রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাতের পরিবেশে ত্রিপুরা নিয়ে চাপে মমতা
কংগ্রেস ভাঙিয়ে ত্রিপুরায় পায়ের তলার মাটি যেটুকু শক্ত করেছিল তৃণমূল, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে সমর্থন বিতর্কে সেটুকও পলকা হয়ে যেতে বসেছে এবার। যে কোনও সময় ধসে যেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের গড়া ভিত।
রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে সংঘাত চরমে পৌঁছেছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যা্য়ের। একদিকে পাহাড় জ্বলছে, অন্যদিকে বসিরহাটও উত্তপ্ত। এরই মধ্যে ত্রিপুরা নিয়ে প্রবল চাপে পড়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায় তাঁর দল তৃণমূলের অস্তিত্ব সংকটের মুখে।
কংগ্রেস ভাঙিয়ে ত্রিপুরায় পায়ের তলার মাটি যেটুকু শক্ত করেছিল তৃণমূল, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে সমর্থন বিতর্কে সেটুকও পলকা হয়ে যেতে বসেছে এবার। যে কোনও সময় ধসে যেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেসের গড়া ভিত। শুক্রবার ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সুদীপ রায় বর্মন সাফ জানিয়ে দিলেন, 'আমরাও আর কেন্দ্রীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চাইছি না। আমাদের ভবিষ্যৎ পন্থা এ মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত করে ফেলব আমরা।'
রাজনৈতিক মহল মনে করছে সুদীপ রায় বর্মনদের বিজেপি-যাত্রা এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। অঙ্কুরেই বিনষ্ট হতে বসেছে ত্রিপুরা রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের অস্তিত্ব। যেভাবে শুরু, সেভাবেই শেষ হয়ে যাচ্ছে একটা রাজ্যের সংগঠন। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটিতে বিজেপির মঞ্চে গিয়ে ছয় তৃণমূল বিধায়ক রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী রামনাথ কোবিন্দকে সমর্থনের কথা জানানোয় ত্রিপুরা তৃণমূলের সংকট তীব্র হল।
এ প্রসঙ্গে সুদীপ রায় বর্মন জানান, 'আমরা রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে বিরোধী জোটের প্রার্থীকে সমর্থন না করার কথা আগেই জানিয়েছিলাম। তাঁকে কেন সমর্থন করা সম্ভব নয়, তাও ব্যাখ্যা করেছিলাম। যেখানে সিপিএমের সমর্থন রয়েছে, সেখানে আমরা থাকব না। বিজেপি-র পক্ষ থেকে সমর্থন চাওয়া হয়েছিল, সেই কারণেই আমরা রামনাথ কোবিন্দকে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থনের কথা তাঁর অনুষ্ঠান মঞ্চে গিয়েই জানিয়ে এলাম।'
তিনি আরও বলেন, 'এই সমর্থনের সঙ্গে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা বিজেপিতে যাব কি না, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আমরা সমস্ত দরজাই খোলা রাখছি। তবে তৃণমূল কংগ্রেস কেন্দ্রীয় তরফে তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করায়, আমরাও আর কোনওভাবে যোগাযোগ রাখতে চাইছি না। যোগাযোগ রাখছিও না তৃণমূল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে।'
তবে ত্রিপুরা তৃণমূল যে বিজেপি-র পথে বাড়িয়ে রয়েছে, সেই ইঙ্গিত মিলেছে সুদীপ রায় বর্মনের কথাতেই। কেননা তিনি কংগ্রেসে ফেরাকে 'ক্লোজড চাপ্টার' বলছেন, আর তৃণমূলের সঙ্গেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সিপিএম যখন শত্রু তখন একটি দলই পড়ে থাকছে যাওয়ার জন্য, তা হল বিজেপি। প্রকাশ্যে না বললেও সুদীপ রায় বর্মন ব্রিগেডের পদ্মশিবিরে যাওয়া প্রায় চূড়ান্ত বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতির হাত ধরেই তাঁরা বিজেপিতে ঢুকতে পারেন বলে খবর।