয়তা না থাকলেও প্রত্যেকের মনেই ক্ষীণ আশার আলো জ্বালিয়েছিলেন সাধক শোভন সরকার। তবে সোনার খোঁজ না মিললেও এই স্বর্ণসন্ধানকে কেন্দ্র করেই মৃতপ্রায় উন্নাও খবরের শীর্ষে উঠে এসেছিল।