নেই অ্যাম্বুলেন্স, গাড়ির ছাদে বাবার দেহ বেঁধে শ্মশানে নিয়ে গেলেন ছেলে
গাড়ির ছাদে বাবার দেহ বেঁধে শ্মশানে নিয়ে গেলেন ছেলে
একদিকে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, অন্যদিকে মৃত্যু মিছিল, করোনা ভাইরাসে দ্বিতীয় ওয়েভে রীতিমতো নাকানি চোবানি খাচ্ছে দেশবাসী। এরই মাঝে অক্সিজেনের আকাল অন্য এক সমস্যার সৃষ্টি করেছে। দেশের বহু জায়গাতেই মিলছে না অক্সিজেনও। সেরকমই এক নির্মম চিত্র ধরা পড়ল আগ্রাতে। এক ব্যক্তি অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে নিজের মৃত বাবাকে গাড়ির ছাদের ওপর বেঁধে আগ্রার মোক্ষধামে শেষকৃত্য করাতে নিয়ে যাচ্ছেন। কয়েক ঘণ্টা পর ওই ব্যক্তি তাঁর বাবাকে দাহ করেন। পরিষেবায় কোনও ঘাটতি নেই বলে বারবার দাবি করে এসেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। তার মধ্যেই সোমবার আগ্রায় এই দৃশ্য চোখে পড়ল।
মৃত ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না জানা যায়নি। তবে বাঁশের মাচাসমেত দেহ গাড়ির ছাদে বেঁধে নিয়ে যেতে দেখে শিউরে উঠেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এই দৃশ্য মোক্ষধাম শ্মশানে উপস্থিত অনেকের চোখেই জল এনে দিয়েছে। আগ্রায় দৈনিক সংক্রমণ ক্রমেই বাড়ছে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থারও অবনতি ঘটছে রীতিমতো। এই শহরে দৈনিক ৬০০ জন করে আক্রান্ত হোয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। শেষ ৯ দিনে কোভিড–১৯–এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে পরিবারকে তাদের প্রিয়জনের দেহ হাসপাতাল থেকে শ্মশান বা কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় ৬ ঘণ্টার মতো অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
আগ্রার বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে এখন আর রোগী ভর্তি নিচ্ছে না এবং আগ্রার সংলগ্ন জেলা মেইনপুরি, ফিরোজাবাদ ও মথুরা থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের এখানে পাঠানো হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মেইনপুরিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬৯ জন। এরপরই রয়েছে এটা (২৩৭), মথুরা (১৯০), ফিরোজাবাদ (৮০) এবং কাসগঞ্জ (৪২)। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মেইনপুরিতে ৮ জন, এটায় সাতজন, আগ্রাতে ৫ জন, মথুরাতে ৪ জন ও ফিরোজাবাদে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে একদিনে।
সমাজ কর্মী যোগেশ মালহোত্রা জানিয়েছেন যে করোনা কেস ও মৃত্যু ক্রমাগত বেড়ে চলেছে আগ্রাতে। সমাজবাদী পার্টির জেলা সভাপতি রামগোপাল বাঘেল এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারকে দায়ি করেছে।