অন্ত্যেষ্টির আগে বদলে গেল মৃতদেহ! দিল্লির হাসপাতালের ভূমিকায় হতাশ দুই পরিবার
দিল্লির এলএনজেপি হাসপাতালে ঘটে গেল আজব ঘটনা। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টও শুক্রবার জাতীয় রাজধানীতে করোনা ভাইরাসের আবহে হাসপাতালের পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করল।
দিল্লির এলএনজেপি হাসপাতালে ঘটে গেল আজব ঘটনা। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টও শুক্রবার জাতীয় রাজধানীতে করোনা ভাইরাসের আবহে হাসপাতালের পরিস্থিতি 'ভয়াবহ' বলে বর্ণনা করল। দু'টি পরিবারের দাবি, কেবল হাসপাতালে যথাযথ পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত করা হয়নি, তাঁদের পরিজনের মৃতদেহও বদলে দেওয়া হয়েছে।
একটি পরিবারকে দুটি মৃতদেহ দাহ করতে হয়। তার মধ্যে একটি ছিল তার বাবার। আর এক পরিবার তাদের মায়ের মৃতদেহ অন্ত্যেষ্টি করতে অস্বীকার করে। এক পরিবারের দাবি, হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক নিগমবোধ ঘাটে দেহ হস্তান্তর করার কয়েক ঘন্টা পরে হাসপাতাল থেকে একটি ফোন এসেছিল, যেখানে তিনি ভুল করে অন্য কোনও মহিলার অন্ত্যেষ্টি করেছিলেন বলে জানানো হয়।
ওই পরিবার জানায়, গত ৬ জুন তাদের বাবা এলএনজেপি হাসপাতালে মারা যান। তাদের জানানো হয়েছিল যে, মরদেহ দেখানো হবে। সেখানে মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়। বলা হয়েছিল শ্বাসকষ্টের কারণে তিনি মারা গেছেন। তারপরে তারা দেহটি ঢেকে একটি কাগজ উপরে রাখে। সেখানে নাম, বয়স, লিঙ্গের বিবরণ ছিল।
তারপরে প্রতিটি অ্যাম্বুলেন্সে চার থেকে পাঁচটি মরদেহ নিগমবোধ ঘাটে প্রেরণ করা হয়। পরিবারগুলি ঘাটে পৌঁছে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছিল সমস্ত কাগজপত্র দেখে মরদেহের অন্ত্যেষ্টি করারপ প্রক্রিয়া শুরু হয়। অ্যাম্বুলেন্সের চালক দেহ হস্তান্তর করার পর আর মুখ দেখানো হয়নি।
ওই পরিবার জানায়, আমরা পুরোহিতকে একাধিকবার মুখ দেখাতে অনুরোধ করলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। কার দেহটি তা পরীক্ষা না করেই অন্ত্যষ্টি করে দেওয়া হয়। আমাদের কাছে আর কোন উপায় ছিল না," চন্দ্র বলেছিলেন। এরপর এলএনজেপি হাসপাতালে ফোন করে জানায়, বাবার দেহটি তখনও অ্যাম্বুলেন্সে রয়েছে।
একই ঘাটে মায়ের দেহ অন্ত্যেষ্টির জন্য জড়ো হয়েছিল ছেলেরা। তাদের মালভিয়া নগর হাসপাতাল থেকে এলএনজেপিতে রেফার করা হয়েছে। মালভিয়া নগরের চিকিৎসকরা বলেছেন যে তারা কোভিড-১৯ সন্দেহ করেছিল এবং তাদের মাকে পরীক্ষার জন্য রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে পাঠাচ্ছিলেন। তবে অ্যাম্বুলেন্স চালক আমাদের এলএনজেপিতে নিয়ে এসেছিলেন।
মালভিয়া নগর হাসপাতাল থেকে মেডিকেল পেপারগুলিও কেবল অ্যাম্বুলেন্স চালককে দেওয়া হয়েছিল, তাই আমাদের কোনও ধারণা ছিল না। আমরা আমাদের গাড়িতে অ্যাম্বুলেন্সটি অনুসরণ করেছিলাম। এলএনজেপিতে পৌঁছনোর পরেও আমার কোনও ধারণা ছিল না যে তারা আমার মাকে কোথায় নিয়ে গেছে। আমি বারবার তার জন্য জিজ্ঞাসা করেছি। কিন্তু কোনও তথ্য পাইনি।
৬ জুন সকালে তারা আমাকে মায়ের দেহটি দেখায়। তারা আমাকে নিগমবোধে যেতে বলেছিলেন এবং বলেছিলেন যে মৃতদেহ সেখানে পাঠানো হবে। আমরা সেখানে অপেক্ষা করছিলাম। এলএনজেপি অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার দেহ হস্তান্তর করে জানান, সেটি আমার মায়ের দেহ। আমি যখন তাঁকে মুখ দেখাতে বলি, তিনি অস্বীকার করেন। এরপর আমরা হাসপাতালে ফিরে গিয়েছিলাম এবং কর্তৃপক্ষ জানায় অন্য কেউ আপনার মাকে অন্ত্যেষ্টি করেছে।