১৫ই জুলাইয়ের মধ্যে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁতে পারে ৮ লক্ষের গণ্ডি, জানাচ্ছে সমীক্ষা
১৫ই জুলাইয়ের মধ্যে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছুঁতে পারে ৮ লক্ষের গণ্ডি, জানাচ্ছে সমীক্ষা
করোনা মহামারির বিষয়ে বলতে গিয়ে অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই বলছেন, আগামীতে করোনা ভাইরাসের সাথেই বাঁচতে হবে আমাদের। এমন পরিস্থিতির মাঝে এবার মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভয়াবহ তথ্য। ওই সমীক্ষা মতে ১৫ই জুলাইয়ের মধ্যে ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৮ লক্ষে। ভারতে এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৪৩,০৯১ জন।
কন্টেইনমেন্ট অঞ্চলের বিধিনিষেধ লঘু করার জের
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, কন্টেইনমেন্ট জোন গুলিতে লকডাউনের বিধি লঘু করার ফলে আক্রান্তের তালিকায় ল্যাটিন আমেরিকাকে টপকে ব্রাজিলের পরে উঠে আসবে ভারত। গবেষক দলের তরফে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োস্ট্যাটিক্সের অধ্যাপক ভ্রমর মুখার্জি জানিয়েছেন, "আমরা ভারতে মহামারীর গতিবিধির উপরে একটি মডেল তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছি। তিনি আরও জানান অদূর ভবিষ্যতে এর প্রকোপ কেমন চেহারা নিতে পারে সে বিষয়েও গবেষণা চালাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্চের শেষ থেকে লকডাউনেও করোনায় লাগাম পরানো যায়নি
ভারতে করোনা আগ্রাসনের প্রথম থেকেই লকডাউন শুরু হলেও আক্রান্তের সংখ্যায় লগাম টানা যায়নি। তবে লক্ষ্যনীয় প্রভাব পড়েছে ভারতের অর্থনীতিতে। গত চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের জন্য দীর্ঘ এক বছরব্যাপী অর্থনৈতিক সংকোচনের মুখোমুখি ভারত। ফলত চরম বেকারত্ব ও চরম দারিদ্রের মধ্যে গোটা দেশ। কোনও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অভিবাসী শ্রমিকদের এক শহর থেকে আরেক শহরে স্থানান্তরের ফলে বাড়ছে আরও সংক্রমণ। আর এর ফলেই লকডাউনের দ্বারস্থ না হয়ে প্রশাসন চেষ্টা করছে মৃতের সংখ্যা কমিয়ে আনার। জনসাধারণের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায়ের বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে একইসাথে।
"করোনার সাথে বাঁচো"
লকডাউনের জেরে ইতিমধ্যেই যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তার ফলে বিজ্ঞানীরা এক কথায় বলছেন, "করোনার সাথে বাঁচতে শেখো"। অনেক গবেষক আবার 'হার্ড ইমিউনিটি' বা 'গোষ্ঠী প্রতিরোধ'-এর দিকে তাকিয়ে আছেন, তবে এমন শারীরিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠতে গেলে জনসাধারণের প্রায় ৬০% আক্রান্ত হতে হবে, তা আদৌ কতটা বাস্তবসম্মত উপায়ে হবে তা সময়ই বলতে পারবে।
প্রতিষেধক আবিষ্কারে ঢের দেরি
গবেষক দলের মতে, প্রায় ১০০ রকমের সম্ভাব্য প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা চললেও করোনার সঠিক কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার হতে এখনও ঢের দেরি। করোনায় প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও, ভারতে করোনায় মৃতের হার যথেষ্ট কম, প্রায় ২.৯%। এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা অধিক প্রাপ্তবয়স্কদের সংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। প্রাপ্তবয়স্কদের রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা তুলনামূলক ভাবে বেশি, এদিকে জনসাধারণের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের অনুপাত বেশি হওয়ায় মৃতের হারও কম।
প্রত্যহ আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে কপালে চিন্তার ভাঁজ
অন্যান্য দেশ প্রত্যহ আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাসের লক্ষ্যে লকডাউন আঁটসাঁটও করলেও, জিডিপির পারাপতন ও ঘন জনবসতির কারণে ভারতে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা শত চেষ্টা সত্ত্বেও হু-হু করে বাড়ছে। কেরালা ও ধারাভি বস্তি আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমে আক্রান্তের হার কমিয়ে আনার নজির গড়লেও, গোটা ভারতে একইভাবে কাজ করা অসম্ভব। ভ্রমর মুখার্জির মতে, "গোষ্ঠী অনুযায়ী শারীরিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা না গড়ে উঠলে করোনাকে রোখা মুশকিল। তাছাড়া লকডাউনে করোনার গতি সেভাবে তো কমেইনি, উল্টে অর্থনীতিতে ধ্বস দেখা গেছে। ফলত আমাদের যেকোনো পদক্ষেপ সতর্কতার সঙ্গে নিতে হবে।"
হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের মোহভঙ্গ আমেরিকায়! করোনা চিকিৎসায় নয়া নির্দেশিকা ট্রাম্পের দেশে