আজ যুক্তরাজ্য-ভারত পুরষ্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে ইউকে-ইন্ডিয়া উইক ২০১৮, বিস্তারিত জানুন
শুক্রবার রাতে যুক্তরাজ্য-ভারত পুরষ্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে ২০১৮ সালের ভারত-যুক্তরাজ্য সপ্তাহ।
১৮ তারিখ থেকে শুরু হওয়া প্রথম যুক্তরাজ্য-ভারত সপ্তাহ আজ ২২ জুন যুক্তরাজ্য-ভারত অ্যাওয়ার্ডস ২০১৮ দিয়ে শেষ হচ্ছে। ১৮ জুন ভারত-ইউকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজবুত করতে বিশেষ ভূমিকা রাখা ১০০জন ব্যক্তিত্বকে সম্মান জানানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল এই সপ্তাহ। মাঝের দুদিন ছিল ঐতিহাসিক পঞ্চম যুক্তরাজ্য-ভারত লিডারশিপ কনক্লেভ। যেকানে বক্তৃতা করেছেন ভারত ও যুক্তরাজ্যের অনেক রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী, উদ্যোগপতিরা।
১৮ জুন (সোমবার) যুক্তরাজ্য-ভারত সপ্তাহের উদ্বোধন হয় তাজ বাকিংহ্যাম গেট হোটেলে। উদ্বোধন করেন ইউকের সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইন্ট্রান্যাশনাল ট্রেড লিয়াম ফক্স। উপস্থিত ছিলেন শ্যাডো ফরেন সেক্রেটারি এমিলি থর্নবেরি ও সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ডিজিটাল, কালচার, মিডিয়া অ্যান্ড স্পোর্টস, ম্যাট হ্যানককও। অনুষ্ঠানের প্রথমদিন ছিল 'দ্য হান্ড্রেড মোস্ট ইনফ্লুয়েন্সিয়াল ইন ইউকে-ইন্ডিয়া রিলেশনস' এর দ্বিতীয় সংষ্করণ। যুক্তরাজ্য ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন এরকম ১০০ জন ব্যক্তিকে সম্মাননা জানানো হয়। হ্যানকক বলেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে এটা দারুণ সুযোগ।
What a fantastic evening to kickstart the #UKIndiaWeek2018 and the launch of 2nd edition of 100 Most Influential in UK India Relations.
— India Inc. (@IndiaIncorp) June 18, 2018
Here's RT Hon @MattHancock with his copy of 100 UK India !
Find your copy here: https://t.co/NWkrpvkgNr @DCMS @tradegovukIND pic.twitter.com/0RnARGA8ub
The formal launch of #UKIndiaWeek2018 is officially underway with opening remarks from our very own Founder, CEO & respected political strategist @manojladwa ! pic.twitter.com/SOrHjQEz1M
— India Inc. (@IndiaIncorp) June 18, 2018
এরপর ইউকে-ইন্ডিয়া উইক পৌঁছায় বাকিংহামশায়ারে। ডে ভেরে লাতিমের এস্টেট-এ ২০-২১ তারিখ চলে পঞ্চম বার্ষিক ইউকে-ইন্ডিয়া লিডারশিপ কনক্লেভ। এই সম্মেলনে ভারত ও যুক্তরাজ্যের অনেক রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী, উদ্যোগপতিরা বক্তব্য রাখেন। যুক্তরাজ্য-ভারতের কৌশলগত সম্পর্কের বিকাশ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই সম্মেলন যথেষ্ঠ কার্যকরি হয়েছে। সম্মেলনের মূল ফোকাস ছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন করে ঢেলে সাজানো এবং তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্রমবর্ধমান চাহিদা-র উপর। এছাড়া আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রগতিশীল আলোচনা ও সভা হয়।
It's a beautiful day here in Buckinghamshire & we're delighted to see dignitaries have already begun networking in this retreat style setting. Here's to a cracking day 1 of the UK-India Leadership Conclave! #UKIndiaWeek2081 pic.twitter.com/jVF1X9dBtJ
— India Inc. (@IndiaIncorp) June 20, 2018
