যুদ্ধের প্রভাব! ৪ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতির বোঝা চাপিয়ে ধুঁকছে 'দালাল স্ট্রিট'
যুদ্ধের প্রভাব! ৪ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতির বোঝা চাপিয়ে ধুঁকছে 'দালাল স্ট্রিট'
যুদ্ধ চলছে রাজায় রাজায়, আর প্রাণ ওষ্ঠাগত উলু খাগড়ার! নিছক প্রবাদ নয়, এটাই এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের সবথেকে নির্মম বাস্তব। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের আজ সপ্তাহ পার। কিন্তু এই যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব পড়েছে বিশ্ব তথা ভারতের শেয়ার বাজারে। অন্যান্য শুক্রবারের মত মোটেই শুভ দিন নয় এইদিন, কারণ একদিনেই প্রায় ৪লাখ কোটি টাকা বেকার খাতায় চলে গেল বিনিয়োগকারীদের। ফলে 'কৌপন পড়িয়া' রাস্তায় নামার যোগার বাঘা শেয়ার ওস্তাদদের, এমনটাই জানালেন মার্কেট এক্সপার্টরা। আর এর প্রভাব যে শুধুমাত্র বিনিয়োগকারীদের উপড়েই পড়বে তা নয়। দেশের জাতীয় কোষাগার অনেকাংশেই নির্ভর করে শেয়ার বাজারের লাভ লোকসানের উপর, তাই এই ক্ষতির বোঝা যে বর্তাতে চলেছে ভারতের আম আদমির উপরেও, তা বলা বাহুল্য। 'সত্য সেলুকস' কী বিচিত্র এই ক্ষমতা জাহির করার লড়াই!
পথে বসছে দালাল স্ট্রিট!
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব যেমন পড়েছে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর, সেরকমই ভারতের বাজারে তার প্রভাব পড়েছে বিস্তর। শুক্রবার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গে সেনসেক্স ও নিফটি হয় নিম্নমুখী। এদিন সকালে বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই সেনসেক্স পরে ১০৫০.৬৫, নিফটি পরে ৩০৪.৪০। পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদিও একটু উঠেছে বাজার, কিন্তু তাতেও খুব একটা সুরাহা কিছু হবে বলে আশা দেখছেন না শেয়ার ব্রোকাররা। আর এখানেই এককথায় মাথায় হাত দিয়ে বসার জোগার বিনিয়োগকারীদের। কারণ ইতিমধ্যেই নতুন বছরের শুরুতে মার্কেটের অবস্থা বেশ ভালো হওয়ার জন্য পাশাপাশি ইয়ার এন্ডিং-এর আগে শেয়ারে বিনিয়োগের সুসময়ে বহু টাকা বাজারে খাটিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। কিন্তু হঠাত এই যুদ্ধের ফলে বালির বাঁধের মত ধসে যাচ্ছে বাজার। ফলে চূড়ান্ত ক্ষতির আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা।
শেয়ার মার্কেটে আশঙ্কার মেঘ
রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধের জল্পনা যেদিন থেকে শুরু হয়েছে, সেই দিন থেকে আশঙ্কার মেঘ জমেছিল ভারতের শেয়ার মার্কেটে। রাশিয়া-ইউক্রেন এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার পর একাধিকবার বাজারে নেমেছে ধস। আর এখানেই আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা। শেয়ারবাজার সূত্রে খবর, শুক্রবার বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গে নামতে শুরু করে সেনসেক্স ও নিফটি। এদিন বিনিয়োগকারীদের ৪লক্ষ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইক্যুইটি বাজারে ধাক্কা
আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ইক্যুইটি বাজারেও ধাক্কা লেগেছে। বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশের পরিমান ৪,০৯,৫৫৪.৪৪ কোটি টাকা ২,৪৬,৯৬,৪৩৪.৫৭ কোটি টাকায় নেমে এসেছে৷ প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার যখন বাজার বন্ধ হয়, অর্থাৎ দিনের শেষে সেনসেক্স ৩৬৬.২২পয়েন্ট কমে ৫৫ হাজার ১০২.৬৮ অঙ্কে নেমে গিয়েছিল। শুক্রবারের বাজার পতন আরও একবার মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০০৮ মার্কেট রিসেশনের কথা। ফের কি সেই পথেই হাঁটবে বাজার! আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে বিনিয়োগকারীদের।
শেয়ার রেটিং-এ লোকশান
'এশিয়ান পেইন্টস', 'মারুতি সুজুকি', 'হিন্দুস্তান ইউনিলিভার', টাটা প্রজেক্টের 'টাইটান', 'এমন অ্যান্ড এম' ব্যাংকের শেয়ার সবচেয়ে বেশি লোকসান হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার সকালে বাজারে ধস নামার পর এই শেয়ারগুলির এক একটির রেটিং প্রায় ৬.৮ শতাংশ কমে গিয়েছে বলে খবর। জিও ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের প্রধান বিনিয়োগ কৌঁশলী ভিকে বিজয় কুমার জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন এর যুদ্ধের আবহ, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি বাজারের রূপকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দিয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি এইরকম বজায় থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারে তার প্রভাব পড়বে আরো বেশি।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে জের, সপ্তাহান্তে শেয়ারবাজারে বিপুল পতন, ধাক্কা খেল নিফটিও