বিহার নির্বাচনে বড় পরীক্ষার সামনে বিজেপি! কাঁটা বিছানো পথেই সিংহাসনের পথ খুঁজছে পদ্ম শিবির
করোনা আবহে দেশের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের মধ্যে অন্যতম হল বিহার। সেই বিহারেই নির্বাচনের নির্ঘণ্ট বেজেছে। বিহার নির্বচনী লড়াইয়ের হাতিয়ারে শান দেওয়া শুরু করে দিয়েছে দলগুলি। এরই মধ্যে বিজেপির কাছে এই রাজ্যের নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এরাজ্যে জোটে বিজেপি জুনিয়র পার্টনার হলেও এটা তাদের জন্যে বড় পরীক্ষা।
এলজেপি-র সঙ্গে নীতীশের দূরত্ব
বিহারের এনডিএ-র অন্যতম শরিক এলজেপি-র সঙ্গে নীতীশের দল জেডিউ-র দূরত্ব বাড়ছে। এই আবহে কংগ্রেস এলজেপিকে মহাজোটে আহ্বান জানিয়েছে। এদিকে জীতেন রাম মাঝি মহাজোট থেকে বেরিয়ে এনডিএ-তে যোগ দিয়েছে। সব মিলিয়ে বিহারের রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে দর কষাকষি
আসন ভাগাভাগির ক্ষেত্রে এসে যাতে এই জোট ভেঙে না যায় তার জন্যে আপ্রা চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। গত বছর ঝাড়খণ্ডে একলা চলো নীতির জেরে হারতে হয়েছিল বিজেপিকে। মহারাষ্ট্রেও মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে বিবাদের জেরে দীর্ঘদিনের বন্ধু শিবসেনার হাত ছাড়তে বাধ্য হয় বিজেপি। সেখানে ক্ষমতাও হাতছাড়া হয় তাদের। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই বিহারে এগোতে চাইছে গেরুয়া শিবির। যার জন্যেই দেবেন্দ্র ফড়নবিশের ঘাড়ে বিহার নির্বাচনের দায়িত্ব পড়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
নির্বাচনে বন্যার প্রভাব
এদিকে বর্ষার মরশুমে বিহারের ১৮টি জেলা বন্যা কবলিত। তাছাড়া করোনার আবহে সম্ভবত বিহারই প্রথম রাজ্যে হবে, যেখানে বিধানসভা নির্বাচন আয়োজিত হতে চলেছে। এবারের নির্বাচনে আরও একটি বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে পরিযায়ী শ্রমিক। করোনা আবহে গত কয়েকমাসে রাজ্যে ফিরেছেন ৩০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক।
পরিযায়ীদের নিয়ে বিতর্ক
প্রসঙ্গত, এর আগে পরিযায়ীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বিরোধীদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছিল নীতীশ কুমারকে। শুধু তাই নয় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যখন কোটা থেকে বিহারের আটকে পড়া ছাত্রদের রাজ্যে ফেরানোর জন্য সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছিলেন, তখন তা গ্রহণ না করে ছাত্রদের রাজ্যে ফেরাতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন নীতীশ।
মাথা ব্যথার কারণ : কর্মসংস্থান
চাকরি বা কর্মসংস্থান চিরকালই বিহারের জন্য একটি মাথা ব্যথার কারণ ছিল। এর জেরেই এত সংখ্যক পরিযায়ীরা অন্য রাজ্যে কাজের সন্ধানে চলে যেতেন। তাই স্বাভাবিকভাবে নির্বাচনের সময় কর্মসংস্থান একটি বড় ফ্যাক্টর হিসাবে দেখা দেয়। এবং এই নির্বাচনেও নীতীশ এবং বিজেপির বিরুদ্ধে বেকারত্বকে ইস্যু করে আক্রমণ শানাচ্ছেন বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, চলতি বছরে বিহারে বেকারত্বের হার ৪৬.৬ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে, যা নীতীশ কুমারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলার জন্য যথেষ্ট।
১৫ বছরে গঙ্গা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল
বিহারে ২০০৫ সালে নীতীশ কুমার যেবার প্রথমবার লালু প্রসাদকে হারিয়ে গদিতে বসেছিলেন, সেবার সবথেকে বড় নির্বাচনী ফ্যাক্টর ছিল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। এরপর ১৫ বছরে গঙ্গা দিয়ে গড়িয়েছে অনেক জল। এর মাঝেই এক সময়ের চির প্রতিদ্বন্দ্বী আরজেডির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন নীতীশ। পরে ফের মোদী বিরোধিতা ছেড়ে বিজেপির সঙ্গ নিতে বাধ্য হয়েছিলেন নীতীশ। তবে আইনশৃঙ্খলার ইস্যুটি এখন রয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি আগের থেকে ভালো কি খারাপ, তার বিচার না করে বিরোধীদের কাছে এটা একটি বড় হাতিয়ার।
বড়সড় রদবদল বিজেপিতে, নাড্ডা চমকে নয়া কেন্দ্রীয় দলে ঠাঁই কোন হেভিওয়েটদের?