করোনা লকডাউনের জের, দেশে বেকারত্বের হার বেড়ে ২৬ শতাংশ!
দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার ঠেকতে চলেছে তলানিতে। খাদের কিনারায় ঝুলে রয়েছে অর্থনীতি। সৌজন্যে ভারতে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের প্রকোপ এবং তার জেরে চলতে থাকা এই লকডাউন। আর এরই মধ্যে দেশে বেকারত্বের হার মাত্রাহীন ভাবে বেড়ে চলেছে। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞ মহল।
বিশ্বজুড়ে লকডাউন পরিস্থিতি
করোনা ভাইরাস রুখতে বিশ্বজুড়ে লকডাউন পরিস্থিতিতে। থমকে রয়েছে অর্থনীতি। প্রায় একই অবস্থা ভারতেও। যারা বাড়িতে বসে কাজ করতে পারছেন তারা করছেন, না হলে কর্মহীন ভাবে দিন কাটছে কয়েক কোটি মানুষের। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতি যে ধসে যাবে তা প্রায় একপ্রকার নিশ্চিত। আর এই ধসের জেরে বিশ্বের পাশাপাশি ভারতেও চাকরির অভাবও দেখা দেবে।
দেশে বেকারত্বের হার ছুঁয়েছে ২৬ শতাংশ
এই অবস্থায় দেশে বেকারত্বের হার ছুঁয়েছে ২৬ শতাংশের গণ্ডি। এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ শেষেই বেকারত্বের হার গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ২৩-২৪ শতাংশের মাঝামাঝি। ১৯ এপ্রিল থেকে ২২ এপ্রিলের এই ব্যবধানেই এই হার বেড়েছে আরও প্রায় ৩ শতাংশ।
চাকরি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ
সম্প্রতি সিআইআই-এর দ্বারা এক সমীক্ষা করা হয়। তাতে সিআইআই-এর সঙ্গে যুক্ত দেশের সমস্ত বড় বড় সংস্থার সিইও-দের প্রশ্ন করে জানতে চাওয়া হয় যে লকডাউন পরবর্তী সময়ে চাকরি থাকা নিয়ে তাঁদের মতামত। সেই প্রশ্নের জবাবেই ৫২ শতাংশ সিইও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন যে লকডাউনের পর নিশ্চিত ভাবে অনেক মানুষ চাকরি হারাবে।
দেশের অর্থনীতি খুব বাজে পরিস্থিতিতে
এদিকে এই পরিস্থিতিতে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার যে কমবে তা একপ্রকার জানা কথা ছিল। আর সেই বিষয়ের উপরই রিপোর্ট পেশ করল দেশের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক এসবিআই। বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে আগের পূর্বাভাস থেকে ফের ভারতের জিডিপিতে কাটছাঁট করল এসবিআই। প্রবৃদ্ধির হার কমিয়ে মাত্র ২.৬ শতাংশ করে দিল এসবিআই। পাশাপাশি জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের ত্রৈমাসিকে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ২.৫ শতাংশ হবে বলে জানিয়েছে এসবিআই।
আর্থিক মন্দার কোপে পড়তে চলেছে বিশ্ব
করোনার জেরে বড়সড় আর্থিক মন্দার কোপে পড়তে চলেছে বিশ্ব, সে বিষয়ে অশনিসঙ্কেত দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশ্ব অর্থনীতির মোট ১ শতাংশ এই ধসের জেরে হ্রাস পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর এর জেরে বহু মানিষ তাদের চাকরি হারাতে চলেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেন তৈরি হয়েছে এই পরিস্থিতি?
ব্যবসার অস্তিত্বই লাভ করার জন্য। উৎপাদন না হলে, বিক্রি হবে না। মানে, লাভ হবে না। যার মানে, কর্মী নিয়োগ হবে না। ব্যবসাগুলো স্বল্প সময়ের জন্য অনাবশ্যক কর্মীদের ধরে রাখে, এই আশায় যে, পরিস্থিতি ফিরে আসলে যাতে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করা যায়। কিন্তু পরিস্থিতি বেশি খারাপের দিকে এগোতে থাকলে তারা আর কর্মীদের ধরে রাখবে না। আর সেই প্রক্রিয়াই চালু হয়ে গিয়েছে এই লকডাউনের মধ্যে।