দুদিনের এই সম্মেলন শুরু হয় ব্রিটেনে ভারতের রাষ্ট্রদূত ওয়াই কে সিনহার উদ্বোধনী বক্তৃতার মধ্য দিয়ে। বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনের ডেমোক্র্যাট সাংসদ ভিনসেন্ট কেবল, নীতি আয়োগের ভাইস-চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ডঃ রাজীব কুমার, ইনফোসিস-এর প্রেসিডেন্ট মোহিত জোশি, ডেইলি হান্টের প্রেসিডেন্ট উমঙ্গ বেদি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল, ইন্ডিয়া আইএনসির প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও মনোজ লাডওয়া প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ব্রেক্সিটের পরবর্তী ইউকে-ভারতের সম্পর্কের উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়। দুই দেশের ২০০ জনের বেশি অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
ইনফেসিসের চেয়ারম্যান মোহিত জোশি বলেন বলেন, 'ভারতে রিস্ক ক্যাপিটালের প্রয়োজন। ভারতকে আরও বেশি ঝুঁকি নিতে হবে। এআই, অটোমেশন ইত্যাদিতেই ভবিষ্যতের সুযোগ রয়েছে। ব্রিটিশ ইউনিভার্সিটিগুলিতে এই বিষয়গুলি নিয়ে অনেক অত্যাধুনিক কাজ চলছে।' তিনি ভারতের কর ব্যবস্থা ডিজিটাল করার পক্ষেও সওয়াল করেন।
"Aadhaar, UIP, #GST - in the long run will create solid foundation for a digital tax system in India" @joshimohit_ygl speaks with @swapan55 @josh_hardie @vincecable & @edielush @bdoaccountant Global Britain Meets Global India panel @ UK-India Conclave #UKIndiaWeek2018 pic.twitter.com/xcBapYBaJw
— India Inc. (@IndiaIncorp) June 20, 2018
নীতি আয়োগের চেয়ারম্যান রাজীবকুমার মূলতঃ গত চার বছরে মোদী সরকারের আমলে বদলে যাওয়া ভারতের ছবিটা তুলে ধরেন। তিনি জানান, ভারতে বিনিয়োগের পরিবেশ আগের চেয়ে বদলেছে। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় আগে কিছুই করা হতো না। তবে দেশ সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছে। এখন পরিস্থিতি বিচার করে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে।
Five year plans, rarely used for anything. We have moved away from that and focus on producing action plans’ @RajivKumar1 vicechair @NITIAayog in conversation with @edielush at the UKIndia Conclave 2018 #UKIndiaWeek2018 pic.twitter.com/jLhWvzj31F
— India Inc. (@IndiaIncorp) June 20, 2018
ভারতীয় ভাষাকে এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন ডেইলি হান্টের প্রেসিডেন্ট উমঙ্গ বেদি। ফিউচার অ্যান্ড ক্রিয়েটিভিটি শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রতি মুহূর্তে ভারতে প্রযুক্তির উন্নতি হচ্ছে। আগামী এক বছরের মধ্যে ৮০ শতাংশ লোকের হাতে স্মার্টফোন পোঁছে যাবে। কিন্তু তারা সবাই ইংরাজী জানবেন তা তো নয়। তাই আগামী দিনে আঞ্চলিক ভাষার কনটেন্টের চাহিদা বাড়বে।
‘Content is getting shorter and shorter to catch people’s attention. What we need is a level playing field for an alternate Indian content platform’ @umang_bedi on the future of Indian Media @ UKIndia Conclave #UKIndiaWeek2018 pic.twitter.com/2gh9KCrwbz
— India Inc. (@IndiaIncorp) June 20, 2018
বাকিংহামশায়ারে না গেলেও নয়া দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ভআরতের রেলমন্ত্রী তথা কয়লা মন্ত্রী পিযুশ গোয়েলও। তিনি জানান, গত চারবছরে ভিত গড়ের কাজ হয়েছে। যার উপর নির্ভর করে করে আগামী তিন চার দশকে ভারত এগিয়ে যাবে। তিনি জাবি করেন, আমরা ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ বাড়াতে পেরেছি। আজ আমরা বিশ্ব অর্থনীতিতে যে জায়গায় পৌঁছেছি তা আগে কোনওদিনই পারিনি। তিনি বলেন ভোট রাজনীতির কথা না ভেবে ভবিষ্যতের বড় পরিবর্তনের দিকে ভারত মন দিয়েছে। স্বচ্ছ্ব অর্থনীতির দেশ হিসাবেই বিশ্বের সামনে নিজেদের মেলে ধরেই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ভারত সম্মান আদায় করে নিতে পেরেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই ইউ-ভারত সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়ে সরব ইন্ডিয়া ইনকর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা মনোজ লাডওয়া। সম্মেলনে তিনি আবার তুলে ধরেন, ভারত যুক্তরাজ্য লেনদেনের সম্পর্কের ঊর্ধে উঠে রপান্তরশীল, আধুনিক পৃথিবীর উপযোগী এক বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা।
