হিন্দু মহিলার সঙ্গে ট্রেনে একসঙ্গে সফর, গণপিটুনি মুসলিম ব্যক্তিকে, ভিডিও ভাইরাল নেট দুনিয়ায়
গণপিটুনি মুসলিম ব্যক্তিকে
ফের 'লাভ জিহাদ’–এর ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল মধ্যপ্রদেশ। এ রাজ্যের উজ্জ্বয়িনিতে এক মুসলিম ব্যক্তিকে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের হাতে বেধড়ক মার খেতে হল। কারণ তিনি এক হিন্দু মহিলার সঙ্গে সফর করছিলেন। মঙ্গলবার পুলিশ এই ঘটনার কথা জানিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে যে এই ঘটনাটি গত ১৪ জানুয়ারি ঘটলেও তা প্রকাশ্যে আসে যখন এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পিন্টু কৌশল, যিনি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সদস্য সহ অন্যান্যরা ট্রেন থেকে এক ব্যক্তিকে টেনে–হিঁচড়ে বের করে আনেন এবং তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় উজ্জ্বয়িনি স্টেশনে। যে মহিলা ওই ব্যক্তির সঙ্গে ট্রেনে সফর করছিলেন তিনি ইন্দোর জেলার মাউয়ের বাসিন্দা, তাঁকে উন্মত্ত জনতাকে অনুসরণ করতে দেখা যায়।
কৌশল পরে অবশ্য দাবি করেছেন যে বিবাহিত হিন্দু ওই মহিলাকে মুসলিম যুবক ভুলভাবে পরিচালনা করেছিল, যিনি নিজেও বিবাহিত এবং সন্তান রয়েছে এবং তাঁরা আজমেরে আবার বিয়ে করার জন্য যাচ্ছিলেন। কৌশল বলেন, 'আমাদের কাছে এ বিষয়ে তথ্য আসে এবং আমরা তাঁদের ট্রেনের মধ্যেই হাতেনাতে ধরি। আমরা এরপর তাঁদের উজ্জ্বয়িনির জিআরপির হাতে তুলে দিই পুলিশি পদক্ষেপের জন্য। কারণ এটা লাভ জিহাদের ঘটনা।’ তবে উজ্জ্বয়িনি জিআরপির এসপি নিবেদিতা গুপ্তা বলেছেন, 'ওই ব্যক্তি ও মহিলা তাঁরা পারিবারিক বন্ধু এবং ওই মহিলার মাও সেই কথাই জানিয়েছেন। আমরা তাঁদের ছেড়ে দিয়েছি।’ তিনি এও জানিয়েছেন যে উন্মত্ত জনতার হাতে মার খাওয়ার পরও ওই ব্যক্তি কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি তাই পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত কোনও মামলা দায়ের করছে না।
অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার ও সমাজ কর্মী অরুণ গুর্টু এ ধরনের ঘটনাকে হিংসাত্মক আচরণ বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'এই কাজটি নৈতিকভাবে ভুল এবং আইনগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। পুলিশকে এই ধরনের কার্যকলাপের পুনরাবৃত্তি বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া উচিত কারণ গেরুয়া সংস্থা বা অন্য কোনও ব্যক্তি এভাবে কাউকে আটকাতে পারে না এবং প্রকাশ্যে হয়রানি করার অধিকার নেই।’ প্রসঙ্গত দেশের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এই লাভ জিহাট আটকানোর জন্য আইন নিয়ে আসা হয়েছে।