ভারতের প্রবৃদ্ধি হারের পূর্বাভাস প্রকাশ রাষ্ট্রসংঘের, কোন পথে এগোচ্ছে ভারতীয় অর্থনীতি?
ভারতের প্রবৃদ্ধি হারের পূর্বাভাস প্রকাশ রাষ্ট্রসংঘের, কোন পথে ভারতীয় অর্থনীতি?
২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হারের পূর্বাভাস প্রকাশ করল রাষ্ট্রসংঘ। রিপোর্টে বলা হয়েছে চলতি অর্থবর্ষের শেষে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৫.৭ শতাংশে। এর আগে অবশ্য কেন্দ্র নিজে রিপোর্ট প্রকাশ করে জানিয়েছিল যে ২০১৯ -২০২০ সালের আর্থিক বছরে জিডিপির বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ থাকবে। ২০১৮-২০১৯ সালে এই জিডিপির বৃদ্ধি হার ছিল ৬.৮ শতাংশ। এদিকে বিশ্বের আর্থিক প্রবৃদ্ধির হার চলতি আর্থিকবর্ষে মাত্র ১.৮ শতাংশ থাকবে বলে জানানো হয়েছে পূর্বাভাসে।
প্রবৃদ্ধি হার নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের দিন
এর আগে বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানিয়েছিল, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার থাকবে পাঁচ শতাংশ। তবে কেন্দ্র ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের পূর্বাভাস থেকে রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্টে ভারতের প্রবৃদ্ধির হারকে বেশি দেখানো হয়েছে। তবে রাষ্ট্রসংঘের আগের পূর্বাভাস অনুযায়ী ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৭.৬ শতাংশ এদিকে ২০২০ অর্থবর্ষে ভারতের অর্থনীতি গতি পাবে বলেও আশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রসংঘ। এর আগে বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছিল ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ভারতের প্রবৃদ্ধির হার ৫.৮ শতাংশ হবে।
অর্থনীতি নিয়ে ভারতকে পরামর্শ
কয়েকদিন আগেই অবিলম্বে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পদক্ষেপ নিতে ভারত সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়। এই সতর্কবাণী শোনায় আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংস্থা আইএমএফ। আইএমএফ-এর বক্তব্য, সারা বিশ্বের অর্থনীতির অগ্রগতির ক্ষেত্রেই ভারত এক বড় শক্তি। ভারত নিজেদের অর্থনীতিকে সঠিক পথে ফেরত না আনতে পারলে তা সারা বিশ্বের জন্য খুব গভীর সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে বলে মত প্রকাশ করে আইএমএফ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাস
এদিকে বিশ্বব্যাঙ্ক ছাড়াও ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পরিমাণ কমানোর ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ। ২০১৯ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি পূর্বাভাস ৬.১ শতাংশ রেখেছিল আইএমএফ। আর ২০২০ সালে সেই আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৭ শতাংশ রাখা হয়েছিল। কিন্তু যে দিকে এগোচ্ছে দেশের অর্থনীতি তাতে সেই পর্যায়ে রাখা যাবে না ভারতকে এমনই মনে করছে আইএমএফ। সেকারণেই আগের অবস্থান থেকে কমিয়ে আনা হচ্ছে ভারতের আর্থিক অবস্থানকে। গীতা গোপীনাথ বলেছেন ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি কমিয়ে ৫ শতাংশেরও নীচে নামানো হতে পারে।
কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্ত
এর আগে সেম্পটেম্বর মাসে কর্পোরেট কর কমানোর সিদ্ধান্তের পর মনে করা হয়েছিল দেশে উৎপাদন বাড়বে। এর ফলে জিডিপিও উর্ধ্বমুখী হবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে সরকারের সেই পদক্ষেপের পরও আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল মুডিজ। তারা জানিয়েছিল এই সিদ্ধান্তের জেরে সরকারের আর্থিক ঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়বে। তবে সেই সময় তারা বলেছিল, কর কমানোয় কর্পোরেট ক্ষেত্রে ঋণ নিয়ে ব্যবসার অগ্রগতি হবে। তবে তেমনটা হয়নি।
দীর্ঘদিনের মন্দা
দীর্ঘদিন ধরে গাড়ি শিল্পে মন্দা, বুনিয়াদি শিল্পে উৎপাদন সংকোচন, নির্মাণ ও পরিকাঠামো শিল্প বিনিয়োগ কমে আসা সহ বিভিন্ন কারণে জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে অর্থনীতির বৃদ্ধির হার ৪.২ শতাংশ নেমে আসতে পারে বলে এসবিআই রিসার্চ রিপোর্টে বলা হয়েছে। এছাড়া অতিবৃষ্টির কারণে কৃষি ফলন নষ্ট ও খনন প্রক্রিয়া ব্যহত হয়। এর আগে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আইএমএফ সকলেই চলতি অর্থবছরে ভারতের বৃদ্ধির অনুমান কমিয়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছিল। সেটি এবার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনল বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
পুরসভাগুলিকে নবান্নের 'নির্বাচনী' নির্দেশিকা, দ্রুত কাজ শেষ করতে নির্দেশ