দুই পুলিশ ছুটিতে, দাবি মানা না হলেও জয়ের দাবি কেজরিওয়ালের
আপ মন্ত্রিসভার সদস্যেদের নির্দেশ অমান্য করায় অভিযুক্ত তিন পুলিশ অফিসারকে অপসারণের দাবীতে পথে নামেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও তাঁর ৬ মন্ত্রী। তার পর অবশ্য ড্যানিশ মহিলার গণধর্যণের পর এলাকা পরিদর্শকের ভূমিকাও ধরনার ইস্যুর মধ্যে সংযুক্ত হয়। এরপর দু'দিন ধরে টানা চলল ধরনা, বিতর্ক, পুলিশ-মন্ত্রী খণ্ডযুদ্ধ। চাপে পড়ছিল পুলিশও। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছিল। তাই পরিস্থিতির সামাল দিতে শেষমেষ মধ্যবর্তী একটা রাস্তাই বেছে নিল কেন্দ্রীয় সরকার। মালব্য থানা ও পাহাড়গঞ্জের এসএইচও-কে সাসপেন্ড বা বদলি না করে ছুটিতে পাঠিয়েই আপ সরকারের মুখরক্ষা করল কেন্দ্র।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা কৌশলে আপ সরকারের মুখরক্ষার রাস্তা বাতলে দিল কেন্দ্র
প্রথমে নিজেদের দাবি নিয়ে কোনওরকম সমঝোতায় যেতে অস্বীকার করেন কেজরিওযাল ও তাঁর সরকার। এমনকী আপের তরফে হুমকি দেওয়াও হয়েছিল যতদিন না তিন পুলিশ আধিকারিককে অপসারণ করা হবে ততদিন দিল্লির রাজপথে এই ধরনাই চলবে। বাধা দেওয়া হবে প্রজাতন্ত্র দিবস পালনেও। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যেবেলায় দুই পুলিশ অফিসারকে ছুটিতে পাটানোর কথা ঘোষণা হতেই নিজের ও দিল্লির জনতার জয় ঘোষা করে ধরনা তুলে নেন কেজরিওয়াল।
কেজরিওয়ালের প্রধান দাবি ছিল, দিল্লি পুলিশকে রাজ্য সরকারের হাতে দিতে হবে৷ আর আপাতত, তিন জন এসএইচও-কে নিদেনপক্ষে সাসপেন্ড করতে হবে৷ প্রথম দাবি মানা হয়নি, দ্বিতীয় দাবি নিয়েও সমঝোতা করেছে কেন্দ্র৷ তার পরেও এটাকে নিজের জয় বলে ব্যাখ্যা করছেন কী করে কেজরিওয়াল এই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। দিল্লির বিজেপি নেতা বিজয় গোয়েল প্রশ্ন তুলেছেন দুই পুলিশ আধিকারিককে যদি ছুটিতে পাঠালেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী খুশি হতেন, তার জন্য এত হাঙ্গামা করার প্রয়োজন ছিল কী?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কেজরিওয়াল নিজেও বুঝেছিলেন এই ধরনা বেশিদিন চালানো সম্ভব নয়। কিন্তু পরিস্থিতি যা ছিল তাতে পিছিয়ে আসাও যাচ্ছিল না। অন্যদিকে কেন্দ্রের উপরও চাপ তৈরি হচ্ছিল। কারণ কেজরিওয়ালের এই ধরনা বেশিদিন চললে জনসমর্থন হারানোর ক্ষেত্রে একটা কারণ হতে পারত। কিন্তু আসন্ন লোকসভা ভোটে মোদী ঝড় আটকাতে কংগ্রেসের এখন একমাত্র হাতিয়ার আম আদমি পার্টি। তাই কেজরিয়ালের ধরনা তুলে নেওয়ার জন্য একটা বাহানা তৈরির জায়গা করে দিল কংগ্রেস। আর কেজরিওয়ালও এমন সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিলেন। ব্যস দুয়ে দুয়ে চার হয়ে গেল। স্বস্তি পেল পুলিশও।