হাইকোর্টের রায়, ত্রিপুরার রাজ পরিবার ঐতিহাসিক নীরমহলের দাবি হারাল
ত্রিপুরা হাইকোর্টের রায়ে মানিক্য রাজ পরিবার ঐতিহাসিক নীরমহলের ওপর তাদের দাবি হারাল। নীরমহলের দাবি করে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল রাজপরিবার।
ত্রিপুরা হাইকোর্টের রায়ে মানিক্য রাজ পরিবার ঐতিহাসিক নীরমহলের ওপর তাদের দাবি হারাল। নীরমহলের দাবি করে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল রাজপরিবার। কিন্তু হাইকোর্ট সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছে।
অ্যাডভোকেট জেনারেল অরুণকান্তি ভৌমিক জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি একে কুরেশির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ আবেদনকারীর দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। রাজ পরিবারের সদস্য প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য দেববর্মা এবং তাঁর মা বিভুকুমারী দেবী হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে সেই সম্পত্তি সরকারের।
মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুর ১৯৩০ সালে এই নীরমহল তৈরি করেছিলেন। যার চারপাশ দিয়ে ছিল রুদ্রসাগর লেক। রাজ পরিবারের গ্রীষ্ণকালীন আবাস তৈরি করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সংস্থা মার্টিন অ্যান্ড বার্ন। নয় বছর সময় লেগেছিল এটি তৈরি করতে।
লালসাদা প্রাসাদ ত্রিপুরার ৫০০ বছরের পুরনো মানিক্য রাজবংশের মুকুটের মতোই। বর্তমানে এটি পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রিয় দর্শনীয় স্থান। ত্রিপুরার লেক প্যালেস নামে অধিক জনপ্রিয় এটি। ভারতে জল দ্বারা পরিবেষ্টি রাজপ্রসাদের এটিই একটি। অপরটি হল রাজস্থানের জলমহল।
রাজ পরিবারের সদস্য কিরিট বিক্রম কিশোর মানিক্য দেববর্মা ১৯৭৪ সালে প্রাসাদটি সরকারের হাতে তুলে দিয়েছিলেন এর রক্ষণাবেক্ষণ এবং সাধারণ মানুষের জন্য। ২০০৫ সালে তাঁরই স্ত্রী বিভুকুমারী দেবী এবং ছেলে প্রদ্যোৎ কিশোর মানিক্য দেববর্মা এই প্রাসাদের অধিকার দাবি করে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন।
দশ বছর পর ২০১৫ সালে সিভিল জাজ রাজপরিবারের পক্ষে রায় দিয়ে প্রাসাদটি তাদের হাতে তুলে দিতে সরকারকে নির্দেশ দেয়। যদিও সরকার সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যায়। প্রধান বিচারপতি একে কুরেশি এবং বিচারপতি অরিন্দম লোধ রাজপরিবারের দাবি খারিজ করে দেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল অরুণকান্তি ভৌমিক বলেছেন, হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েছে। যেখানে রাজ্য সরকার বলেছে, প্রাসাদের অধিকার ত্যাগ করেছিল রাজ পরিবার। তাই রাজ্য সরকার বর্তমানে এই সম্পত্তির মালিক। যদিও প্রদ্যোত কিশোর মানিক্য দেববর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত স্বীকার করে নিয়েছে, নীরমহলের বিনিময়ে তাঁর বাবা কিংবা তাদের পরিবারকে সরকার কোনও টাকা দেয়নি।