তেজস্বী বন্দনায় বিজেপি নেত্রী! বিহারে গেরুয়া প্রভাব বাড়তেই রাজনৈতিক সমীকরণ কোন পথে?
বিহার নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইতে এক আসনে জিতেও পরাজয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে আরজেডিকে। তেজস্বীর নেতৃত্বে বিরোধী মহাজোট ম্যাজিক ফিগারের কাছে গিয়েও মোদী-নীতীশের ডবল ইঞ্জিনকে রুখতে পারেনি। তবে এই নির্বাচন নতুন করে তেজস্বীকে তুলে ধরেছে গোটা দেশের রাজনৈতিক মানচিত্রে। তেজস্বী সুনাম করতে শোনা গিয়েছে তাবড় নেতাদের। আর এবার তেজস্বীর সুনাম বিজেপি নেত্রী উমা ভারতীর গলাতেই।
কী বললেন উমা ভারতী?
এদিন উমা ভারতী বলেন, 'তেজস্বী খুব ভালো ছেলে। কিন্তু বিহার একটুর জন্যে বেঁচে গিয়েছে। কারণ এবার মুখ্যমন্ত্রী হলে তেজস্বী সরকার চালাতে পারত না। কারণ তাঁর অভিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে ক্ষমতার চাবিকাঠি থাকল লালুপ্রসাদের হাতেই। আর তা হলে বিহার ফের জঙ্গলরাজের সময়তে ফিরে যেত। তেজস্বী আরও একটু বড় হয়ে গেলে নেতৃত্ব দিতে পারবে।'
যাদব রথ থমকে গেল বিহারে
৯ সেপ্টেম্বর তেজস্বীর জন্মদিন ছিল। সেদিন তেজস্বীকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার 'উপহার' হিসাবে দেওয়ার কথা বলেছিলেন তেজপ্রতাপ সিং। এই আত্মবিশ্বাসের নেপথ্যে ছিল একাধিক বুথ ফেরত সমীক্ষা, যেখানে নীতীশের গদিচ্যুত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। যদিও সেই সব আশায় জল ঢেলে টানা চতুর্থবারের জন্যে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি দখল করতে চলেছেন নীতীশ কুমার।
নির্বাচনী প্রচারে তেজস্বী পাশে পাননি বাবাকে
নির্বাচনের প্রচারের সময় তেজস্বী পাশে পাননি বাবাকে। একাই একের পর এক সভা করেছেন। একদিনে ১৭টি সভা করে রেকর্ড করেছেন। মোদী-নীতীশের ডবল ইঞ্জিন-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মহাজোটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এত কিছুর পর ক্ষমতায় আসতে না পারলেও তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বেই বিহারে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে আরজেডি।
তেজস্বী যাদব কিন্তু দমে যাননি
লালু প্রসাদের শাসন কালের প্রসঙ্গ টেনে এনে বিজেপি তাঁকে বারংবার জঙ্গলের যুবরাজ বলে কটাক্ষ করুলেও তেজস্বী যাদব কিন্তু দমে যাননি। বাবার ছায়া থেকে বের হয়ে এসেছেন। নিজে হাতে তুলে নিয়েছেন দায়িত্ব। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি নিজে বিহারের রাঘোপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৩৮ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন।
এই যাত্রায় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা হল না
তবে এই যাত্রায় মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা হল না। অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী হতে না পারলেও সারা দেশের নজর কেড়েছেন তেজস্বী। মোদী-নীতীশের বিরুদ্ধে একা লড়ে বিহারে একক বৃহত্তম দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে আরজেডি। একাই ৭৫টি আসন পেয়েছে তারা। এদিকে নির্বাচনে বিজেপি জয়ী হয়েছে ৭৪টি আসনে ৷ নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড জিতেছে মাত্র ৪৩টি আসন ৷ গতবারের তুলনায় এবার তাদের ফল খারাপ হয়েছে।
তেজস্বীর উত্থান
২০১০ সালে আরজেডি-র হয়ে প্রথম প্রচারে দেখা যায় তেজস্বী যাদবকে। নীতীশ কুমারের মুখ্যমন্ত্রীত্বেই ২০১৫ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১৫-র বিধানসভা নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে রাঘোপুর কেন্দ্র থেকেই ভোটে লড়েন এবং জিতেও যান। তবে ৩১-এ পা দেওয়া তেজস্বী এখনই মসনদে বসতে না পারলেও ভবিষ্যতের রাজনীতিতে বড় ভূমিকা নিতে চলেছেন তিনি।
নীতীশের মাথায় মুকুট উঠবে কবে? বিহার রাজনীতিতে শুরু দর কষাকষি