নেট নিউট্রালিটি-র সুপারিশ দেশে ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে, মত বিশেষজ্ঞদের
নেট নিউট্রালিটি-র সুপারিশ দেশে ইন্টারনেট ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে, মত বিশেষজ্ঞদের
নেট নিউট্রালিটি হল এমন এক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারে নিরপেক্ষতা আনার কথা বলা হয়েছে। গতবছর থেকেই নেট নিরপেক্ষতা নিয়ে বহু আলোচনা হচ্ছে। উন্মুক্ত ওয়েব ব্যবহারের স্বপক্ষে অনেকে সওয়ালও করেছেন। নেট নিউট্রালিটিতে বাধা দেওয়া মানে মানুষের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা, এমনটাও অনেকে বলেছেন। এই বিষয়ে ইন্টারনেট অ্যান্ড মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি শুভ রায় কী বলছেন আসুন জেনে নেওয়া যাক।
"এমন কি কখনও হয়েছে যে ইন্টারনেটে আপনি লগ ইন করেছেন নিজের পছন্দের খবরের চ্যানেল দেখতে আর অপারেটর বলছে, এটা উঠে গিয়েছে? কখনও উপহার কিনতে ই-কমার্স কোম্পানির একটিকে খুঁজতে গিয়ে চলে আসছে অন্য কোম্পানির নাম। কোনও পছন্দের অনলাইন চ্যানেলে সিনেমা দেখতে গিয়ে দেখলেন তাতে ভালো স্পিড পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য আর একটি বেশি স্পিড দিচ্ছে?
এই ধরনের ঘটনা একেবারেই কাম্য নয় বা হওয়া উচিত নয়। কারণ যে সংস্থা আপনাকে ইন্টারনেট সংযোগ দিচ্ছে তাদের ডেটা প্রবাহের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা অবলম্বন করা উচিত ও কোনওরকম বৈষম্যমূলক আচরণ করা উচিত নয়। কারণ আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করার টাকা দেন। সব ধরনের কনটেন্ট উপভোগ করার আপনার অধিকার রয়েছে।
তবে এমন অবস্থার প্রথম লঙ্ঘন হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে বড় ইন্টারনেট কোম্পানি ও টেলিকম কোম্পানিগুলি আর্থিক লাভের কথা ভাবতে গিয়ে অন্য পথ নেয়। প্রচার ও অর্থের কথা চিন্তা করে স্পিড বাড়িয়ে, প্রোমোট করে, লিমিটেড অ্যাকসেস বাড়িয়ে কমিয়ে দেওয়া শুরু হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন ঘটনার প্রভাব যে ভারতেও পড়েছে তা বলাই বাহুল্য। বলা ভালো এদেশেও চিত্রটা একই। যা নিয়ে নাগরিক সমাজ ও ছোট ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। এতে ইন্টারনেট ব্যবহারের মৌলিক অধিকার খর্ব হচ্ছে বলে অনেকে প্রতিবাদ করেছেন।
নাগরিক সমাজ মনে করছে, ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা যেমন খর্ব হচ্ছে, তেমনই গ্রাহক কী ব্যবহার করবে আর করবে না তাতে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। অন্যদিকে ছোট কোম্পানিগুলি মনে করছে, বড় কোম্পানিগুলি অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে নিরপেক্ষতা নষ্ট করতে চাইছে।
সম্প্রতি টেলিকম রেগুলেটরি অথোরিটি অব ইন্ডিয়া বেশ কিছু সুপারিশ নিয়ে এসেছে। তার মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট ব্যবহারে কোনওরকম বৈষম্য করা যাবে না। টেলিকম কোম্পানিগুলিকে স্বাধীনতা দিতে হবে। নেট নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে সকলকেই পদক্ষেপ করতে হবে। বিভিন্ন কোম্পানি নানা ফন্দিফিকির বের করার চেষ্টা করলেও ট্রাইয়ের আচরণে সকলেই খুশি। ধীরে ধীরে যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগ নিচ্ছে ট্রাই তা প্রশংসনীয়।"