এবার তো প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য টেন্ডার ডাকা হবে, অগ্নিপথ প্রকল্প ইস্যুতে তীব্র কটাক্ষ উদ্ধব ঠাকরের
এবার তো প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের জন্য টেন্ডার ডাকা হবে, অগ্নিপথ প্রকল্প ইস্যুতে তীব্র কটাক্ষ উদ্ধব ঠাকরের
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সেনাবাহিনীতে স্বল্পমেয়াদি নিয়োগ প্রকল্প 'অগ্নিপথ'-কে ইস্যু করে কেন্দ্রের সমালোচনা করলেন। কেন্দ্রের অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ক্রমেই বিক্ষোভ হিংসার আকার ধারণ করেছে। একাধিক ট্রেন ও বাসে বিক্ষোভকারীরা আগুন লাগিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও মহারাষ্ট্র থেকে হিংসাত্মক কোনও বিক্ষোভের খবর নেই।
বিজেপি সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করে উদ্ধব ঠাকরে বলেন, 'আমাদের হৃদয়ে রাম রয়েছে। কিন্তু তা বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে হবে না। কাজ করে যেতে হবে। কেবল ভগবানের নাম জপ করা যথেষ্ট নয়, মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।' অগ্নিপথ প্রকল্পের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'যেভাবে এগোচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আগামীকাল আপনারা ভাড়ায় সরকার চালাবেন এবং টেন্ডার আনবেন। আপনারা ভবিষ্যতে মুখ্যমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর জন্য টেন্ডার প্রকাশ করবেন। আপনারা ব্যবহার করে তা ফেলে দেওয়ায় বিশ্বাসী।'
তিনি বলেন, চার বছর পর অগ্নিপথের অধীনে নিয়োগ করা সেনার চাকরি থাকবে না। একজন শিক্ষিত তরুণকে আপনারা ১৭ বছর বয়সে নিয়োগ করছেন সেনাবিভাগে। চার বছর পরে তাকে আবার সেনাবাহিনী থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। তারপর ওই যুবক কী করবে, কোথায় যাবে? এই অবস্থায় দেশের যুবকরা রাস্তায় নামলে তার দায় কার। তিনি বলেন, 'সেই প্রতিশ্রুতি দেওয়া উচিত যা রক্ষা করা যায়। কিন্তু আমাদের কেন্দ্র সরকার এমন প্রতিশ্রুতি দেয়, যা তারা রক্ষা করতে পারে না।
লম্বা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল দেশবাসীকে। আপনারা বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর সেই চাকরি দেওয়ার নাম করে কী করা হল? অগ্নিপথ, অগ্নিবীরের মতো বড় বড় নাম ব্যবহার করে প্রকল্প ঘোষণা করছেন। সেখানে ভারতের তরুণদের সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়া হবে। যার সময়সীমা মাত্র চার বছর। এভাবেই তিনি চাকরির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছেন। আর চার বছর পর যুবকরা আবার বেকার হয়ে যাবেন।'
পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। উদ্ধব ঠাকরে বলেন, নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তাতে দেশবাসীকে কতটা বিপদে পড়তে হয়েছিল, তা সকলের মনে রয়েছে। তারপর কৃষি আইন পরিবর্তন করল কেন্দ্র। কৃষকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। কৃষকদের জেদের কাছে কেন্দ্র পিছু হটতে বাধ্য হয়। কৃষি আইন কেন্দ্র বাতিল করে। এখন অগ্নিপথ প্রকল্প। এই প্রকল্পের বিরোধিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিক্ষোভের খবর আসতে শুরু করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী এক একটা প্রকল্প বা আইন নিয়ে আসবেন, আর দেশজুড়ে অশান্তি শুরু হয়। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার কেন্দ্র সরকার অগ্নিপথ প্রকল্পের ঘোষণা করে। তারপর থেকেই দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। অগ্নিপথ প্রকল্পের অধীনে নিয়োগ সেনাদের চাকরির মেয়াদ মাত্র চার বছর। এর বিরোধিতা করেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভ হিংসার আকার ধারণ করেছে। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, তেলেঙ্গানায় এই বিক্ষোভ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। কেন্দ্রের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা অগ্নিপথ প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, দেশের সেনাবাহিনীতে তরুণদের বেশি পরিমাণে নিয়োগ করতেই এই অগ্নিপথ প্রকল্পের সূচনা করা হয়েছে।