১২ ঘণ্টার মধ্যে পরপর দু’জন রাজনৈতিক নেতা খুন, ১৪৪ ধারা জারি কেরলের আলেপ্পিতে
কেরলের আলেপ্পি জেলায় পরপর দুই দলীয় নেতা খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। সোশ্যাল ডেমোক্রেটেক পার্টি অফ ইন্ডিয়া (এসডিপিআই)–এর রাজ্য সম্পাদক ও বিজেপি নেতা খুন হওয়ার পর রবিবারর পুলিশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে দেয়। একদিনের মধ্যেই পরপর দুটি খুন হওয়ায় উত্তাল গোটা রাজ্য।


২৪ ঘণ্টার মধ্যে দু’জন রাজনৈতিক নেতা খুন
এসডিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক ও বিজেপি নেতার খুনের ঘটনা পরপর ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘটে যাওয়ার পর রবিবার পুলিইশ আলেপ্পি জেলায় দু'দিনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। কেরলের এসডিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক কে এস শানের ওপর শনিবার রাতে ভয়াবহ হামলা হয়। সেই সময় তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। দলের পক্ষ থেকে এই হামলার পেছনে আরএসএসের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গুরুতর জখম অবস্থায় শানের মৃত্যু হয় কোচি হাসপাতালে শনিবার মধ্যরাতে। এই মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য সম্পাদক রঞ্জিত শ্রীনিবাসকে নিজের বাড়িতেই আততায়ীরা কুপিয়ে খুন করেন। রবিবার এই আততায়ীরা শ্রীনিবাসের বাড়িতে ঢুকেছিল বলে জানা গিয়েছে।

এসডিপিআই নেতা খুনের বদলা
পুলিশ জানিয়েছে যে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শ্রীনিবাসের ওপর মারাত্মক হামলা হয়েছে এবং তা শানের খুনের বদলা হিসাবে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, এসডিপিআই নেতা তাঁর বাইকে করে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় এক গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে এবং তিনি বাইক থেকে পড়ে যান। এরপর আততায়ীরা তাঁকে খুন করে। এই ঘটনার পরই বিজেপি নেতার খুনের ঘটনা সামনে আসার পর আলেপ্পি জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

১১ জনকে গ্রেফতার
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, বিজেপি নেতাকে খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন সরাসরি খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতাও ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন।

গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিন্দা
রবিবার সকালেই কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন গোটা ঘটনার নিন্দা করে বলেন, 'সরকার কাউকে এভাবে আইন হাতে নিতে দেবে না। অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। আলেপ্পিতে যে জোড়া রাজনৈতিক হত্যা হয়েছে, তার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পুলিশ খুঁজে বের করবেই।' রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'এই ধরনের নিম্ন মানসিকতা ও অমানবিক ঘটনা রাজ্যের পক্ষে ভাল নয়। হত্যাকারী ও তাদের মানসিকতাকে আলাদাভাবেই দেখা উচিত, তাদের সঙ্গে সাধারণ সমাজকে মিশিয়ে ফেলা উচিত নয়।'

সিপিআই (এম) নেতা খুন
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই কেরলের তিরুভাল্লায় একজন সিপিআই(এম) নেতাকে ছুরি মেরে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়। নিহত নেতার নাম সন্দীপ কুমার। তিনি পাঠানমথিট্টা জেলার পেরিঙ্গারা গ্রামের সিপিআই(এম) স্থানীয় সম্পাদক ছিলেন। ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে আরএসএস-এর দিকে। পুলিশ জানিয়েছে যে মৃত বাম নেতার শরীরে ১১টি ছুরিকাঘাতের ক্ষত ছিল। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি মারা যান।
ছবি সৌ:ইনস্টাগ্রাম