যুক্তরাজ্য-ভারত সপ্তাহ শেষ হচ্ছে যুক্তরাজ্য-ভারত অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। গ্লোবাল পার্টনারশিপ তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন, যুক্তরাজ্য ও ভারতের এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরষ্কৃত করা হবে। ব্যবসা, রাজনীতি, কূটনীতি, কলা ও সংষ্কৃতি জগতের অন্তত চারশ' জন অগ্রগন্য মানুষ থাকছেন এক ছাতার তলায়।
যুক্তরাজ্য-ভারত অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের বিচারকমন্ডলীও অবশ্য তারকা খচিত। আছেন কমনওয়েলথ এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড, শ্যাডো সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ব্যারি গার্ডিনার, প্রাক্তন সেক্রেটারি অব স্টেট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট প্রীতি প্যাটেল, ভারতী এন্টারপ্রাইজের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান সুনীল ভারতী মিত্তল, লেখিকা ও ব্রডকাস্টার বরখা দত্ত ও স্টারকাউন্টের সিইও এডুইনা ডুন।
এই বিচারকরা বিভিন্ন ক্ষেত্রের মোট ২৫ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বেছে নিয়েছেন এবছরের ইউকে-ইন্ডিয়া অ্যাওয়ার্ডস প্রাপক হিসেবে। ভোডাফোন ফাউন্ডেশন, রিড স্মিথ, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসর এবং স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড -কে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট প্রোজেক্ট অফ দ্য ইয়ারে মনোনীত করা হয়েছে। দ্য সায়েন্স মিউজিয়াম, বিবিসি নিউজ ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ, দ্য পার্টিশন মিউজিয়াম অ্যান্ড দ্য জেমস আরস্কিন, ২০০ নট আউট ফিল্মস এবং কার্নিভ্যাল সিনেমাস মনোনীত হয়েছে মিডিয়া, আর্টস এবং কালচার অ্যাওয়ার্ডের জন্য।
দ্য স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস অর্গানাইজেশন অফ দ্য ইয়ার-এর জন্য মনোনীত হয়েছে, লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ, ওয়াধাওন গ্লোবাল ক্যাপিটাল এবং বার্কলেস ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। দ্য ম্যাঞ্চেস্টার ইন্ডিয়া পার্টনারশিপ, টেকইউকে, কনফেডারেশন অফ ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড মিডল্যান্ড ইঞ্জিন -কে মনোনীত করা হয়েছে ইনভেস্ট ইন্ডিয়াজ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন অর্গানাজেশন অফ দ্য ইয়ার-এর জন্য ।
ওয়েডলেক বেল, লিঙ্কলেটারস, সিরিল অমরচাঁদ মঙ্গলদাস অ্যান্ড ট্রাইলিগাল মনোনীতহয়েছে বছরের সেরা ল' ফার্ম হিসেবে। কনসালটেন্সি ফার্ম-এর পুরষ্কার পাচ্ছে সন্নাম এস ফোর, গ্র্যান্ট থর্নটন অ্যান্ড কিংসটন স্মিথ। অভিযান মিডিয়া, স্টার্লিং মিডিয়া এবং অগিলভি অ্যান্ড ম্যাথর বছরের সেরা পিআর ফার্ম হিসেবে মনোনীত হয়েছে।
ইউকে-ইন্ডিয়া উইনিং পার্টনারশিপে অসামান্য অবদানের জন্য 'প্রোফেশনাল অফ দ্য ইয়ার'-এর পুরষ্কার পাচ্ছেন বিডিও-র পার্টনার অরবিন্দ চ্যাটওয়াল, সিরিল অমরচাঁদ মঙ্গলদাসের ফাউন্ডার ও ম্যানেজিং পার্টনার সিরিল শ্রফ, টাটা সন্সের এগজিকিউটিভ ডাইরেক্টর ডেভিড ল্যান্ডসম্যান এবং পেনিংটনস ম্যাঞ্চেস এলএলপির পার্টনার ও ইমিগ্রেশন হেড প্যাট সাইনি।