কীভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে মোদীর বুলেট ট্রেন প্রকল্প, প্রকাশ্যে আরটিআই-এর বিস্ফোরক জবাব
পশ্চিম রেলওয়ে বুলেট ট্রেন চালালে বিপুল লোকসানের মুখে পড়বে। আরটিআই বা তথ্য জানার অধিকার আইনে প্রশ্ন করে এমন বিস্ফোরক জবাব সামনে এসেছে।
মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে বুলেট ট্রেন চালু হওয়ার আগেই সেই স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়ার মুখে। কিছুদিন আগেই ঘটা করে জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে সঙ্গে নিয়ে প্রস্তাবিত বুলেট ট্রেন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অথচ এখন বলা হচ্ছে, পশ্চিম রেলওয়ে বুলেট ট্রেন চালালে বিপুল লোকসানের মুখে পড়বে। আরটিআই বা তথ্য জানার অধিকার আইনে প্রশ্ন করে এমন বিস্ফোরক জবাব সামনে এসেছে।
লোকসানের বোঝা রেলের ঘাড়ে
মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে স্বপ্নের বুলেট ট্রেনের প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই রুটেই যে ট্রেন চলছে তাতে ৪০ শতাংশের বেশি আসন খালি থাকছে। গত ত্রৈমাসিকে রেলের ৩০ কোটি টাকা ক্ষতি গুনতে হয়েছে। যার অর্থ, ওই রুটে ট্রেন চালিয়ে মাসে ১০ কোটি টাকা করে লোকসান গুনছে রেল।
আরটিআই জবাবে সামনে তথ্য
মুম্বইয়ের সমাজকর্মী অনিল গলগলি প্রস্তাবিত মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে বুলেট ট্রেন নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন তথ্য জানার অধিকার আইন মোতাবেক। সেখানেই পাল্টা উত্তরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
হোমওয়ার্ক নেই মোদী সরকারের
কেন্দ্র বুলেট ট্রেন প্রকল্পে ১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চলেছে। জাপানের মদতে এই বুলেট ট্রেন প্রকল্প তৈরি হবে। জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ভারত সফরে এসে এই প্রস্তাবিত বুলেট ট্রেন প্রকল্পের উদ্বোধনও করে গিয়েছেন। অথচ এত ব্যবহুল প্রকল্পের কোনও হোমওয়ার্কই সারেনি মোদী সরকার। এমনটাই জানিয়েছেন সমাজকর্মী গলগলি।
রেড জোনে এই রুট
পশ্চিম রেলওয়ে জানিয়েছে, মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে নতুন ট্রেন চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। এটি রেড জোনে রয়েছে। মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে ৪০ শতাংশ আসন খালি যায়। আর আহমেদাবাদ-মুম্বই রুটে সেটা পৌঁছয় ৪৪ শতাংশে।
মুম্বই-আহমেদাবাদ রুট
এবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে মুম্বই-আহমেদাবাদ রুটে মাত্র ৪৪১, ৭৯৫টি আসন বুক হয়েছে। এদিকে মোট আসন আসলে ৭৩৫, ৬৩০টি। এতে রেলের ঘরে এসেছে ৩০ কোটি ১৬ লক্ষ ২৪ হাজার ৬২৩ টাকা। অথচ আসার কথা ছিল ৪৪ কোটি ২৯ লক্ষ ৮ হাজার ২২০ টাকা। ফলে প্রায় ১৫ কোটি টাকা লোকসান ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে।
আহমেদাবাদ-মুম্বই রুট
এদিকে আহমেদাবাদ-মুম্বই রুটের অবস্থা আরও খারাপ। ৩১টি মেল অথবা এক্সপ্রেস ট্রেনে মোট আসন ৭ লক্ষের কিছু বেশি। সেখানে ফাঁকা রয়েছে ৩ লক্ষেরও বেশি আসন। আয় হওয়ার কথা ছিল ৪২ কোটি ৫৩ লক্ষের বেশি টাকা। অথচ আয় হয়েছে ২৬ কোটি ৭৪ লক্ষের সামান্য বেশি কিছু টাকা। অতএব লোকসান প্রায় ১৬ কোটি টাকা।
এই রুটে অন্য ট্রেন
মুম্বই আহমেদাবাদ রুটে দুরন্ত, শতাব্দী এক্সপ্রেস, লোকশক্তি এক্সপ্রেস, গুজরাত মেল, ভাবনগর এক্সপ্রেস, সৌরাষ্ট্র এক্সপ্রেস, বিবেক-ভূজ এক্সপ্রেস সহ একাধিক ট্রেন চলে। সেই রুটে বুলেট ট্রেন চললে লোকসান আরও বাড়ার আশঙ্কার কথাই প্রকাশ পেয়েছে আরটিআইয়ের জবাবে।